

আনরিখ নরকিয়ার দাপটের পরও ইফতিখার, শাদাবের অনবদ্য ফিফটিতে পাকিস্তানের সংগ্রহ ১৮৫। লক্ষ্য তাড়ায় নেমে বৃষ্টিতে থামে ম্যাচ। ১৪ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার দরকার ১৪২। আফ্রিদি, নাসিম শাহদের তোপের মুখে পড়ে ১০৮ এর বেশি করতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। ৩৩ রানের জয়ে পয়েন্ট টেবিলের সমীকরণ কিছুটা উলটপালট করল পাকিস্তান।
আজ পাকিস্তানের জয়ের ফলে গ্রুপ-২ এর টেবিলে পাকিস্তান আর বাংলাদেশের পয়েন্ট হল সমান ৪। দক্ষিণ আফ্রিকার ৫, ভারতের ৬। তবে শেষ ম্যাচ বাংলাদেশ বা পাকিস্তান যেই জিতুক তাদের তাকিয়ে থাকতে হবে ভারত-জিম্বাবুয়ে, দক্ষিণ আফ্রিকা-নেদারল্যান্ডস ম্যাচে। ঐ দুই ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা আর ভারত জিতলে তারাই যাবে সেমিতে। আর এর বিপরীত কিছু ঘটলে হলে বাংলাদেশ/পাকিস্তান উঠে যাবে।
সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নামে পাকিস্তান। শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি; ইনিংসের ৪র্থ বলেই ওয়েন পারনেলের বলে স্টাম্প ভাঙে রিজওয়ানের (৪)। তিনে নামা মোহাম্মদ হারিসের ব্যাটে ঝড়! তবে আনরিখ নরকিয়ার বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ার আগে ১১ বলে ২৮ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন হারিস।
চরম ব্যর্থ বাবর আজম। ১৫ বলে কোনো বাউন্ডারি ছাড়া করেন কেবল ৬। নরকিয়ার দ্বিতীয় শিকার শান মাসুদ (২)। এরপর ইফতিখার আহমেদ ও মোহাম্মদ নওয়াজের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় পাকিস্তান। নওয়াজ ২২ বলে ২৮ করে ফিরে গেলেও উইকেটে সচল ইফতিখার। জুটি গড়েন শাদাব খানের সঙ্গে।
৯৫ রানে ৫ উইকেট হারানো পাকিস্তান ইফতিখার-শাদাব জুটিতে করে আরও ৮২ রান, কেবল ৩৬ বলে। ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালিয়ে মাত্র ২২ বলে শাদাব খান করেন ৫২ রান। ইফতিখারের ব্যাট থেকে ৩৫ বলে আসে ৫১। শেষপর্যন্ত পাকিস্তানের ইনিংসে থামে ৯ উইকেটে ১৮৫ রানে।
প্রোটিয়াদের হয়ে বল হাতে আনরিখ নরকিয়ার দাপট! একাই দখলে নেন ৪ উইকেট, ৪১ রান খরচায়। এছাড়া পারনেল, রাবাদা, লুঙ্গি ও শামসি পান ১টি করে উইকেট।
বড় লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ডাক হয়ে ফেরত যান কুইন্টন ডি কক। প্রথম ওভারেই কককে বিদায় করা শাহীন আফ্রিদি নিজের পরের ওভারে তুলে নেন রাইলি রুশোর উইকেটও। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি হাঁকানোর পর টানা দুই ম্যাচে ব্যর্থ রুশো।
তবে এদিন ব্যাট হাতে অনবদ্য ছিলেন অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। তাকে অপর পাশ থেকে সঙ্গ দেন এইডেন মার্করাম। তবে শাদাব খান অ্যাকশনে ফিরেই এক ওভারে তুলে নেন দুই সেট ব্যাটারকে। প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে ১৯ বলে ৩৬ করেন বাভুমা। ২০ রান আসে মার্করামের ব্যাট থেকে। এরপরই সিডনিতে নামে বেরসিক বৃষ্টি। তখন প্রোটিয়াদের স্কোর ৯ ওভারে ৬৯/৪।
বৃষ্টি শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে টার্গেট দাঁড়ায় ১৪ ওভারে ১৪২। অর্থাৎ ৩০ বলে প্রয়োজন ৭৩ রান। নেমেই শাদাব খানের ওভারে ক্লাসেন-স্টাবস মিলে তুলে নেন ১৪ রান। ভয়ংকর হয়ে ওঠা হেনরিখ ক্লাসেনকে (১৫) ফিরিয়ে আফ্রিদি দখলে নেন তিন নম্বর উইকেট। দ্রুতই বিদায় নেন পারনেল (৩)। নাসিম শাহ’র স্লোয়ার বাউন্সারে উইকেট হারান ১৮ রানে থাকা ট্রিস্টান স্টাবস।
শেষপর্যন্ত ৯ উইকেট হারিয়ে ১০৮ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। বৃষ্টি আইনে পাকিস্তান পেয়েছে ৩৩ রানের জয়। বাংলাদেশের সমান ৪ পয়েন্ট হলেও রান রেটে এগিয়ে থেকে টেবিলের তিনে জায়গা করে নিল বাবর আজমের দল।
ব্যাট হাতে ফিফটি হাঁকানোর পর বোলিংয়েও শাদাব খানের বাজিমাত! দুই উইকেট নিয়ে হয়েছেন ম্যাচ সেরা।