

বিসিবি দক্ষিণাঞ্চলের হয়ে ওপেনার সাদমান ইসলাম একাই করেছিলেন ২৪৬ রান, জবাবে খেলতে নেমে বিসিবি মধ্যাঞ্চল এক সাদমানের রানই করতে পারেনি। ব্যাটারদের ব্যর্থতায় তারা গুটিয়ে যায় মাত্র ২৩০ রানে, দলের পক্ষে একমাত্র ফিফটি আসে জাকের আলি অনিকের ব্যাট থেকে। ফলে বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ (বিসিএল) ফাইনালে দক্ষিণাঞ্চলের বিপক্ষে ফলোঅনে পড়ে মধ্যাঞ্চল, দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমেও মাত্র ৫ রানেই হারিয়েছে ৩ উইকেট।
দ্বিতীয় ইনিংসেও দলের হাল ধরেছেন সেই জাকের আলি, তবে এবার তাকে ভালই সঙ্গ দিচ্ছেন মোহাম্মদ মিঠুন। চতুর্থ উইকেটে দুজনের অবিচ্ছিন্ন ৫৯ রানের জুটিতে মধ্যাঞ্চল তৃতীয় দিন শেষে ৩ উইকেটে করেছে ৬৪ রান। ইনিংস হার এড়াতে মিঠুনের দলের প্রয়োজন আরো ২০৬ রান৷ হাতে আছে ৭ উইকেট।
কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেট বেশ ব্যাটিং সহায়ক মনে হলেও, তৃতীয় দিনে আচমকাই বদলে গেল। সেখানে দায়টা অবশ্যই মধ্যাঞ্চলের ব্যাটারদের বেশি, দক্ষিণাঞ্চলের কোনো বোলারই একক আধিপত্য বিস্তার করতে পারেননি। তবে সবাই মিলেমিশে অবশ্য মধ্যাঞ্চলকে ফলোঅনে ফেলেছেন। পার্ট টাইমার এনামুল হক বিজয় ১.২ ওভারে নিয়েছেন ২ উইকেট। যেখানে একটি আবার সর্বোচ্চ ৫৩ রান জাকের আলি অনিকের উইকেট।
সোমবার বিনা উইকেটে ৩০ রান নিয়ে দিনের খেলা শুরু করে মধ্যাঞ্চল। তিনের প্রথম ওভারেই হারিয়ে বসে ওপেনার আব্দুল মজিদের উইকেট। দলীয় ৩৪ রানে মজিদকে (১৬) ফিরিয়ে দিনের প্রথম প্রহরেই ব্রেক থ্রু এনে দেন সুমন খান।
আরেক ওপেনার সৌম্য সরকারের ব্যাটে ছিল রানে ফেরার ইঙ্গিত, মোহাম্মদ মিঠুনকে নিয়ে ২৪ রানের একটা ছোটো খাটো জুটি গড়েছিলেন সৌম্য। তবে সেটাকে টেনে বেশি দূর নিতে পারেননি। দলীয় ৫৮ রানে মিঠুনের (৭) বিদায়ের পর উইকেটে সেট হয়েও সৌম্য ফিরেছেন ৩৩ রান করে। সৈয়দ খালেদ আহমেদের বলে সাদমানের হাতে ক্যাচ দিয়ে সৌম্য প্যাভিলিয়নের পথে হাটেন দলীয় ৭০ রানে।
সৌম্যের বিদায়ের পর ২২ রানের মাথায় আরো ৩ উইকেট হারায় মধ্যাঞ্চল। একে একে সাজঘরে ফিরেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত (৮), শুভাগত হোম (৯) এবং মো. শরীফুল্লাহ (২)। মোসাদ্দেক ফেরান মইন খান, বাকী দুজন ফিরেন নাজমুল ইসলাম অপুর বলে। ফলে ৯২ রানে ৬ উইকেট হারায় মধ্যাঞ্চল।
উইকেটের এক প্রান্ত থেকে সতীর্থদের আসা যাওয়া দেখছিলেন জাকের আলি। পরে অবশ্য সেটা পুষিয়ে দেন আরিফুল হকের সাথে ৬৪ রানের জুটিতে। সেই জুটিতে রান তোলার দায়িত্ব ছিল আরিফুলের কাঁধে, আর জাকের একপ্রান্ত আগলে রেখে সাহস জুগিয়েছিলেন আরিফুলকে। ৬০ বলে ৬ বাউন্ডারি এবং ১ ছক্কায় ৪০ রান করে আরিফুল থামেন নাজমুল ইসলাম অপুর বলে।
অষ্টম উইকেটে আবু হায়দার রনিকে নিয়ে আরেকটি পঞ্চাশ ছাড়ানো জুটি গড়ে জাকের মধ্যাঞ্চলের সংগ্রহ দুইশো পার করেন। যেখানে জাকের নিজে করেন ফিফটি, আর রনি থামেন ৪৮ বলে ৪ ছক্কা এবং ১ চারে ৩৯ রান করে। বিধ্বংসী রনিকে ফিরিয়ে মধ্যাঞ্চলকে আটকে ধরেন ফজলে মাহমুদ রাব্বি।
এরপর ফিফটি করা জাকের আলিকে ফেরান আরেক পার্ট টাইমার এনামুল হক বিজয়। ব্যক্তিগত ৫৩ রানে সরাসরি বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেন জাকের। ৫৩ রানের ইনিংসটি জাকের সাজান ২ চার এবং ৪ ছক্কায়। দলীয় ২২২ রানে জাকের ফিরলে মধ্যাঞ্চল থামে ২৩০ রানে। শেষ ব্যাটার মুশফিক হাসানকে (০) বোল্ড করে ইনিংসে দ্বিতীয় উইকেট শিকার করেন বিজয়।
দক্ষিণাঞ্চলের হয়ে ৬১ রানে ৩ উইকেট শিকার করেন নাজমুল ইসলাম অপু। ১.২ ওভারে ৭ রানের বিনিময়ে ২ উইকেট পেয়ে যান বিজয়। এছাড়া একটি করে উইকেট লাভ করেন সৈয়দ খালেদ আহমেদ, মইন খান, ও ফজলে মাহমুদ রাব্বি।
২৩০ রানে অলআউট হয়ে ফলো অনে পড়ে মধ্যাঞ্চল। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে আবারও ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে মধ্যাঞ্চল। মাত্র ৫ রানেই হারিয়ে বসে তিন উইকেট। একে একে সাজঘরে ফিরেন সৌম্য সরকার (১), আব্দুল মজিদ (২), শুভাগত হোম (০)। মইন খান ও খালেদ মিলে শুরুর ষষ্ঠ ওভারেই তুলে নেন এই তিন ব্যাটারকে।
এরপর মোহাম্মদ মিঠুন (৪০*) ও জাকের আলি অনিকের (১৯*) অবিচ্ছিন্ন ৫৯ রানের জুটিতে মধ্যাঞ্চল তৃতীয় দিন শেষ করেছে ৬৪ রানে। দক্ষিণাঞ্চলের মইন খান ৫ ওভারে ১৩ রানে শিকার করেন ২ উইকেট। খালেদ আহমেদ ৫ ওভারে ১৬ রানের বিনিময়ে পান ১ উইকেট।
তৃতীয় দিন শেষে মধ্যাঞ্চল পিছিয়ে আছে ইনিংস ও ২০৬ রানে।