

অস্ট্রেলিয়ায় চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে কেউ কেউ মজা করে বলছেন বৃষ্টি কাপ। কারণ প্রায় প্রতি ম্যাচেই বৃষ্টি বাধায় পড়তে হচ্ছে, পরিত্যক্তও হয়েছে রেকর্ড সংখ্যক ম্যাচ। এর আগের ৬ আসরে ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে মোটে পাঁচটি। অথচ এবার টুর্নামেন্টের অর্ধেক যেতেই ইতোমধ্যে পরিত্যক্ত চার ম্যাচ।
পরিত্যক্ত চার ম্যাচ ছাড়াও বৃষ্টি আইনে ফল এসেছে একটি ম্যাচে। এর বাইরে বেশ কয়েকটি ম্যাচে খুব বেশি প্রভাব বিস্তার না করলেও ঠিকই হানা দিয়েছিল বৃষ্টি।
এবার মোট ম্যাচ ৪৫ টি, সূচি অনুযায়ী শেষ হল ২৬ টি। বৃষ্টি প্রথম দফায় হতাশ করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। হোবার্টের বেলেরিভ ওভালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৯ ওভারে নেমে আসে ম্যাচ।
আগে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ৭৯ জিম্বাবুয়ের। জবাবে কুইন্টন ডি কক ঝড়ে ৩ ওভারে বিনা উইকেটে ৫১ দক্ষিণ আফ্রিকার। কক অপরাজিত ছিলেন ১৮ বলে ৪৭ রানে।
কিন্তু বৃষ্টি নামার পর নির্ধারিত সময় পার করেও খেলা শুরু করা যায়নি। ফলে পরিত্যক্ত হয় ম্যাচ, ফল আসেনি কারণ দুই দলের অন্তত ৫ ওভার করে ব্যাটিং করতে হত। যে কারণে অনেক অনেক এগিয়ে থেকেও পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হল প্রোটিয়াদের।
এরপর মেলবোর্নে গত ২৬ অক্টোবর বৃষ্টি আইনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৫ রানে জয় পায় আয়ারল্যান্ড। ইংলিশদের ১৫৮ লক্ষ্য দেয় আইরিশরা। কিন্তু ইংল্যান্ড ১৪.৩ ওভারে ৫ উইকেটে ১০৫ রান তুললেই নামে বৃষ্টি, নির্ধারিত সময়ের আগে থামেনি।
ডি/এল মেথডে এই সময়ে ১১০ রান প্রয়োজন ছিল তাদের। ৫ রান কম থাকায় পরাজিত দলে থাকতে হয়েছে তাদের।
একই ভেন্যুতে পরের ম্যাচ টস হওয়া ছাড়াই পরিত্যাক্ত হয়। পয়েন্ট ভাগাভাগি করে আফগানিস্তান ও নিউজিল্যান্ড।
এরপর গতকাল (২৮ অক্টোবর) মেলবোর্নে দুইটি ম্যাচই পরিত্যক্ত হয়। টস হয়নি কোনো ম্যাচেই। প্রথমটিতে আফগানিস্তান-আয়ারল্যান্ড ও দ্বিতীয়টিতে হাই ভোল্টেজ অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এক আসরে সর্বোচ্চ পরিত্যক্ত (৪) ম্যাচের রেকর্ড এবারের। সংখ্যাটা আরও বাড়ার সম্ভাবনা আছে প্রবল। ম্যাচ বাকি আরও ১৯ টি।
নিচে বিগত আসরগুলোর পরিসংখ্যান তুলে ধরা হল:
২০০৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরে বৃষ্টিতে ভাসে মাত্র এক ম্যাচ। টস হওয়া ছাড়াই ডারবানে পরিত্যাক্ত হয় ভারত-স্কটল্যান্ড ম্যাচ।
২০০৯ ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে বৃষ্টির মুখে পড়ে একটি ম্যাচ। যার প্রথমটি লন্ডনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ-ইংল্যান্ড ম্যাচে। ডার্ক ওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে ৫ উইকেটে জিতেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
২০১০ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে চার ম্যাচে বৃষ্টির প্রভাব পড়ে। যেখানে একটি ম্যাচ হয়েছে পরিত্যক্ত। গায়ানায় ইংল্যান্ড-আয়ারল্যান্ড ম্যাচ ছিল সেটি। বাকি তিন ম্যাচে অবশ্য বৃষ্টি আইনে ফল এসেছিল।
২০১২ সালে শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত আসরে বৃষ্টি বাগড়ায় পড়ে দুইটি ম্যাচ। যার একটিতে ফল আসলেও বাকিটি হয়েছে পরিত্যক্ত। দুই ম্যাচেই ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ভেন্যুও একই, কলম্বো। প্রথমটিতে তাদের বিপক্ষে বৃষ্টি আইনে ১৭ রানে জেতে অস্ট্রেলিয়া। তবে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটি হয়েছে পরিত্যক্ত।
২০১৪ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে তিনটি ম্যাচের ফল নির্ধারিত হয় বৃষ্টি আইনে। তবে ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়নি একটিও। প্রথম পর্বে সিলেটে আয়ারল্যান্ড – সংযুক্ত আরব আমিরাত ম্যাচ, সুপার টেনে চট্টগ্রামে ইংল্যান্ড- নিউজিল্যান্ড ম্যাচের প্রথম সেমি-ফাইনালে ঢাকায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ – শ্রীলঙ্কাল ম্যাচের ফল আসে ডি/এল মেথডে।
২০১৬ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ৬ষ্ঠ আসরে প্রথম পর্বেই পরিত্যক্ত হয় ওমান-নেদারল্যান্ডস ম্যাচ। একই ভেন্যু ধরমশালাতে পরিত্যক্ত হয় বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড ম্যাচও। ওমানের বিপক্ষে বাংলাদেশের আরেক ম্যাচেও বৃষ্টির হানা তবে শেষ পর্যন্ত আসে ফল। ডি/এল মেথডে টাইগারদের জয় ৫৪ রানে। টুর্নামেন্টের বাকি অংশে অবশ্য প্রভাব ফেলেনি বৃষ্টি।