

ইনিংসের ১২ তম ওভারের ৪র্থ বল। মোহাম্মদ নবির বলে স্টেপ আউট করে সোজা হাঁকান। টাইমিংটা ঠিক যেভাবে চেয়েছিলেন সেভাবে হয়নি। আজমতউল্লাহ ওমরজাই লং অফে ক্যাচ ধরে রিলে করেন লং অনে থাকা রাশিদ খানকে। খালি চোখে যা দেখে আউটই লেগেছে, কিছুক্ষণ উইকেটের মাঝখানে দাঁড়িয়ে থেকে ড্রেসিংরুমের পথে হাটতে থাকেন মোসাদ্দেক। তবে একটু বাদে থেমে যান।
শিরোনামের সূত্র এর পরের ঘটনাতেই। তৃতীয় আম্পায়ার টিভি রিপ্লেতে কয়েক দফা দেখে নিশ্চিত হন ওমরজাইয়ের পা লেগেছে বাউন্ডারি লাইনে থাকা আমুলের বিজ্ঞাপন সম্বলিত অংশে। আউটের বদলে হল ছক্কা। এই বলের আগ অব্দি বাংলাদেশের রান ছিল ৫ উইকেটে ৫৫।
সেখান থেকে দলকে শতরানের গন্ডি পার করে ১২৭ অব্দি নিয়ে যান মোসাদ্দেক। ৩১ বলে ৪ চার আর ঐ ছক্কা সহ মোসাদ্দেকের রান দলীয় সর্বোচ্চ ৪৮। শেষদিকে শেখ মেহেদী করেন ১২ বলে ১৪ রান।
বাংলাদেশকে ১২৭ এ আটকে রাখতে সমান ৩ টি করে উইকেট নিয়েছেন রাশিদ খান ও মুজিব উর রহমান।
এর আগে শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন সাকিব আল হাসান।
টসের পূর্বে দুই দলের জাতীয় সঙ্গীতের সময় এনামুল হক বিজয় ও মোহাম্মদ নাঈম শেখের সঙ্গে প্যাড পরে এসেছিলেন সাকিব আল হাসান। ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে নাঈম-বিজয় নামলেও সাকিবের অপেক্ষা দীর্ঘ হয়নি।
২য় ওভারের শেষ বলেই সাজঘরে ফেরেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। ফজল হক ফারুকীর করা প্রথম ওভার থেকে ১ বাউন্ডারিতে ৫ রান আদায় করা মুজিব উর রহমানের বলে বোল্ড হবার আগে নিতে পারেন কেবল ১ রান। মুজিবের বল স্পিন করে ভেতরে ঢুকেছিল, যা নাঈমের ব্যাট ও প্যাডের মাঝে থাকা দীর্ঘ ফাঁক গলে আঘাত হানে স্টাম্পে।
সুবিধা করে উঠতে পারেননি আরেক ওপেনার এনামুল হক বিজয়ও। ১৪ বল খেলে ৫ রান করা বিজয় ঠিক কি করতে চেয়েছেন তা তিনিই বলতে পারবেন। মুজিব উর রহমানের বলে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়েন তিনি। মুজিবের আরেক দফা ভেতরে ঢোকা বল সুইপ করার চেষ্টায় লাইন মিস করেন তিনি। যদিও আম্পায়ার শুরুতে আউট দেননি, রিভিউ নিয়ে সফল হয় আফগানরা।
১৩ রানে ২ উইকেট হারানো বাংলাদেশ দলের আশার পালে হাওয়া দিচ্ছিলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। নাভিন উল হকের ১ম ওভারে দুইটি বাউন্ডারি আদায় করেন সাকিব। নিজের শততম ম্যাচ খেলতে নামা সাকিব অবশ্য বেশিদুর দলকে টেনে নিতে পারেননি। মুজিব উর রহমানের ৩য় শিকার (বোল্ড) হয়ে সাকিব (১১) যখন ফেরেন পাওয়ার প্লে শেষ হতে তখনও ৪ বল বাকি।
পাওয়ার প্লে শেষ হবার পরের ওভারেই প্রথমবারের মত আক্রমণে আসেন রাশিদ খান। আক্রমণে এসে নিজের প্রভাব ফেলতে সময় নেননি। ২য় বলেই লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলেন মুশফিকুর রহিমকে। ৪ বলে ১ রান করা মুশফিক পড়তে পারেননি রাশিদের গুগলি। যদিও এদফাতেও রিভিউ নিতে হয় আফগানিস্তান অধিনায়ককে।
২৮ রানে ৪ উইকেট যাবার পর আফিফ হোসেন ধ্রুব ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের জুটিতে পার হয় ৫০। কোন বাউন্ডারি ছাড়া ১৫ বলে ১২ রান করে রাশিদ খানের বলে এলবিডব্লিউ হন, রিভিউ নিয়েও পার পাননি।
মোসাদ্দেক হোসেনের সঙ্গে ৩৬ রানের জুটি গড়া মাহমুদউল্লাহ করেন ২৭ বলে ২৫ রান। তাকেও ফেরান রাশিদ খান।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
বাংলাদেশ ১২৭/৭ (২০), নাঈম ৬, বিজয় ৫, সাকিব ১১, মুশফিক ১, আফিফ ১২, মাহমুদউল্লাহ ২৫, মোসাদ্দেক ৪৮*, মেহেদী ১৪, সাইফউদ্দিন ০*; মুজিব ৪-০-১৬-৩, রাশিদ ৪-০-২২-৩।