সুপার ফোরে আফগানিস্তান, অপেক্ষায় বাংলাদেশ

সুপার ফোরে আফগানিস্তান, অপেক্ষায় বাংলাদেশ
Vinkmag ad

আফগানদের ইনিংসের ১৪ তম ওভার শেষ হল, শেখ মেহেদী হাসান ৩য় ওভার শেষ করেন ডট দিয়ে। তাসকিন আহমেদ ১৫ তম ওভার শুরু করার আগে শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে দর্শকরা মুঠোফোনের ফ্ল্যাশ জ্বালিয়ে রাখলেন কিছুক্ষণ। বাংলাদেশের জয়ের আশা তখন জ্বলতে শুরু করেছে ভালো ভাবেই।

যে আলোর উজ্জ্বলতা কমেছে তাসকিনের ওভারেই। দুই বাউন্ডারিতে তাসকিন হজম করেন ১১ রান। একটি বাউন্ডারির পর টিভি ক্যামেরায় সাকিব আল হাসানের পানসে মুখ স্পষ্ট দৃশ্যমান হয়।

অথচ বাংলাদেশের বোলিংয়ের পুরোটা সময় সাকিব ছিলেন উজ্জ্বিবীত। নিজে শুরুর ওভারেই আক্রমণে এসেছেন। তার বলে বিপজ্জনক রহমানউল্লাহ গুরবাজের ক্যাচ ছেড়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। পরে তাকেই স্টাম্পড করে মেতেছেন বুনো উল্লাসে।

এর আগে পরে উইকেট না পেলেও নিজের করা ৪ ওভারে সাকিব দেন মাত্র ১৩ রান। আফগানদের রানের লাগাম সাকিব টেনে ধরলেও পারেননি তাসকিন-মুস্তাফিজরা।

ইব্রাহিম জাদরান ও নাজিবউল্লাহ জাদরানের ব্যাটে চরে অনায়াসেই জিতেছে আফগানিস্তান। ইব্রাহিম জাদরান রয়ে সয়ে খেললেও শারজাহতে ছক্কা বৃষ্টি নামান নাজিবউল্লাহ জাদরান। ৯ বল ও ৭ উইকেট হাতে রেখে জয় পাওয়া আফগানিস্তান প্রথম দল হিসাবে নিশ্চিত করল সুপার ফোর। 

বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার এখন অপেক্ষা করতে হবে ১ সেপ্টেম্বরের ম্যাচ পর্যন্ত। যে ম্যাচে জিতলেই সুপার ফোর, হারলে কাটতে হবে দেশে ফেরার টিকিট। 

এর আগে শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন সাকিব আল হাসান।

টসের পূর্বে দুই দলের জাতীয় সঙ্গীতের সময় এনামুল হক বিজয় ও মোহাম্মদ নাঈম শেখের সঙ্গে প্যাড পরে এসেছিলেন সাকিব আল হাসান। ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে নাঈম-বিজয় নামলেও সাকিবের অপেক্ষা দীর্ঘ হয়নি।

২য় ওভারের শেষ বলেই সাজঘরে ফেরেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। ফজল হক ফারুকীর করা প্রথম ওভার থেকে ১ বাউন্ডারিতে ৫ রান আদায় করা মুজিব উর রহমানের বলে বোল্ড হবার আগে নিতে পারেন কেবল ১ রান। মুজিবের বল স্পিন করে ভেতরে ঢুকেছিল, যা নাঈমের ব্যাট ও প্যাডের মাঝে থাকা দীর্ঘ ফাঁক গলে আঘাত হানে স্টাম্পে।

সুবিধা করে উঠতে পারেননি আরেক ওপেনার এনামুল হক বিজয়ও। ১৪ বল খেলে ৫ রান করা বিজয় ঠিক কি করতে চেয়েছেন তা তিনিই বলতে পারবেন। মুজিব উর রহমানের বলে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়েন তিনি। মুজিবের আরেক দফা ভেতরে ঢোকা বল সুইপ করার চেষ্টায় লাইন মিস করেন তিনি। যদিও আম্পায়ার শুরুতে আউট দেননি, রিভিউ নিয়ে সফল হয় আফগানরা।

১৩ রানে ২ উইকেট হারানো বাংলাদেশ দলের আশার পালে হাওয়া দিচ্ছিলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। নাভিন উল হকের ১ম ওভারে দুইটি বাউন্ডারি আদায় করেন সাকিব। নিজের শততম ম্যাচ খেলতে নামা সাকিব অবশ্য বেশিদুর দলকে টেনে নিতে পারেননি। মুজিব উর রহমানের ৩য় শিকার (বোল্ড) হয়ে সাকিব (১১) যখন ফেরেন পাওয়ার প্লে শেষ হতে তখনও ৪ বল বাকি।

পাওয়ার প্লে শেষ হবার পরের ওভারেই প্রথমবারের মত আক্রমণে আসেন রাশিদ খান। আক্রমণে এসে নিজের প্রভাব ফেলতে সময় নেননি। ২য় বলেই লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলেন মুশফিকুর রহিমকে। ৪ বলে ১ রান করা মুশফিক পড়তে পারেননি রাশিদের গুগলি। যদিও এদফাতেও রিভিউ নিতে হয় আফগানিস্তান অধিনায়ককে।

২৮ রানে ৪ উইকেট যাবার পর আফিফ হোসেন ধ্রুব ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের জুটিতে পার হয় ৫০। কোন বাউন্ডারি ছাড়া ১৫ বলে ১২ রান করে রাশিদ খানের বলে এলবিডব্লিউ হন, রিভিউ নিয়েও পার পাননি।

সেখান থেকে দলকে শতরানের গন্ডি পার করে ১২৭ অব্দি নিয়ে যান মোসাদ্দেক। ৩১ বলে ৪ চার আর ঐ ছক্কা সহ মোসাদ্দেকের রান দলীয় সর্বোচ্চ ৪৮। শেষদিকে শেখ মেহেদী করেন ১২ বলে ১৪ রান।

বাংলাদেশকে ১২৭ এ আটকে রাখতে সমান ৩ টি করে উইকেট নিয়েছেন রাশিদ খান ও মুজিব উর রহমান।

দুবাই থেকে, ক্রিকেট৯৭ প্রতিনিধি

Read Previous

আমুলে পাড়া দিয়ে বাংলাদেশের উপকার করলেন ওমরজাই

Read Next

একই গল্প, একই অজুহাত সাকিবেরও

Total
3
Share