

বাংলাদেশ জাতীয় দলে বর্তমানে যে প্রতিযোগিতা তাতে একবার বাদ পড়লে ফিরে আসা কঠিন। বিশেষ করে পেসারদের জন্য তো আরও চ্যালেঞ্জিং। তবে চোটের সাথে দীর্ঘ লড়াই শেষে মাঠে ফিরেই দলের অংশ হয়ে গেছেন হাসান মাহমুদ। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপে অভিষেক হয়ে গেল এই পেসারের, বল হাতে রেখেছেন অবদানও। ম্যাচ শেষে জানালেন নিজের ভালো লাগার কথা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কম সময় দেওয়ার কথা।
গতির ঝলক দেখিয়ে জাতীয় দলে আবির্ভাব। ২০২০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ও ২০২১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অভিষেক ওয়ানডেতে। তবে ২০২১ সালের মার্চে নিউজিল্যান্ড সফর থেকে তাকে ফিরতে হয় অদ্ভুত এক চোট নিয়ে। পিঠের এই চোটের কোনো কূল কিনারা করতে পারছিল না বিসিবির মেডিকেল বিভাগও। অবশেষে কঠিন এক সংগ্রাম পেরিয়ে, ইংল্যান্ডে চিকিৎসা নিয়ে চলতি বছর মাঠের ক্রিকেটে ফেরেন হাসান।
এক বছর পর প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলতে নেমে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে (ডিপিএল) মোহামেডানের হয়ে ছন্দ খুঁজে পান। জাতীয় দলে ফিরতেও সময় লাগেনি খুব বেশি। আগস্টে জিম্বাবুয়ে সফরেই ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি দুই ফরম্যাটেই একাদশে জায়গা হয়। দুইটি করে ম্যাচ খেলে নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে নেন তিনটি করে উইকেট।
এশিয়া কাপের স্কোয়াডে ছিলেন স্বাভাবিকভাবেই, কিন্তু অনুশীলনে চোট পেয়ে আবার কয়েক সপ্তাহের জন্য বাইরে চলে যান। এ দফায়ও ফিরে এসে সরাসরি বিশ্বকাপ স্কোয়াডে নাম লেখান। জিম্বাবুয়ে সফরের পারফরম্যান্সের কারণে সুযোগ পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী ছিলেন নিজেও।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে দুই ম্যাচ সিরিজে খেলা হয়নি, তবে নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে বল হাতে নিয়ে নিজের জাত চিনিয়েছন আরক দফা। ৩ ম্যাচে নেন ৪ উইকেট। আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে শিকার ২৪ রানে ২ উইকেট। আজ (২৪ অক্টোবর) বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভের ম্যাচে দলের জয়ে রাখলেন দারুণ ভূমিকা।
১৪৪ রানের পুঁজি নিয়েও নেদারল্যান্ডসকে বাংলাদেশ আটকে দেয় ১৩৫ রানে। যেখানে ২৫ রানে ৪ উইকেট নেওয়া তাসকিন আহমেদের সাথে ১৫ রানে ২ উইকেট নেওয়া হাসানের অবদানও কম না।
View this post on Instagram
ম্যাচ শেষে হোবার্টের বেলেরিভ ওভাল স্টেডিয়ামে সংবাদ মাধ্যমকে জানালেন নিজের আবেগ অনুভূতির কথা। বাংলাদেশ দল জয় পেলো মাঝের বেশ খারাপ সময় পেছনে ফেলে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে মূল ধারার সংবাদ মাধ্যমে এ নিয়ে সমালোচনা কম হয়নি। হাসান অবশ্য বলছেন এসবে নজর দেওয়ার সময় পান খুব কমই।
তার ভাষায়, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে আমরা আসলে ভালোটা নেওয়ার চেষ্টা করি। খারাপ জিনিসটা এড়িয়ে যাই। আর সবাই ইতিবাচক বলছে, এখনো পর্যন্ত ভালোভাবে যাচ্ছে। আমি এমনিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমি খুব একটা অ্যাক্টিভ থাকি না।’
তাসকিনের সাথে এ দিন জুটি বেঁধে ভালো বোলিং উপহার দেন হাসান। প্রথম ওভারের প্রথম দুই বলেই উইকেট নেন তাসকিন। ম্যাচের গতি সেখানেই নিজেদের দিকে টেনে নেয় বাংলাদেশ।
এ নিয়ে হাসান যোগ করেন, ‘প্রথম ওভার থেকে ম্যাচের প্রবাহটা তাসকিন ভাই ধরছিল। আমিও কিছু অবদান রেখেছি, এজন্য ভালো লাগছে। অবশ্যই আমার প্রথম বিশ্বকাপ, তারপর উইকেট। একটু রোমাঞ্চ তো ছিলই।’
‘আমার খুবই ভালো লাগছে যে তাসকিন ভাই’র সঙ্গে বোলিং করে। আশা করি সামনে আমরা এটা ধরে রাখতে পারব। ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে অনেক কিছু দেওয়ার আছে, ইন শা আল্লাহ।’