

খুলনা-চট্টগ্রাম ম্যাচে দেখা মিলল পাকিস্তানি ব্যাটারদের দাপট। সেঞ্চুরির জবাব এসেছে সেঞ্চুরিতে। এক পাক ব্যাটারের বিধ্বংসী ইনিংসের সামনে ম্লান হয়ে গেল আরেক পাক ব্যাটারের সেঞ্চুরি। মাত্র ৭ টি-টোয়েন্টি খেলা উসমান খানের দাপুটে ব্যাটিংয়ে ১৭৮ রান তাড়া করে ৯ উইকেটে জিতল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।
টি-টোয়েন্টিতে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি করে খুলনাকে বড় স্কোর গড়ে দেন আজম খান। জবাব দিতে নেমে উসমান খান চালান ধ্বংসাত্মক ব্যাটিং! পাত্তাই পায়নি খুলনার বোলাররা। নির্বিষ বোলিংয়ের সুযোগ নিয়ে শুরু থেকেই দারুণ ব্যাটিং করে যান উসমান। আর তাতেই ম্লান হয়ে গেল আজম খানের ১০৯* রানের ইনিংস। শেষপর্যন্ত উসমান ৫৮ বলে ১০৩ রানে অপরাজিত থাকেন।
৪ বল হাতে থাকতেই চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের ৯ উইকেটের বড় জয়।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের নবম আসরের ফাইনালে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে পাকিস্তানি ব্যাটার আজম খানের ব্যাট থেকে এলো দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি। যা রচনা করে গেলো একাধিক রেকর্ড।
হার-না-মানা ১০৯ রান করার পথে আজম খান ব্রেক করেছেন একাধিক রেকর্ড। ২০২৩ বিপিএলের প্রথম সেঞ্চুরি। বিপিএলে উইকেটকিপার ব্যাটার হিসাবে সর্বোচ্চ স্কোর। টি-টোয়েন্টিতে আজম খানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। বিপিএলে পাকিস্তানি ব্যাটারের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর।
তামিম ইকবালের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের বোলিং ইনিংস শুরু করেন অধিনায়ক শুভাগত হোম। সতর্ক তামিম, মেডেন ওভারে শুরু খুলনা টাইগার্সের ইনিংস। মেডেন দিয়ে শুরু করা শুভাগত নিজের পরের ওভারের শুরুর বলেই বিদায় করেন পাক মারকুটে ব্যাটার শারজিল খানকে। ডিপ মিড অনে দাঁড়িয়ে দুর্দান্ত এক ক্যাচ নেন মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। ঢাকার বিপক্ষে ৭ করা শারজিল আজ ৫ রানের বেশি পাননি।
হাবিবুর রহমান সোহান এবারই প্রথম সুযোগ পেলেন বিপিএলে। আজ হয়ে গেল অভিষেক। মুনিম শাহরিয়ারের পরিবর্তে একাদশে সুযোগ পান। কিন্তু শুরুটা সুখকর হয়নি এই তরুণ ব্যাটারের। আবু জায়েদ রাহির বলে পড়েন লেগ বিফোরের ফাঁদে। প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে ৬ বলে করেন ৬ রান।
এরপর তামিম ইকবাল লড়াই চালান তিনে নামা আজম খানকে নিয়ে। শুরু থেকেই বিধ্বংসী মেজাজে খেলতে থাকেন আজম। তবে ব্যক্তিগত ১৫ রানে সাজঘরে ফিরে যেতে পারতেন তামিম ইকবাল। মৃত্যুঞ্জয়ের করা ৯তম ওভারের তৃতীয় বলে লং অফে সহজ ক্যাচ ছাড়েন জিয়াউর রহমান।
নতুন জীবন পাওয়া তামিম ৩৩ রানে থাকাকালীন মেহেদী হাসান রানার করা ১৩ তম ওভারের পঞ্চম বলে ফের ক্যাচ তুলেন তামিম। এবার লং অনে ক্যাচ ছাড়েন চট্টগ্রামের অধিনায়ক শুভাগত। পরের ওভারের শুরুতেই ফিফটি পূর্ণ করেন আজম খান; ৩৩ বলে।
তামিম অবশ্য এরপর আর বেশিক্ষণ উইকেটে থাকতে পারেননি। ব্যাকফুটে খেলতে যেয়ে লেগি বিজয়াকান্থর বলে হয়েছেন বোল্ড। তামিমের ৪০ রানের ইনিংসটা সাজানো ৩৭ বলে, ৫ চার ও ১ ছয়ে। ১ রান করে ২য় বলে বোল্ড ইয়াসির আলি। এরপর সাব্বির রহমান এসে সঙ্গ দিতে চেষ্টা করেন আজম খানকে। কিন্তু ১ ছয়ে ১০ রান করতেই সাজঘরের পথ ধরেন সাব্বির।
ফিফটির পর যেন আরও ভয়ংকর হয়ে উঠেন। উইকেটের আরেক প্রান্তে দাঁড়িয়ে রীতিমতো তান্ডব চালিয়ে যান। শেষপর্যন্ত ৫৮ বলে ১০৯* রান আজম খানের ব্যাটে। বাকি ৬২ বল থেকে খুলনার ৬ ব্যাটার করেন ৬৪ রান।
৩৩ বলে প্রথম ৫০ পূর্ণ করেন আজম খান, ৪ চার ও ৩ ছয়ের সাহায্যে। এরপর ২৪ বলে ৫৩ করেন দ্বিতীয় ফিফটি; ফলে ৫৭ বলে ১০৩। ইনিংসের শেষ বলে আরও এক ৬ হাঁকিয়ে আজম খান পৌঁছে যান ১০৯* রানে। তার রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরিতে খুলনা পায় ৫ উইকেটে ১৭৮ রানের সংগ্রহ।
বড় লক্ষ্য তাড়ায় নেমে দুই ওপেনার ম্যাক্স ও’ডাউড ও উসমান খানের ব্যাটে চড়ে পাওয়ার-প্লের প্রথম ৬ ওভারে চট্টগ্রামের স্কোরবোর্ডে পঞ্চাশ। ১০ ওভারে ৭৯ রান করা চট্টগ্রামকে জিততে হলে বাকি ৬০ বলে করতে হত ১০০ রান।
১২.২ ওভারে দলীয় একশো রান পূর্ণ করে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। ৩৪ বলে বিপিএলে নিজের প্রথম ফিফটি পূর্ণ করেন করাচির উসমান খান। আরেক ওপেনার ম্যাক্স ও’ডাউডের পঞ্চাশ হয় ৪৬ বলে।
দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের পসরা সাজিয়ে খুলনার বোলারদের শাসন করতে থাকা ম্যাক্স-উসমান জুটি ভাঙে ১৫তম ওভারে। ততক্ষণে এই জুটি থেকে চট্টগ্রাম পেয়ে যায় ১৪১ রান। ৫৫ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন উসমান খান। জয়ের জন্য শেষ ৬ বলে দরকার ৬ রান।