

২৪তম জাতীয় ক্রিকেট লিগের (এনসিএল) চতুর্থ রাউন্ডে টায়ার-১ এ ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের ছড়াছড়ি। বগুড়ায় উইকেট উৎসবে মেতেছে পেসাররা, ঢাকার বিপক্ষে তরুণ মুশফিক হাসানের ৮ উইকেট নেওয়ার দিনে জয়ের সুবাস পাচ্ছে তার দল রংপুর।
অন্যদিকে সিলেটে আগেরদিন সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে অপরাজিত থাকা জাকির হাসান আজ তুলে নেন ডাবল সেঞ্চুরি। তার ব্যাটে চড়ে চট্টগ্রামে বিপক্ষে শক্ত অবস্থানে স্বাগতিক সিলেট।
সিলেট-চট্টগ্রাম (সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম)
৪ উইকেটে ৩৫১ রানে দিন শুরু করে সিলেট। ১৩২ রানে জাকির হাসান ও ৪৬ রানে অপরাজিত ছিলেন আসাদউল্লাহ আল গালিব।
আজ দুজনে আগেরদিনের ৭২ রানের জুটিতে শতরানে রূপ দেন। ফিফটি তুলে গালিব আউট হলে ভাঙে ১১৩ রানের জুটি। ১৭৩ বলে ৭ চারে ৬৭ রান আসে তার ব্যাটে।
গালিব ফিরলে জাকির সেঞ্চুরিকে রূপ দেন ডাবল সেঞ্চুরিতে। যদিও শেষদিকে কেবল তানজিম হাসান সাকিব (১৯ বলে ২১) কিছুটা সঙ্গ দিতে পেরেছেন তাকে। ২৯০ বলে ১৬ চার ২ ছক্কায় ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরির দেখা পান জাকির।
এই উইকেট রক্ষক ব্যাটার শেষ পর্যন্ত ৩১৮ বলে ১৮ চার ২ ছক্কায় ২১৩ রান করে আউট হন সৈকত আলির বলে। তার বিদায়েই ৯ উইকেটে ৪৮১ রানে ইনিংস ঘোষণা করে সিলেট। চট্টগ্রামের হয়ে সর্বোচ্চ পাঁচ উইকেট বাঁহাতি স্পিনার হাসান মুরাদের।
জবাবে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ১ উইকেটে ৯৮ রান তুলে দিন শেষ করে চট্টগ্রাম। দলীয় ৬ রানেই ওপেনার জসিম উদ্দিনকে (৭ বলে ০) ফেরান পেসার আবু জায়েদ রাহী। বোলিংয়ে সিলেটের এইটুকুই সাফল্য।
পিনাক ঘোষ ও পারভেজ হোসেন ইমন মিলে ৯২ রানের জুটিতে অবিচ্ছেদ্য থেকে দিন শেষ করেছেন। পিনাক ১৪১ বলে ৫ চারে ৪৯ ও ইমন ১২৯ বলে ৪ চারে ৪৫ রানে অপরাজিত আছেন। হাতে ৯ উইকেট নিয়ে চট্টগ্রাম এখনো পিছিয়ে ৩৮৩ রানে।
ঢাকা-রংপুর (শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম, বগুড়া)
দ্বিতীয় ইনিংসে বিনা উইকেটে ৮৮ রান তুলে প্রথম দিন শেষ করেছিল ঢাকা। ৫৪ রানে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ও ৩৩ রানে অপরাজিত ছিলেন আব্দুল মজিদ।
তবে পেসার মুশফিক হাসানের বলে আজ কোনো রান যোগ করার সুযোগই পায়নি মজিদ। ৮৮ রানেই প্রথম উইকেট হারায় ঢাকা। ৭৪ রানে থামতে হয় অঙ্কনকেও, ৮৭ বলে ১০ চার ১ ছক্কায় ইনিংসটি সাজান তিনি।
এই দুজনের বিদায়ের পর তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে ঢাকার দ্বিতীয় ইনিংসও। যেখানে বল হাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন সেই মুশফিকই। মাঝে রনি তালুকদার (২১), রাকিবুল হাসান (১৮) ও তাইবুর রহমানের (১৪) ও শেষ দিকে সালাউদ্দিন শাকিলের (১৫) ছোট ছোট ইনিংসগুলোতে ভর করে ১৯৯ রান পর্যন্ত যেতে পারে ঢাকা।
৭৩ রান খরচায় ৮ উইকেট পেসার মুশফিক হাসানের। যদিও এর আগে বাংলাদেশী পেসারদের ইনিংসে ৮ উইকেট নেওয়ার কীর্তি আছে। এখনো রেকর্ড হয়ে আছে সিলেট বিভাগের হয়ে ২০১৯ সালে বাঁহাতি পেসার রুয়েল মিয়ার নেওয়া ২৬ রানে ৮ উইকেট। রুয়েল সেবার ভেঙেছেন ২০১২ সালে তালহা জুবায়েরের নেওয়া ৩৫ রানে ৮ উইকেটের রেকর্ড।
এবারের জাতীয় লিগ দিয়েই প্রথম শ্রেণির অভিষেক হওয়া মুশফিক এই ঢাকার বিপক্ষেই প্রথম রাউন্ডেই নেন ৫ উইকেট।
মুশফিক আগুনে পুড়ে দারুণ কিছুর আভাস দিয়েও ঢাকা ২১০ রানের বেশি লিড পায়নি।
২১১ রানের লক্ষ্য ব্যাট করতে নেমে ৩ উইকেটে ১৩৫ রান তুলে দিন শেষ করে রংপুর বিভাগ। আগের ম্যাচে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকানো ওপেনার আব্দুল্লাহ আল মামুন আজ ফিরেছেন ৪ রানে।
আরেক ওপেনার মাইশুকুর রহমান রিয়েল অবশ্য আউট হন ৩১ রান করে। মাঝে তানবির হায়দার ফেরেন ২ রানে। ৬৮ রানে ৩ উইকেট হারানোর পরও সোহরাওয়ার্দী শুভ ও নাসির হোসেনের ব্যাটে জয়ের পথেই আছে রংপুর।
ইতোমধ্যে ফিফটি তুলে ১১৪ বলে ৮ চারে ৬৪ রানে শুভ ও ৫৮ বলে ২৬ রানে অপরাজিত আছেন নাসির। দুজনে অবিচ্ছেদ্য ৬৭ রানের জুটিতে। জয়ের জন্য ৭ উইকেট হাতে নিয়ে তাদের প্রয়োজন আরও ৭৬ রান।