মুস্তাফিজ ইস্যুতে সুজনের কণ্ঠে তেতো সত্য

মুস্তাফিজ ইস্যুতে সুজনের কণ্ঠে তেতো সত্য
Vinkmag ad

এশিয়া কাপ ২০২২ এর ফাইনালের আগেই কাগজে কলমে ২৭ বছর পূর্ণ হবে মুস্তাফিজুর রহমানের। ৭ বছর আগে বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হওয়া মুস্তাফিজ সাদা বলের ক্রিকেটে অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গেছেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বল হাতে মুস্তাফিজের নিষ্প্রভ থাকার ফলে প্রশ্ন উঠছে আসলেই কি মুস্তাফিজ দলে অটো চয়েজ?

৭ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ১৫ টেস্ট খেলা মুস্তাফিজ ৭৯ টি ওয়ানডে ও ৭০ টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। উইকেট যথাক্রমে ৩১, ১৩৯ ও ৯১। শুধু টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের কথা ধরলে মুস্তাফিজ বাংলাদেশের তো বটেই, পরিসংখ্যান আমলে নিলে বিশ্বের অন্যতম সেরা।

তবে শেষ দুই বছরে তার পারফরম্যান্স, বিশেষ করে ঘরের বাইরে পারফরম্যান্স পর্যালোচনা করলে দেখা যায় মুস্তাফিজকে নিয়ে ভাবনার জায়গা আছে বেশ।

অ্যাওয়ে বা নিরপেক্ষ ভেন্যুতে গেল ২ বছরে মুস্তাফিজ খেলেছেন ১৬ টি টি-টোয়েন্টি। ১৫ টি ইনিংস মিলে বল করেছেন ৫৩ ওভার। তাতে উইকেট ঠিক ১৫ টি। যার মধ্যে এক ম্যাচে পেয়েছিলেন ৪ উইকেট, ৩ উইকেট পেয়েছিলেন একবার, ২ টি করে উইকেট পান ৩ ম্যাচে, ১ টি করে ২ টি ম্যাচে। কোন উইকেট পাননি ৮ টি ম্যাচে!

যেখানে তার ক্যারিয়ার গড় ২০.৯৪, গেল ২ বছরে অ্যাওয়েতে সেটা ৩৩.১৩! ক্যারিয়ারে ইকোনমি ৭.৭২ হলেও শেষ দুই বছরে অ্যাওয়েতে তা ৯.৩৭।

শারজাহতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৩ ওভারে ৩০ রান হজম করে কোন উইকেট না পাওয়া মুস্তাফিজ দুবাইয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের আগে অটো চয়েজ কিনা সে প্রশ্ন আসে সঙ্গত কারণেই। এর আগে দলের সঙ্গে সম্পর্কিত কেউ মুস্তাফিজের অপরিহার্যতার বিপক্ষে সেভাবে কথা না বললেও বাংলাদেশ দলের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন রাখঢাক রাখেননি।

মুস্তাফিজকে যে অটো চয়েজ ধরা হয় সেই প্রথা ভাঙার সময় এসেছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে সুজন বলেন, ‘হয়তোবা (হাসি)। আমি জানি না, ভালো প্রশ্ন। আমরাও এটা নিয়ে একটু উদ্বিগ্ন। আমরা এটা যে জানি না, তা না। আপনার প্রশ্ন আমাদের কাছে একদম নতুন না।’

‘তবে আমি এখনও বিশ্বাস করি সে আমাদের অন্যতম সেরা। ওর বোলিংয়ে যে বৈচিত্র্য আছে তা আমাদের অনেক বোলারের নেই। তো এই বৈচিত্র্যটা কাজে লাগছে না, বা সে এক্সিকিউট করতে পারছে না- কিছু একটা হচ্ছে। তবে এটা খুব উদ্বিগ্ন হবার ব্যাপার যে গত ১৫-১৬ ম্যাচেই সে উইকেটও তেমন পাচ্ছে না, ইকোনমিও তেমন ভালো না (পরিসংখ্যান উপরে উল্লেখ আছে)।’

মুস্তাফিজকে অটো চয়েজ না ধরলেও সুজনের কথাতে স্পষ্ট মূলত ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে এই ফরম্যাটে অনেক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা এগিয়ে রাখে মুস্তাফিজকে। উদ্বিগ্ন হলেও সুজন বলছেন মুস্তাফিজ ফিরবেন সেই বিশ্বাস আছে তাদের।

‘সত্যি বলতে অটো চয়েজ বলে কিছু নেই। আমরা সব সময় এই ফরম্যাটে ওকে এগিয়ে রাখি এই ফরম্যাটে ওর অভিজ্ঞতার জন্য। আইপিএল খেলে, আমাদের ফাস্ট বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছে মুস্তাফিজই। তো ঐ হিসাবে মুস্তাফিজকে অবশ্যই এগিয়ে রাখা হয়। মুস্তাফিজ ভালো করেনি তা না। তবে গত দুই বছর আপনার প্রশ্ন মতোন মুস্তাফিজ নিজেকে ওভাবে মেলে ধরতে পারছে না এটা আমাদের সবার জন্য উদ্বিগ্ন হবার মত ব্যাপার। তবে আমি বিশ্বাস করি যে একটা কথা আছে ফর্ম ইজ টেম্পোরারি, ক্লাস ইজ পার্মানেন্ট। এখনো বিশ্বাস করি মুস্তাফিজ বের হয়ে আসবে এখান থেকে এবং আমাদের ম্যাচ জেতাবে। এই বিশ্বাসটা আমাদের আছে এখনো।’

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটা কথা বেশ প্রচলিত- দেশের হয়ে খেলার সময় নিবেদন কম থাকে মুস্তাফিজের। তবে এই কথার সাথে একেবারেই একমত নন সুজন।

‘এটা আমি মনে করি না (জাতীয় দলের প্রতি নিবেদন নেই)। আমি মনে করি না কোন খেলোয়াড়ের মধ্যেই এই নিবেদনটা কম থাকে। সবখানেই থাকে (নিবেদন), ট্রেনিংয়েও সে সিরিয়াস। হচ্ছেনা, কোন একটা বাঁধা হয়তো আছে। সেখান থেকে মুস্তাফিজ যত তাড়াতাড়ি বের হয়ে আসবে দলের জন্য ততই মঙ্গল।’

দুবাই থেকে, ক্রিকেট৯৭ প্রতিনিধি

Read Previous

শানাকার ইটের বদলে সুজনের পাটকেল

Read Next

অমন হারের পরেও পজিটিভ মুডে আছে ক্রিকেটাররা

Total
2
Share