

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নাটকীয় জয়ে গুরুত্বপূর্ণ শেষ ওভারটি করেছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। পুরো ওভারটিতেই রোমাঞ্চের ছড়াছড়ি। ম্যাচ শেষে এই টাইগার অলরাউন্ডার জানালেন নিজের অনুভূতি, পরিকল্পনার কথা।
খাদের কিনারা থেকে টেনে তুলে দলকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যান জিম্বাবুয়ে ব্যাটার শন উইলিয়ামস। ৩৫ রানে ৪ ও ৬৯ রানে ৫ উইকেট হারানো দলকে ১৫১ রানের লক্ষ্যের দিকে টানছিলেন। সঙ্গী রায়ান বার্ল।
শেষ দুই ওভারে প্রয়োজন ২৬। সাকিবের করা ১৯তম ওভারের প্রথম তিন বলে আসে ৭ রান। চতুর্থ বলে সিঙ্গেল নিতে চেয়েও ব্যর্থ হলেন উইলিয়ামস (৪২ বলে ৬৪), নিজেই ফিল্ডিং করে সরাসরি থ্রোতে স্টাম্প ভাঙলেন সাকিব। তার এমন দুর্দান্ত থ্রোতে ম্যাচের মোড়ই বদলে গেল।
ওভারে শেষ দুই বলে আসে ৩ রান। শেষ ওভারের সমীকরণ ১৬, হাতে ৪ উইকেট।
তাসকিন, হাসান মাহমুদ, মুস্তাফিজদের ৪ ওভারের কোটা শেষ তাই মোসাদ্দেকেই আস্থা রাখতে হল অধিনায়ক সাকিবকে।
আর তাতেই নাটকীয়তার শুরু। প্রথম বলে লেগ বাইতে সিঙ্গেল নিলেন বার্ল। দ্বিতীয় বলে আউট ব্র্যাড ইভানস। তৃতীয় বলে স্ট্রাইকে রিচার্ড এনগারাভা, লেগ বাইতে এলো চার।
শেষ ৩ বলে দরকার ১১। চতুর্থ বলে এনগারাভা হাঁকিয়ে বসলেন ছক্কা, সমীকরণ ২ বলে ৫। পঞ্চম বলেই স্টাম্পড এনগারাভা, শেষ বলে লাগে ৫। মোসাদ্দেকের করা এই বলে স্টাম্পড মুজারাবানি, ৪ রানে জয়ী বাংলাদেশ।
কিন্তু না, জয়োৎসব করে ফেললেও টিভি রিপ্লে দেখে আম্পায়ার দিলেন নো বল। কারণ স্টাম্পের সামনে থেকেই বল ধরেন উইকেট রক্ষক নুরুল হাসান সোহান। ফলে আবার সমীকরণ ১ বলে ৪। না এবার আর কোনো ভুল নয়, আবারও পরাস্ত মুজারাবানি, হয়েছেন স্টাম্পড। ৩ রানের জয় টাইগাদের।
ম্যাচ শেষে অনুভূতি জানাতে গিয়ে মোসাদ্দেক বলেন, ‘এটা অবশ্যই অন্যরকম একটা অভিজ্ঞতা সবার জন্যই। তো আসলে যখন আমরা আসলাম (জয় ধরে নিয়ে মাঠের বাইরে আসা) আবার ভেতরে গেলাম, সবাই নার্ভটা কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছিল। ঠিক আছে যাই হবে। আমাদের যে প্ল্যান ছিল ঐ প্ল্যান অনুযায়ী বোলিং করি, এরপরে যদি ওরা মেরে নিতে পারে সেট ঠিক আছে। এটা নিয়ে আমরা কোনো চিন্তা করিনা।’
জেদ কিংনা উত্তেজনা নয় ডট দেওয়া, ম্যাচ জেতানোর লক্ষ্যেই প্রতিটি বল করেছেন বলছেন মোসাদ্দেক, ‘একটা বলও জেদ দিয়ে করি নাই, প্রত্যেকটা বল ডট বল করার জন্য। জেতার জন্য সবার মধ্যে একটা ক্ষুধা ছিল। অবশ্যই সবাই জিততে চাইছে। সেই চেষ্টা এবং শারীরিক অঙ্গভঙ্গি সবাই মাঠে শো করছে। আমি মনে করি যে অবশ্যই পুরা দলের কম্বিনেশন বলেন পুরা টিমের চেষ্টা ছিল আমাদের জেতার পিছনে। সো ফাইনালি জিতছি।’
ওভারটি করার আগে এবং ওভার করার সময় একটু পরপরই অধিনায়ক সাকিবের সাথে কথা বলতে দেখা যায় মোসাদ্দেককে। দুজনের মধ্যে কি আলাপ হয়েছিল?
এমন প্রশ্নে তার জবাব, ‘আমি সাকিব ভাইয়ের সাথে কথা বলছিলাম। ওনার সাথে আমার যে কথা হয়েছে এরপরে আমি কন্ট্রোলে ছিলাম। সাকিব ভাইয়ের কথা হয়েছিল দুই রকম। ইয়র্কার করবো নাকি লেন্থ বল করবো?’
‘মাঠটা ছোট ছিল সামনের দিকে ইয়র্কার মিস হলে লেন্থ মিসে ৬ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এজন্য আমরা পরিকল্পনা করছিলাম যে একটু ব্যাক অব লেন্থে, একটু জোরের উপর করব, যেন মিস টাইমিং হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।’