

১৯৮৬, ১৯৯৭, ২০০৪, ২০০৮, ২০১৪ এর পর ৬ষ্ঠ বারের মত শিরোপা জিতল শ্রীলঙ্কা। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়ে শিরোপা জয়ের আনন্দে মাতে দাসুন শানাকার দল।
দুবাইয়ে টসে জিতলেই জয় পাওয়া যায় ফাইনাল ম্যাচে সেই তত্ত্ব ভুল প্রমাণ করল শ্রীলঙ্কা। টস জিতে ফিল্ডিং নিয়েও ২৩ রানের ব্যবধানে হারল পাকিস্তান।
View this post on Instagram
সুপার ফোরের শেষ ম্যাচে নামা একাদশ নিয়েই মাঠে নামে শ্রীলঙ্কা। অন্যদিকে শাদাব খান ও নাসিম শাহকে একাদশে ফেরায় পাকিস্তান। অনুমিতভাবেই বাদ পড়েন হাসান আলি ও উসমান কাদির।
বাবর আজমের মুখে হাসি ফোটাতে দেরি করেননি নাসিম শাহ। ইনিংসের ৩য় বলেই কুশল মেন্ডিসকে গোল্ডেন ডাকের স্বাদ দিয়ে ফেরান নাসিম। ভারতের বিপক্ষে লোকেশ রাহুল, আফগানিস্তানের বিপক্ষে মোহাম্মদ নবি ও ফাইনালে কুশল মেন্ডিসকে গোল্ডেন ডাকের স্বাদ দেন নাসিম, ৩ জনই হয়েছেন বোল্ড।
তিনে নামা ধনঞ্জয়া ডি সিলভা উইকেটে এসেই পজিটিভ ব্যাটিং করতে থাকেন। যদিও একেবারেই স্বস্তিতে ছিলেন না ওপেনার পাথুম নিসাঙ্কা। ১১ বলে ১ চারে ৮ রান করে হারিস রউফের প্রথম শিকারে পরিণত হন তিনি।
গতির ঝড় তুলে হারিস রউফ ফেরান ধানুশকা গুনাথিলাকাকেও। ১৫০+ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায় ছোড়া বলে স্টাম্প উড়ে যায়। ৩৬ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসে শ্রীলঙ্কা।
বাঁহাতি ভানুকা রাজাপাকশেকে ফেরাতে ইফতিখার আহমেদকে আক্রমণে আনেন বাবর। যদিও ইফতিখার ফেরান ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে। ২১ বলে ৪ চারে ২৮ রান করে ইফতিখারকেই ক্যাচ দেন ধনঞ্জয়া।
দলকে বিপদে ফেলে শাদাব খানের বলে বোল্ড হন লঙ্কান অধিনায়ক দাসুন শানাকা। ৩ বলে ২ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি।
৫ উইকেট হারিয়ে ৫৮ রান করা দল ৬ষ্ঠ উইকেটে পায় ঠিক ৫৮ রানের জুটি। যেখানে ভানুকা রাজাপাকশেকে দারুণ সঙ্গ দেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। হারিস রউফের ৩য় শিকার হবার আগে ২১ বলে ৩৬ রানের ক্যামিও খেলেন। ৫ চারের সঙ্গে হাঁকান ১ ছক্কা।
হাসারাঙ্গা ফিরলেও দলকে বড় স্কোর গড়তে সাহায্য করেন রাজাপাকশে। অবশ্য তাকে ফেরাতে একাধিক সুযোগ পেয়েছিল পাকিস্তান। শাদাব খান ক্যাচ ছাড়েন একাধিক, শেষবারে তো চোটও বাধান।
দিলশান মাদুশাঙ্কা, শ্রীলঙ্কার এই গতিতারকা ইনিংসের প্রথম ওভার করতে এসেই করেন নো বল। এরপর টানা চার বল ওয়াইড, যার মধ্যে একটি পার হয় বাউন্ডারিও। ওভারের ৬ষ্ঠ বল হয় প্রথম বৈধ ডেলিভারি। ১ বলেই হজম করেন ১০ রান। যদিও এই ফায়দা মোহাম্মদ রিজওয়ান ও বাবর আজম সেভাবে নিতে পারেন নি। ঐ ওভার থেকে আসে ১২ রান।
১ বলে ১০ রান উপহার পাওয়া পাকিস্তান প্রথম ১৮ বলে তোলে ২০ রান। ৪র্থ ওভারে এসে জোড়া আঘাত হানেন প্রমোদ মাদুশান। এশিয়া কাপে ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খাওয়া বাবর ফেরেন ৬ বলে ৫ রান করে। গোল্ডেন ডাকের স্বাদ পান আরেক অফ ফর্ম ব্যাটার ফখর জামান।
২২ রানে ২ উইকেট হারানো পাকিস্তান শিবিরে স্বস্তি ফেরে মোহাম্মদ রিজওয়ান ও ইফতিখার আহমেদের জুটিতে। যদিও রান রেটের চাপ কমাতে পারেননি দুজন। ৭১ রানের জুটি ভাঙেন ঐ মাদুশানই। ৩১ বলে ২ চার ও ১ ছয়ে ৩২ রান করা ইফতিখার ফেরেন মাদুশানের ৩য় শিকার হয়ে।
ভারতের বিপক্ষে সুপার ফোরের ম্যাচে মোহাম্মদ নওয়াজকে আগে নামিয়ে লাভবান হলেও এদিন উপকার হয়নি পাকিস্তানের। ৯ বলে ৬ রান করে চামিকা করুনারত্নের শিকার হয়ে দলের কাজ কঠিনই করেছেন কেবল।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৫ রান করেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। তবে ৫৫ রান করতে ৪৯ বল খেলেন তিনি। রিজওয়ানকে ফেরানোর ওভারে আসিফ আলি ও খুশদিল শাহকে ফিরিয়ে কার্যত পাকিস্তানের জয়ের আশা নস্যাৎ করে দেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা।
শেষ বল পর্যন্ত খেলা পাকিস্তান অলআউট হয় ১৪৭ রান করে। ২৩ রানে জয় পায় শ্রীলঙ্কা।
শ্রীলঙ্কার পক্ষে ৪ উইকেট নেন প্রমোদ মাদুশান, ৩ উইকেট নেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, ২ শিকার চামিকা করুনারত্নের, ১ টি মাহিশ থিকশানার।