

বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম পেসারদের জন্য স্বর্গই বলা যায়। দেশের আর কোথাও এতোটা পেস সহায়ক উইকেট নাই, সেই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে আবু হায়দার রনি ও মুশফিক হাসান তাই দক্ষিনাঞ্চলের শেষ ৫ উইকেট তুলে নিয়েছেন মাত্র ৩১ রানের মাথায়। সেঞ্চুরিয়ান অমিত হাসানকেও (১১৬) ফিরিয়েছেন মুশফিক। তাতে অবশ্য কোনো ক্ষতি হয়নি দক্ষিনাঞ্চলের, অলআউট হওয়ার আগেই ৩০৭ রানের লিড পেয়ে যায় দক্ষিনাঞ্চল। ৩০৮ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নাসুম আহমেদের স্পিন বিষে বিসিবি মধ্যাঞ্চল গুটিয়ে যায় মাত্র ১৯৭ রানে। ১১০ রানের বড় জয়ে লিগের তৃতীয় পর্ব শেষ করে দক্ষিনাঞ্চল।
মঙ্গলবার বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে রান তাড়ায় নাসুমের স্পিন বিষে শুরুতেই দিশেহারা হয়ে যায় বিসিবি মধ্যাঞ্চল। মাত্র ২৭ রানেই শুরুর তিন ব্যাটারকে হারায় মধ্যাঞ্চল। সৌম্য সরকারকে (৬) ফিরিয়ে শুরু করেন সৈয়দ খালেদ আহমেদ। এরপর তিনে নামা মোহাম্মদ মিঠুনকে (১০) বোল্ড করেন নাসুম। এক ওভার পরে নাসুম আরেক ওপেনার আব্দুল মজিদকে (৮) ফেলেন এলবিডব্লিউর ফাঁদে।
খানিকটা বিরতি দিয়ে আবার আঘাত হানেন নাসুম, এবার তার শিকার চলতি বিসিএলে টানা তিন সেঞ্চুরি করা জাকের আলি অনিক। নাসুমের বলে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে অনিক ফিরেন ব্যক্তিগত ১৯ রানে। ফলে ৫৭ রানেই ৩ উইকেট হারায় মধ্যাঞ্চল।
এরপর নাসুমের সাথে যোগ আব্দুল হালিম ও খালেদ। হালিম ফেরান শুভগত হোমকে (২৫)। মাঝে সর্বোচ্চ ৫৯ রান করা আইc মোল্লাকে বোল্ড করেন নাসুম। আর এনামুল হক বিজয়ের থ্রোতে রান আউট হন মো. শরীফুল্লাহ (১২)। রান তাড়ায় দলীয় ১৪৭ রানেই ৭ উইকেট পড়ে যায় মধ্যাঞ্চলের।
এরপর আরিফুল হকের ব্যাটে ভালই ছিল মধ্যাঞ্চলের অবস্থান। সেখানেও বাধ সাধেন খালেদ আহমেদ, দলীয় ১৮১ রানে ফেরান আরিফুল (২৭)। খালেদের বলে আরিফুলের ক্যাচ নেন আব্দুল হালিম।
দলীয় ১৯৫ রানে আবু হায়দার রনিকে কট এন্ড বোল্ডে আউট করে ইনিংসে পাঁচ উইকেট পেয়ে যান নাসুম। পরের ওভারে রকিবুল হাসানকে ফিরিয়ে মধ্যাঞ্চলের ইনিংসের ইতি টানেন নাহিদুল ইসলাম।
২৬ ওভারে ৯৪ রানে ৫ উইকেট শিকার করে বিসিবি দক্ষিণাঞ্চলের ১১০ রানের বড় জয়ের নায়ক নাসুম আহমেদ।
এর আগে মুশফিক হাসান ও আবু হায়দার রনি মিলে দক্ষিণাঞ্চলকে গুটিয়ে দেন মাত্র ২৭৭ রানে। আগের দিনে ৫ উইকেটে ২৪৬ রানে দিন শুরু করা দক্ষিণাঞ্চলে দিনের শুরুতেই হোঁচট খায়। আগের দিনের সেঞ্চুরিয়ান অমিত হাসানও ফিরেন খুব দ্রুত। ব্যক্তিগত ১১২ রানে দিন শুরু করা অমিত ফিরেন মাত্র আরো ৪ রান যোগ করে। অমিতকে ফিরিয়ে দিনের শুরুটা করেন মুশফিক হাসান।
এরপর মাত্র ৩১ রানের ব্যবধানে শেষ চার ব্যাটারকে ফেরান রনি ও মুশফিক। রনি ৭১ রানে শিকার করেন ৪ উইকেট। মুশফিক হাসান ৫৪ রানে নেন ৫ উইকেট।
এর আগে প্রথম ইনিংসে সাদমান ইসলামের (১৩০) সেঞ্চুরিতে ৩১০ রান করে বিসিবি দক্ষিণাঞ্চল। সাদমান ছাড়া ফজলে মাহমুদ রাব্বি করেন ৫০ রান। এছাড়া ৪৪ রানে অপরাজিত ছিলেন নাসুম আহমেদ।
মধ্যাঞ্চলের হয়ে ৫ উইকেট নেন আবু হায়দার রনি। ২টি উইকেট পান সৌম্য সরকার। একটি করে উইকেট পান মুশফিক ও রকিবুল।
জবাবে মধ্যাঞ্চল জাকের আলি অনিকের (১৩৮*) অপরাজিত সেঞ্চুরিতে ২৮৩ রান করে। ৩টি করে উইকেট শিকার করেন নাসুম ও খালেদ।
প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতে অপরাজিত ৪৪ রান এবং বল হাতে ৩ উইকেট শিকার করার পাশাপাশি দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট শিকার করে ম্যাচ সেরা হয়েছেন নাসুম আহমেদ।