বিসিএলে ব্যাট হাতে আলো ছড়ালেন যারা

কক্সবাজারে বোলার বিজয়ের বাজিমাত, একা লড়ছেন জাকের
Vinkmag ad

কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিসিবি দক্ষিণাঞ্চল ও বিসিবি মধ্যাঞ্চলের ম্যাচ দিয়ে পর্দা নেমেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের দশম আসরের। চারদিনের ম্যাচের ফাইনালে এক ইনিংস ও ৩৩ রানে মধ্যাঞ্চলকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে দক্ষিনাঞ্চল। দুই দলকে ফাইনালে তুলতে ব্যাটে-বলে আলো কেড়েছেন অনেক তারকা।

ওপেনার সাদমান ইসলামের কথাই ধরা যাক, ফাইনালের আগে তিনি করেছিলেন এক সেঞ্চুরি। আর ফাইনালে কিনা ছাড়িয়ে গেলেন নিজেকে প্রথম দিনে সেঞ্চুরির পর দ্বিতীয় দিনে সেটা রুপ দিলেন ডাবলে। মূলত সাদমানের ২৪৬ রানের ইনিংসেই লড়াকু পুঁজি পায় দক্ষিণাঞ্চল। ফাইনালে ২৪৬ রানের ইনিংস খেলার পথে সাদমান ১৫৪ ও ২১৪ রানের অসাধারণ দুই জুটি গড়েন। ডাবল সেঞ্চুরি করার পথে সাদমান ভাঙেন প্রায় দেড় যুগ আগের রকিবুল হাসানের গড়া রেকর্ড। ২৪৬ রানের ইনিংস খেলার পথে সাদমান উইকেটে কাটান প্রায় ৭৩৮ মিনিট, যেখানে ছাড়িয়ে যান রকিবুলের ৬৩৮ মিনিটের রেকর্ড। বিসিএলের তিন ইনিংসে ১২৫.৩৩ গড়ে সাদমান করেছেন ৩৭৬ রান। এই রান করতে সাদমান বাউন্ডারি হাঁকান ৪৬টি, আর ছক্কা মারেন ৪টি।

তবে সাদমানকে ছাপিয়ে রান সংগ্রাহকদের শীর্ষ স্থানটা নিজের দখলে রেখেছেন মধ্যাঞ্চলের উইকেটরক্ষক ব্যাটার জাকের আলি অনিক। প্রথম তিন ম্যাচে তিন সেঞ্চুরি করার পাশাপাশি ফাইনালেও করেছেন ফিফটি। অনিক বেশ কিছু দিন ধরে ব্যাট ও গ্লাভস হাতে আছেন দারুণ ছন্দে। জাতীয় দলের পাইপলাইনে আছেন বেশ কয়েক বছর হল, নিয়মিত খেলছেন বাংলাদেশ ‘এ’ দলে। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি গ্লাভস হাতেও দুর্দান্ত জাকের এবার নজর কেড়েছেন ভালভাবেই। তিন সেঞ্চুরি এবং এক ফিফটিতে প্রায় একশো ছুই ছুই গড়ে ৪৯২ রান করে মধ্যাঞ্চলের ব্যাটিংয়ের মূল ভরসাই ছিলেন জাকের। শীর্ষ ব্যাটার হতে জাকের চার মারেন ৪৬টি, তার ব্যাট থেকে ছক্কা আসে ১২টি। ছক্কার হিসাবেও সবার শীর্ষে জাকের। গ্লাভস হাতে উইকেটের পিছন সামাল দিতে বেশ দক্ষতারই পরিচয় দিয়েছেন জাকের, বাজপাখির মতো উড়ে গিয়ে ঝাপটে ধরেছেন দুর্দান্ত সব ক্যাচ। ১০ ডিসমিসালের সাথে এক ক্যাচ নিয়ে জিতেছেন সেরা ফিল্ডারের পুরষ্কার।

জাকের, সাদমানের পর তিনে আছেন ফজলে মাহমুদ রাব্বি। দক্ষিণাঞ্চলের অধিনায়ক চার ফিফটিতে ৫৫.৫০ গড়ে ছয় ইনিংসে রান করেছেন ৩৩৩ রান। দুইবার ফিরেছেন নব্বইয়ের ঘরে, সেঞ্চুরির খুব কাছে গিয়েও রাব্বি ফিরেছেন ৯৫ রানে। ফাইনালেও খেলেছেন ৬১ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস, যেখানে চতুর্থ উইকেটে সাদমানের সাথে গড়েছিলেন ১৫৪ রানের ম্যাচের মুড় ঘুরানো এক জুটি। ৩৩৩ রান করার পথে রাব্বি ৪০টি বাউন্ডারি হাঁকালেও, ছিল না কোনো ছক্কার মার।

পাঁচ ইনিংসে ৩৩২ রান করে চারে আছেন ইসলামি ব্যাংক পূর্বাঞ্চলের জহুরুল ইসলাম অমি। দুই সেঞ্চুরি এবং এক ফিফটিতে প্রায় ৬৭ গড়ে ৩৩২ রান করেন অমি। যেখানে এক ম্যাচে দক্ষিণাঞ্চলের বিপক্ষে ১৪৫ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলার পাশাপাশি দ্বিতীয় ইনিংসে ৬২ রান করেছিলেন অমি। বিসিএল জুড়ে ৩৩ বাউন্ডারি হাঁকানোর পাশাপাশি ছক্কা মারেন ৪টি।

বিসিএলে এবার শুরুটা ভাল হয়নি নাইম ইসলামের। বিসিবি উত্তরাঞ্চলের হয়ে খেলা নাইম, প্রথম চার ইনিংসে দুই অঙ্কের ঘরও পার করতে পারেননি। প্রথম চার ইনিংসে নাইমের রান ছিল মাত্র ১৪, যেখানে সর্বোচ্চ ছিল ৭। তবে নাইম নিজ কক্ষপথে ফিরেন তৃতীয় রাউন্ডের ম্যাচে, পূর্বাঞ্চলের বিপক্ষে। সেই ম্যাচে পূর্বাঞ্চলের বিপক্ষে নাইম করেন জোড়া সেঞ্চুরি; প্রথম ইনিংসে ১০৭ রান করার পাশাপাশি দ্বিতীয় ইনিংসে ছিলেন ১০৭ রানেই অপরাজিত। এই জোড়া শতকেই নাইম জায়গা করে নিয়েছেন বিসিএলের রান সংগ্রাহকদের তালিকায় সেরা পাঁচে। ৪৫.৬০ গড়ে রান করার পথে নাইম বাউন্ডারি হাঁকান ১৮টি।

৯৭ ডেস্ক

Read Previous

বিসিএল চারদিনের শিরোপা গেল দক্ষিণে

Read Next

নেদারল্যান্ডসের কোচিং স্টাফে ডোমিঙ্গো, কুন

Total
0
Share