বৃষ্টির পর এলোমেলো ব্যাটিং, ভারতের বিপক্ষে ৫ রানের আক্ষেপ

বৃষ্টির পর এলোমেলো ব্যাটিং, ভারতের বিপক্ষে ৫ রানের আক্ষেপ
Vinkmag ad

১৮৫ রানের লক্ষ্য তাড়ায় লিটন দাসের অতি মানবীয় ব্যাটিংয়ে ৭ ওভারে বিনা উইকেটে ৬৬! এরপর বৃষ্টি ঝরলো অ্যাডিলেডে, ততক্ষণে জানা গেছে আর খেলা না শুরু হলে জিতবে বাংলাদেশই। কিন্তু ভারতের সর্বনাশ করে বাংলাদেশের পৌষ মাস এনে দিতে মন টানেনি প্রকৃতির। ঘন্টাখানেক পর খেলা শুরু হল, বাংলাদেশের জন্য নতুন লক্ষ্য ঠিক হল। অত:পর ছন্দপতন, লিটনও ছন্দ হারালো, টাইগাররা ৫ রানে হারলো।

অ্যাডিলেড ওভালে টস জিতে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ দলপতি সাকিব আল হাসানের। একাদশে পরিবর্তন একটি, বাঁহাতি ওপেনার সৌম্য সরকারের জায়গায় সুযোগ পান বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলাম।

আগে ব্যাট করে রাহুল-কোহলির জোড়া ফিফটিতে ভারতের স্কোরবোর্ডে ৬ উইকেটে ১৮৪ রান। রাহুল ৫০ এ থামলেও কোহলি অপরাজিত ছিলেন ৪৪ বলে ৬৪ রানে। বৃষ্টি বাধার পর ১৬ ওভারে ১৫১ রানের লক্ষ্য ঠিক হলেও বাংলাদেশ আটকে যায় ১৪৫ রানে। লিটনের ৬০ রানের সাথ দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সোহানের অপরাজিত ২৫।

লক্ষ্য তাড়ায় নেমে বাংলাদেশকে উড়ন্ত সূচনাই এনে দেন লিটন। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে অর্শদ্বীপ সিংকে হাঁকান ৩ চার। ভুবনেশ্বর কুমারকে পরের ওভারে পুল শটে দারুণ ১ ছক্কার সাথে ২ চার। যদিও ঐ ওভারে উইকেটের পেছনে দেওয়া তার কঠিন সুযোগ লুফে নিতে পারেনি দীনেশ কার্তিক। এরপর লিটন যেন আরও আগ্রাসী।

মোহাম্মদ শামির করা ৬ষ্ঠ ওভারের দ্বিতীয় বলে হাঁকানো ছক্কায় দলের সাথে তারও ফিফটি পূর্ণ হয়। যে পথে খেলেছেন মাত্র ২১ বল। চলতি বিশ্বকাপে এখনো পর্যন্ত এটি দ্বিতীয় দ্রুততম। এক বল পর এক্সট্রা কাভার দিয়ে হাঁকানো চারকে ‘ওয়ার্ল্ড ক্লাস’ বলছিল ধারাভাষ্যকার।

৬ ওভারের পাওয়ার প্লেতে বিনা উইকেটে বাংলাদেশের ৬১! ৭ ওভারে বিনা উইকেটে ৬৬, আর তখনই অ্যাডিলেডে বেরসিক বৃষ্টি। লিটন ২৬ বলে ৫৯ ও শান্ত ১৬ বলে ৭ রানে অপরাজিত ছিলেন।

বৃষ্টি শেষে বাংলাদেশের জন্য নতুন লক্ষ্য ঠিক হয় ১৬ ওভারে ১৫১। তবে মাঠে নেমে প্রথম ওভারেই রান আউটে হাঁটা পড়েন লিটন। ২৭ বলে ৭ চার ৩ ছক্কায় ৬০ রানে থামতে হয়।

এরপর শান্ত হাত খোলার চেষ্টা করলেও শামির শিকার হন ২৫ বলে ২১ রান করে। দলের চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হন আফিফ (৩), সাকিব (১৩)। অর্শদ্বীপের করা ১২তম ওভারে ফিরেছেন দুজনেই। ওভার থেকে রান আসে মাত্র ২! হার্দিক পান্ডিয়ার করা পরের ওভারেও জোড়া উইকেট।

