

বিশ্বের ক্রীড়া প্রধান অনেক দেশেই ইতোমধ্যে স্পোর্টস সায়েন্স (ক্রীড়া বিজ্ঞান) বেশ জনপ্রিয় ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। এবার বাংলাদেশেও সেটির পরিচয় করালো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। কোচদের জন্য ৩ দিনের বায়োমেকানিকস ওয়ার্কশপে দীক্ষা দিতে উড়িয়ে আনা হয়েছে ভারতের জাতীয় ক্রিকেট একাডেমির ফিটনেস ট্রেনার রতনেশ সিংকে।
বিসিবির গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগের আয়োজনে আজ (১৬ সেপ্টেম্বর) থেকে শুরু হয়েছে কোর্সটি। স্থানীয় কোচরা অংশ নিয়েছেন এই ব্যতিক্রমী আয়োজনে।
প্রথম দিনের কার্যক্রম শেষে আজ দুপুরে মিরপুরে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগের সহ সভাপতি ফাহিম সিনহা ও অতিথি রতনেশ সিং।
কোর্সের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানিয়ে ফাহিম বলেন, ‘আসলে আমাদের কোর্সটা হচ্ছে বায়োমেকানিকস, স্পোর্টস সায়েন্স ও হাই পারফরম্যান্স কোচদের জন্য…ক্রিকেটের সাথে সায়েন্সের কীভাবে আমরা যোগসামঞ্জস্য করতে পারি। বড় বড় ক্রিকেট খেলুড়ে দেশগুলোতে…ক্রিকেট বাদেও আপনার ক্রীড়ায় উন্নত সব দেশগুলো যারা আছে সেসব জায়গায় স্পোর্টস সায়েন্স খুবই কার্যকর।’
‘আমাদের এখানে অন্যান্য স্পোর্টসে আমরা এটা ব্যবহার করি নাই। আমাদের কোচরা বায়োমেকানিকসের উপর কিছু বেসিক জ্ঞান পেয়ে থাকে লেভেলে-১, লেভেল-২ তে। আমরা চাচ্ছিলাম গভীরভাবে একটা কোর্স করানোর জন্য। উনি হচ্ছে বিসিসিআইয়ের ট্রেনার, দিক নির্দেশক। ভারতের জাতীয় ক্রিকেট একাডেমিতে কাজ করেন। একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক হিসেবেও আছেন।’
‘সায়েন্সের সাথে ক্রিকেট কীভাবে সংযুক্ত এখনকার সময়ে এটাই পরিচয় করিয়ে দিতে আমরা উনাকে প্রথমবার নিয়ে এসেছি। আমার মনে হয় বিশ্বজুড়ে এটার ব্যবহারকারী এখন অনেক বেশি। আমরাও এটাতে অভ্যস্ত হওয়ার ইচ্ছে রাখি। ইন শা আল্লাহ এতা আমাদের ভবিষ্যত ক্রিকেটের জন্য ভালো হবে।’
ব্যাঙ্গালোরে অবস্থিত ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের অধীনস্থ জাতীয় ক্রিকেট একাডেমিতে কাজ করা ছাড়াও বয়সভিত্তিক দলগুলোর সাথে কাজ করেছেন দীর্ঘ দিন ধরে। ২০১৩ সাল থেকে ছত্রিশগড়ের গুরু গসিদাস বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিল্যাক এডুকেশন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবেও নিযুক্ত।
ক্রিকেটের সাথে বায়োমেকানিক ও স্পোর্টস সায়েন্সের যোগসূত্র তুলে ধরে এই গুণী ট্রেনার সাংবাদিকদের বলেন, ‘সব দিক দিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট উন্নতি করছে। এটা শুধু খেলোয়াড়দের মাধ্যমে হচ্ছে তা না। একটা যৌথ প্রচেষ্টা বলা যায়। যারা তাদের দেখভাল করছে তাদেরও কৃতিত্ব দিতে হয়। আমি খুব খুশি যে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড স্পোর্টস সায়েন্স বিষয়টা বিশ্বাস করে। আর সেভাবেই ফাহিম ও কায়সার ভাইয়ের সাথে আমার কথা হয়। এটা আসলে অনেককিছুর সমন্বয়, একটা পারফরম্যান্সের জন্য। আমি আসলে বলতে পারি না যে বায়োমেকানিকসই পারফরম্যান্স বদলে দিবে।’
‘এটা নির্ভর করে ডায়েট প্ল্যান, ফিজিক্যাল ক্যাপাসিটি…আসলে এটা একটা টিম গেম, খেলোয়ায়ড় ও টিম মায়নেজমেন্টের সমন্বয়। আমি আশা করি সামনের দিনগুলোতে জুনিয়র ও সিনিয়র ক্রিকেটে বাংলাদেশ এসব সঙ্গী করেই এগোবে। আপনি কোনভাবেই বলতে পারেন না একমাত্র ডায়েটই গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্যই ডায়েট ঠিক থাকলে আপনি একদইক থেকে এগিয়ে থাকলেন তবে সবকিছু যথা সময়ে কাজে লাগানো, ফিজিক্যাল ক্যাপাসিটি, টেকনিক, স্কিল…আর দেশের জন্য খেলা মানে আপনি ক্রিকেটে ঠিকঠাকই।’
‘বাকি সব সাপ্লিমেন্ট হিসেবে কাজ করবে যেন আপনি লম্বা সময় ধরে পারফর্ম করতে পারেন। যে কারণে সাইকোলজি, মেন্টাল মেকাপ গুরুত্বপূর্ণ, অনেক কিছুই আছে এখানে। আমি বলবো না এটা কেবল বোলার বা ব্যাটারের জন্য, আমি বলবো স্পোর্টস সায়েন্স ক্রিকেটের প্রতিটি বিভাগের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ সেটা হোক ব্যাটিং, বোলিং, থ্রোয়িং কিংবা ফিল্ডিং।’