

পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বিপক্ষে একটি চারদিনের, তিনটি একদিনের ও দুইটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে আজ (৩১ অক্টোবর) রাতে দেশ ছাড়বে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। এই দলটির বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারকে পড়তে হয়েছে দ্বিধায়। একদিকে ৬ নভেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া এইচএসসি পরীক্ষা, অন্যদিকে পাকিস্তান সফর। নির্বাচকরা অবশ্য আমলে নিয়েছে ক্রিকেটারদের ইচ্ছেকে। যে কারণে দলের অন্যতম তারকা ক্রিকেটার হয়েও সফরে ব্যাটার আরিফুল ইসলামের সেবা পাচ্ছে না দল।
আরিফুল গত যুব বিশ্বকাপে ব্যাট হাতে বাংলাদেসের সেরা পারফর্মার। দলীয় ব্যর্থতায় মোড়ানো টুর্নামেন্টে এই তরুণ হাঁকিয়েছেন দুই সেঞ্চুরি। সে পারফরম্যান্সের বিচারেই প্রথম বারের মতো মাঠে গড়ানো যুবাদের ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট পাকিস্তান জুনিয়র লিগে (পিজেএল) একমাত্র বাংলাদেশী হিসেবে সুযোগ পেয়েছেন।
যেখানে গুজরানওয়ালা জায়ান্টের হয়ে অবশ্য দুই ম্যাচে মাঠে নেমে ব্যর্থ হন। কিন্তু এমন একটা টুর্নামেন্ট থেকে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা নিশ্চিতভাবেই অর্জন হিসেবে থাকছে তার জন্য। তার জন্য পাকিস্তান সফরে খেলাটা হত দারুণ কিছু, অন্যদের চেয়ে থাকতেন এগিয়ে। এমনকি দলকেও বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সাহায্য করতে পারতেন।
তিন ফরম্যাটে পাকিস্তানে যুব দলে ডাক পাওয়া ক্রিকেটারদের যে কাছ থেকে দেখেছেন আরিফুল। আলি আসফান্দ, মোহাম্মদ ইবতিসাম, উজাইর মুমতাজদের সাথেতো একই দলে খেলেছেন। তবে সব ছাপিয়ে এইচএসসি পরীক্ষাকেই প্রাধান্য দিয়েছেন এই ব্যাটার। ইতোমধ্যে ফিরেছেন দেশে। যদিও বাকিদের বেশিরভাগই পরীক্ষার চেয়ে সফরকে গুরুত্ব দিয়েছেন।
তবে আরিফুলের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে খানিক ধারণা অবশ্য নিয়েছেন নির্বাচক হান্নান সরকার। আজ (৩১ অক্টোবর) মিরপুরে আনুষ্ঠানিক ফটোসেশন শেষে সাংবাদিকদের এ নিয়ে জানান জাতীয় দলের সাবেক এই ক্রিকেটার।
হান্নান বলেন, ‘আরিফুলের সাথে আমার কথা হয়েছে। ও চলে এসেছে, টুর্নামেন্ট শেষ করেই চলে এসেছে। আরিফুল আমাদের শেষ বিশ্বকাপের খেলোয়াড়। এই স্কোয়াডে সে যেতে পারছে না তার এইচএসসি পরীক্ষার জন্য। যেহেতু পাকিস্তানে খেলার অভিজ্ঞতা আছে তার, পাশাপাশি গত বিশ্বকাপেও পারফর্ম করেছে…কিন্তু যেহেতু সে এইচএসসি পরীক্ষার জন্য ছুটি চেয়েছে আমরা তাকে ছুটি দিয়েছি। আরিফুলের সাথে আমার ব্যক্তিগতভাবে কথা হয়েছে, তাদের খেলোয়াড় সম্পর্কে কথা হয়েছে, দল নিয়ে কথা হয়েছে। তার জায়গা থেকে যতটুকু সম্ভব আমার সাথে শেয়ার করেছে।’
এদিকে ২০২০ সালের যুব বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ ২০২২ সালে সেমিফাইনালও খেলতে পারেনি। হান্নান বলছেন এবার নতুন করে শিরোপা ঘরে তুলতে বদ্ধ পরিকর তারা। সে ক্ষেত্রে ২০২০ সালের দলটাকে নিয়ে যেভাবে পরিকল্পনা সাজিয়েছেন সেভাবেই এগোতে চান। ২০২৪ বিশ্বকাপের আগে অন্তত ২৫ টি ওয়ানডে খেলার ভাবনা তাদের।
তার ভাষায়, ‘আমরা যদি পুরোনো স্মৃতিতে ফিরে যাই, ২০২০ সালে আমাদের যে অনূর্ধ্ব-১৯ দলটা চ্যাম্পিয়ন…সেখানে বিশ্বকাপের আগ পর্যন্ত আমরা ৩০ টা ওয়ানডে খেলেছি দেড় বছরে। চার দিনের ম্যাচ ছিল ৭-৮ টা, সব মিলিয়ে ৩৫ টার মতো ম্যাচ খেলেছি। কিন্তু এই ব্যাচের যেহেতু সে ধরণের যথেষ্ট ম্যাচ খেলার সুযোগ নেই, এরপরেও ২৫ টার মতো ওয়ানডে খেলার সুযোগ রয়েছে।’
‘সুতরাং আমরা আশা করছি এই দলটাও অনেকটা একই রকম প্রস্তুতি নিতে পারবে। বিশ্বকাপের আগে ২০-২৫ টা ওয়ানডে কিন্তু প্রস্তুতির জন্য যথেষ্ট। তো যাত্রাটা শুরু হচ্ছে, এরপর বিশ্বকাপের আগ পর্যন্ত ২৫ টা ম্যাচ খেলাতে পারলে ভালো কিছুর জন্য প্রস্তুত করা সম্ভব।’
‘২০২০ এ আমাদের যে দলটা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তাদের নিয়ে আমরা ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডে খেলতে গিয়েছিলাম। সেখানে যাওয়ার আগে আমাকে এরকম (দল নিয়ে প্রত্যাশা) প্রশ্ন করা হয়েছে। আমি তখন উত্তর দিয়েছিলাম ইংল্যান্ড সফর শেষে আমি বলতে পারবো। ঠিক একইভাবে এবারও বলতে চাচ্ছি এই সফরটা শেষ হলে আমি মন্তব্যে যেতে পারবো।’