ইয়াসির আলি (১) ও মোসাদ্দেক (৬) হয়েছেন ব্যর্থ। ৯ রানের ব্যবধানে ৪ উইকেট হারিয়ে কক্ষপথ থেকে ছিটকে যায় টাইগাররা। শেষ ৩ ওভারে সমীকরণ ৪৩ রান। ১৪তম ওভারে আসে ১২, শেষ ২ ওভারের লাগে ৩১।

সোহানকে দারুণ সঙ্গ দিয়ে তাসকিন দেখালেন ঝলক, ১৫তম ওভারে হাঁকালেন ১ চার ১ ছক্কা। শেষ ওভারে প্রয়োজনীয় ২০ রানের সমীকরণটা অবশ্য আর মেলানো যায়নি, ১ টি করে চার, ছক্কা হাঁকিয়েও সোহান নিতে পারে ১৪ রানের বেশি। ৫ রানে পরাজিত দলেই থাকতে হল তাকে। অপরাজিত ছিলেন ১৪ বলে ২৫ রানে, ৭ বলে ১২ তাসকিনের।

এর আগে ভারত ইনিংসের শুরু থেকেই দুর্দান্ত বোলিং তাসকিন আহমেদের। উইকেট থেকে পাওয়া বাউন্স, মুভমেন্টে ভালোই ভুগিয়েছেন ভারতীয় দুই ওপেনার লোকেশ রাহুল ও রোহিত শর্মাকে। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে তার বলে জীবন পান রোহিত ( তখন ১ রানে)। নিজের প্রথম ২ ওভারে তাসকিনের খরচ মাত্র ২ রান!

বোলিং করেছেন তিন স্লিপ নিয়ে, টি-টোয়েন্টিতে যা কিছুটা বিরল। এ নিয়ে টুইট করেছেন ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলেও।

ক্যাচ মিস করা হাসানই ইনিংসের চতুর্থ ওভারে আক্রমণে এসে রোহিতকে ফেরান (৮ বলে ২)। তার বিদায়ের পর লোকেশ হয়েছেন আক্রমণাত্মক।

তবে কোহলিকে সঙ্গী করে রাহুল একটা ঝড় বইয়ে দেন। আগের ৩ ম্যাচে দুই অঙ্ক ছুঁতে না পারা এই ডানহাতি আজ বাদ পড়ার শঙ্কায় ছিলেন। অথচ মাঠে নেমেই তুলে নিলেন ফিফটি।

শরিফুলের করা ৯ম ওভারে রাহুল হাঁকান ৩ ছক্কা ১ চার, কোহলির ১ চার। সাকিবের করা ইনিংসের ১০ম ওভারে ফিফটি পূর্ণ করে পরের বলেই আউট হন (৩২ বলে ৩ চার ৪ ছক্কায় ৫০)। ১২তম ওভারে ভারত পেরোয়া ১০০।

১৬ বলে ৩০ রান করা সুরিয়া কুমার যাদবকে আজ বেশি চড়াও হতে দেননি সাকিব। হার্দিক পান্ডিয়াকে (৫) থামান হাসান মাহমুদ। দীনেশ কার্তিক কাটা পড়েন রান আউটে (৭)।

তবে অন্য প্রান্তে কোহলি ছিলেন নিজের ছন্দে, ৩৭ বলে তুলে নেন ফিফটি। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৪৪ বলে ৮ চার ১ ছক্কায় ৬৪ রানে। ৬ বলে ১৩ রানে অপরাজিত রবিচন্দ্রন অশ্বিন। শেষ ৫ ওভারে ভারতের স্কোরবোর্ডে ৫৪ রান।

৪৭ রান খরচায় সর্বোচ্চ ৩ উইকেট হাসান মাহমুদের। ৪ ওভারে ১৫ রান খরচায় উইকেট শূন্য অসাধারণ বোলিং তাসকিনের।

৯৭ প্রতিবেদক

Read Previous

অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সফরে প্রোটিয়াদের কোচ মালিবোংওয়ে মাকেটা

Read Next

বৃষ্টি বিরতি শেষে আম্পায়ারের সঙ্গে যে কথা হয়েছিলো সাকিবের

Total
1
Share