

অবশেষে থামলেন সাদমান ইসলাম, তাও প্রায় দেড় যুগ আগের রেকর্ড ভেঙে। কক্সবাজারে বিসিবি মধ্যাঞ্চলের বিপক্ষে সাদমান পেয়েছেন ডাবল সেঞ্চুরি, খেলেছেন ৪৪৮ বল; যেখানে উইকেটে ছিলেন ৭৩৮ মিনিট। তাতে ছাড়িয়ে গেছেন প্রায় দেড়যুগ আগে রকিবুল হাসানের গড়া ৬৬০ মিনিট ব্যাটিং করার রেকর্ড।
২০০৬-০৭ মৌসুমে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে ট্রিপল সেঞ্চুরি করার কীর্তি গড়েন রকিবুল। সিলেট বিভাগের বিপক্ষে ৩১৩ রানের ইনিংস খেলার পথে রকিবুল ব্যাটিং করেছিলেন ৬৬০ মিনিট, ঘন্টার হিসাবে যা দাঁড়ায় ১১। কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ (বিসিএল) ফাইনালে মধ্যাঞ্চলের বিপক্ষে ২৪৬ রানের ইনিংস খেলার পথে রকিবুলকে ছাড়িয়ে গেছেন সাদমান। ৪৪৮ বলে ২৪৬ রানের ইনিংস খেলার পথে সাদমান উইকেটে কাটিয়েছেন ৭৩৮ মিনিট। ঘন্টার হিসাবে প্রায় সাড়ে বারো ঘন্টা ক্রিজে ব্যাটিং করেছেন সাদমান।
সাদমান কতটা ধৈর্য্যশীল ব্যাটার সেটা তার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের স্ট্রাইক রেটে চোখ ভোলালে উপলব্ধি করা যায়। পাকাপোক্ত একজন টেস্ট মেজাজি ব্যাটার বলে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে তাকে তেমন একটা দেখা যায় না। যেখানে প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন ৭১টি, সেখানে লিস্ট এ ক্রিকেটে তাঁর নামের পাশে ম্যাচ সংখ্যা ৬১টি। বাংলাদেশের হয়ে ইতিমধ্যে টেস্ট খেলেছেন ১৩টি, যেখানে এক সেঞ্চুরি সাথে নামের পাশে সুভা পাচ্ছে দুই ফিফটি।
তবে সাদমান কিছুটা আড়ালে ছিলেন এতোদিন, ব্যাটে রান ছিল না বলে বাদ পড়েছেন জাতীয় দল থেকে। তবে জাতীয় দলে ফেরার জোর দাবি জানিয়ে রেখেছেন বিসিএলে সেঞ্চুরির পর ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে। তিন ম্যাচে এক ডাবল এবং এক সেঞ্চুরিতে সাদমান ১২৫.৩৩ গড়ে রান করেছেন ৩৭৬।
রবিবার ২৪৬ রানের ইনিংস খেলার পথে সাদমান, চতুর্থ উইকেটে ফজলে মাহমুদ রাব্বির (৬১) সাথে গড়েছেন ১৫৪ রানের জুটি। এরপর পঞ্চম উইকেটেও গড়েন বড়সড় আরেক জুটি, সেটাও ছাড়িয়ে যায় দুইশো। মার্শাল আইয়ুবের সাথে ২১৮ রানের জুটি গড়ার পথে সাদমান পেয়ে যান প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির স্বাদ।
সাদমানের ডাবলের পর মার্শাল আইয়ুবও করেন সেঞ্চুরি। ১৯৭ বলে ৭ চারে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ২৪তম সেঞ্চুরি করেন মার্শাল। দলীয় ৪৬৯ রানে পার্ট বোলার মোহাম্মদ মিঠুনের বলে আউট হন সাদমান। প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে সাদমান ৪৪৮ বলে ২৯ বাউন্ডারি এবং ৩ ছক্কায় খেলেন ২৪৬ রানের অসাধারণ ইনিংসটি।
সাদমানের বিদায়ের পর দক্ষিণাঞ্চলের সংগ্রহ ৫০০ তে নিয়ে মার্শাল আইয়ুব ও মইন খান। দুজনের অবিচ্ছিন্ন ৩১ রানের জুটিতে প্রথম ইনিংসে দক্ষিণাঞ্চল ৫ উইকেটে কাটায় কাটায় ৫০০ রানেই ইনিংস ঘোষণা করে।
সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে মার্শাল আইয়ুব ছিলেন ১২০ রানে অপরাজিত। আরেক ব্যাটার মইনের ব্যাট থেকে আসে অপরাজিত ১৮ রান।
বিসিবি মধ্যাঞ্চলের হয়ে ৫১.৪ ওভারে ১৪৭ রানে ২ উইকেট শিকার করেন হাসান মুরাদ। এছাড়া একটি করে উইকেট শিকার করেন মোহাম্মদ মিঠুন, আবু হায়দার রনি ও মো. মুশফিক হাসান।
জবাবে খেলতে নেমে মধ্যাঞ্চল দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে ৩৩ রানে কোনো উইকেট না হারিয়ে। দুই ওপেনার আব্দুল মজিদ ও সৌম্য সরকার অপরাজিত আছেন যথাক্রমে ১৬ ও ১৫ রানে।
দক্ষিণাঞ্চলের সৈয়দ খালেদ আহমেদ (৬), মইন খান (২) এবং নাজমুল ইসলাম অপু (৩) মিলে ১১ ওভার বোলিং করেও কোনো উইকেট পাননি।