

এশিয়া কাপে নিয়মরক্ষার ম্যাচে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে রানের পাহাড় গড়ে ভারত। দীর্ঘ ৮৩ ইনিংস পর শতরানের মুখ দেখলেন ভিরাট কোহলি। কোহলির অপরাজিত ১২২ রানের ইনিংসের সুবাদে ভারত স্কোরবোর্ডে জমা করে ২১২ রান। কোহলি ঝড়ের পর দুবাইয়ে এরপর শুরু হয় ভুবির বোলিং তাণ্ডব! ১১১ রানে থামে আফগানিস্তানের ইনিংস; ১০১ রানের বড় জয়ে এশিয়া কাপ অভিযান শেষ করল ভারত।
অপেক্ষার অবসান। সেঞ্চুরি খরা কাটালেন ভিরাট কিং কোহলি! দুবাইতে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে রাজার মতো খেলে কোহলি করেন অপরাজিত ১২২ রান। ১ হাজার ২০ দিন পর সেঞ্চুরি করে রাজা ফিরে পেলেন তার রাজত্ব। আনুশকাকে উৎসর্গ কোহলির ৭১তম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি।
দুবাইতে সুপার ফোরে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে আফগান অধিনায়ক মোহাম্মদ নবি টস জিতে আগে বোলিংয়ে নামে। রোহিত শর্মার অনুপস্থিতিতে এই ম্যাচে ভারতের নেতৃত্বে লোকেশ রাহুল। তবে ভারতের শুরুটা এদিন দারুণ করেন দলের দুই ওপেনার ভিরাট কোহলি ও লোকেশ রাহুল। দুজনের মারকুটে ব্যাটিংয়ের সামনে আফগান বোলাররা বলের লাইন ও লেংথ হারিয়ে ফেলে। ১০ ওভার শেষে ভারত পৌঁছে গেল ৮৭ রানে।
৩২ বলে অর্ধশতরান পূরণ করেন ভিরাট কোহলি। ৩৬ বলে অর্ধশতরান করলেন রাহুলও। তবে পরপর আউট হলেন রাহুল ও সুরিয়াকুমার। ৬২ রান করা লোকেশ রাহুলকে ফিরিয়ে ফরিদ আহমেদ ভাঙেন ১১৯ রানের উদ্বোধনী জুটি। ক্রিজে এসে প্রথম বলেই ছয় হাঁকান সুরিয়াকুমার যাদব। পরের বলেই তাকে বোল্ড করে ফেরান ফরিদ আহমেদ।
কোহলির ব্যাটিয়ের সামনে এদিন রাশিদ-নবি কেউই দাঁড়াতে পারেনি। ভারত ২০ ওভারে ২১২ রান তুলল ২ উইকেটের বিনিময়ে। শেষ পর্যন্ত কোহলি অপরাজিত থাকেন ৬১ বলে ১২২ রানে। রিশাব পান্ট করেন ১৬ বলে ২০*। ১২টি চার এবং ৬টি ছয় দিয়ে নিজের ইনিংস সাজিয়েছেন কোহলি, বরাবর ২০০ স্ট্রাইক রেটে।
পাহাড়সম টার্গেটের নিচে যেন চাপা পড়ে যায় আফগান ব্যাটিং লাইন। বল হাতে রীতিমতো আগুন ঝাড়ালেন ভুবনেশ্বর কুমার। সুইং সামলাতে ব্যর্থ আফগান টপ অর্ডার। ইনিংসের প্রথম ওভারেই তুলে নেন দুই ওপেনারের উইকেট। জাজাই-গুরবাজ কোন জবাব দেওয়ার আগেই বিদায় নেন শূন্য হাতে। নিজের পরের ওভারে এসে ফের ভুবনেশ্বরের জোড়া আঘাত। করিম জানাত ২ রান করলেও নাজিবউল্লাহ জাদরান ২ বলে করেন শূন্য। স্কোরবোর্ডে ৯ রান তুলতেই নেই টপ অর্ডারের চার ব্যাটসম্যান
এরপর মোহাম্মদ নবিকে (৭) ফেরান আর্শদীপ সিং। আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে ফিরিয়ে পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন ভুবনেশ্বর কুমার। মাত্র ৪ রান দিয়ে ৫ উইকেট। অনবদ্য স্পেল ভুবনেশ্বর কুমারের। টি-টোয়েন্টিতে এটিই তার এখন ক্যারিয়ার সেরা ফিগার।
দীপক হুদা এসে প্রথম বলেই তুলে নেন উইকেট। ব্যক্তিগত ১৫ রানে রাশিদ খানকে প্যাভিলিয়নে পাঠিয়ে নিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক উইকেট হুদার নামের পাশে। মুজিব উর রহমানের ব্যাট থেকে আসে ১৮ রান। তবে অশ্বিন, আক্সার, কার্তিকরা মিলে বিদায় করতে পারেননি ইব্রাহিম জাদরানকে।
শেষপর্যন্ত ইব্রাহিম অপরাজিত থাকেন ৬৪ রানে। নির্ধারিত ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে আফগানিস্তান ১১১ রানের বেশি করতে পারেনি। ফলে ১০১ রানের বড় জয়ে এশিয়া কাপ শেষ করল ভারত।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ২১২/২ (২০ ওভার) রাহুল ৬২, কোহলি ১২২*, সুরিয়াকুমার ৬, পান্ট ২০*; ফরিদ ২/৫৭
আফগানিস্তান: ১১১/৮ (২০ ওভার) জাজাই ০, গুরবাজ ০, করিম ২, নাজিবউল্লাহ ০, ইব্রাহিম ৬৪*, নবি ৭, ওমরজাই ১, রাশিদ ১৫, মুজিব ১৮; ভুবনেশ্বর ৫/৪, আর্শদীপ ১/৭, দীপক ১/৩, অশ্বিন ১/২৭
ফলাফল: ভারত ১০১ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: ভিরাট কোহলি (ভারত)।