

প্রথম টি-টোয়েন্টিতে আগে ব্যাট করে ২০০ পেরোনো দলীয় সংগ্রহ জিম্বাবুয়ের, ম্যাচ জিতেছে ১৭ রানে। ২৪ ঘন্টার কম সময়ের ব্যবধানে দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের মুখোমুখি হয়ে উল্টো চিত্র স্বাগতিকদের। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের স্পিন বিষে নীল হয়ে দিশেহারা জিম্বাবুয়ের মান বাঁচিয়েছে অবশ্য আগের ম্যাচে জয়ের নায়ক সিকান্দার রাজা। তবে শেষ হাসি হেসেছে বাংলাদেশই, জিতেছে ৭ উইকেটে।
হারারে স্পোর্টস ক্লাবে টস জিতে আজও (৩১ জুলাই) আগে ব্যাট করে জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশ একাদশে আসে দুই পরিবর্তন, তাসকিন আহমেদ ও নাসুম আহমেদের পরিবর্তে সুযোগ পান শেখ মেহেদী হাসান ও হাসান মাহমুদ। চোট কাটিয়ে জাতীয় দলের জার্সিতে পেসার হাসান ফিরলেন প্রায় দেড় বছর পর।
মোসাদ্দেকের ৫ উইকেট শিকারের দিনে জিম্বাবুয়ে ৮ উইকেটে ১৩৫ রান করতে পেরেছে রাজার ৬২ ও রায়ান বার্লের ৩২ রানে ভর করে। জবাবে লিটন দাসের ৫৬ রানের ইনিংসের সাথে আফিফ হোসেনের ৩০* ও নাজমুল হোসেন শান্তর ১৯* রানে সহজ জয় পায় বাংলাদেশ।
মোসাদ্দেকের করা ইনিংসের প্রথম বলেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন রেগিস চাকাভা (০), অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে প্রায় ওয়াইড হয়ে যাওয়া বলে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন। জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলা শটে ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বল খুঁজে নেয় সোহানের গ্লাভস।
প্রায় একই জায়গায় ফেলা মোসাদ্দেকের শেষ বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে কভারে শেখ মেহদীকে ক্যাচ দেন আগের ম্যাচে ফিফটি হাঁকানো ওয়েস্লে মাধেভেরে (৪)।
ইনিংসের তৃতীয় ও নিজের দ্বিতীয় ওভার করতে এসে মোসাদ্দেক তুলে নেন অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিনের উইকেট (১)। ইনিংসের পঞ্চম ও নিজের তৃতীয় ওভারে ফিরতি ক্যাচে শন উইলিয়ামসকেও (৮) সাজঘরের পথ দেখান এই অফ স্পিনার।
টানা স্পেলে নিজের শেষ ওভার ও ইনিংসের সপ্তম ওভারে মোসাদ্দেকের পঞ্চম শিকার মিল্টন শুম্বা (৩)। ৩১ রানে জিম্বাবুয়ের হারানো ৫ উইকেটের সবকটিই শিকার তার।
মোসাদ্দেকের ঘূর্ণি বিষ সহ্য করে জিম্বাবুয়েকে পথ দেখায় আগের ম্যাচে বিধ্বংসী এক ইনিংস খেলা সিকান্দার রাজা, সঙ্গী রায়ান বার্ল। দুজনে মিলে জুটিতে তোলে ৮০ রান।
মুস্তাফিজের করা ১৫তম ওভারের শেষ বলে সিঙ্গেল নিয়ে ব্যাক টু ব্যাক ফিফটি তুলে নেন রাজা। তবে ১৮তম ওভারে রায়ান বার্লকে বোল্ড করে জুটি ভাঙেন হাসান মাহমুদ। ৩১ বলে ৩ চারে ৩২ রান আসে বার্লের ব্যাটে।
মুস্তাফিজের করা ১৯তম ওভারে অবশ্য রাজাকেও ফিরতে হয়, ৫৩ বলে ৪ চার ২ ছক্কায় সাজান ৬২ রানের ইনিংসটি। শেষ পর্যন্ত জিম্বাবুয়ে থামে ৮ উইকেটে ১৩৫ রানে।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে আরেক দফা ব্যর্থ হওয়া ওপেনার মুনিম শাহরিয়ারকে (৮ বলে ৭) হারিয়ে পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ তোলে ৫৩ রান। যেখানে বড় ভূমিকা আরেক ওপেনার লিটন দাসের।
ইনিংসের ৮ম ওভারে রায়ান বার্লকে চার মেরে ৩০ বলে ছুঁয়েছেন ফিফটি। তবে শন উইলিয়ামসের করা পরের ওভারেই এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন। নামের পাশে ৩৩ বলে ৬ চার ২ ছক্কায় ৫৬ রান।
তার বিদায়ে এনামুল হক বিজয়ের সঙ্গে ভাঙে ৪৬ রানের জুটি। পরের ওভার বিজয়কেও (১৫ বলে ১৬) সাজঘরে ফিরতে হয়। রাজাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দেন। ৮১ রানে ৩ উইকেট হারালেও বাকি পথ অনায়েসেই পাড়ি দেন আফিফ হোসেন ও নাজমুল হোসেন শান্ত।
দুজনের অবিচ্ছেদ্য ৫৫ রানের জুটিতে ১৫ বল হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত শান্ত ২১ বলে ১৯ ও আফিফ ২৮ বলে ৩০ রানে অপরাজিত ছিলেন।
এই জয়ে সিরিজে ১-১ সমতায় ফিরলো বাংলাদেশ। অঘোষিত ফাইনালে পরিণত হওয়া শেষ ম্যাচটি আগামী ২ আগস্ট একই মাঠে অনুষ্ঠিত হবে।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
জিম্বাবুয়ে ১৩৫/৮ (২০), চাকাবা ০, আরভিন ১, মাধেভেরে ৪, রাজা ৬২, উইলিয়ামস ৮, শুম্বা ৩, বার্ল ৩২, জঙ্গে ১১*, মাসাকাদজা ৬, এনগারাভা ০*; মোসাদ্দেক ৪-০-২০-৫, মুস্তাফিজ ৪-০-৩০-১, হাসান ৪-০-২৬-১
বাংলাদেশ ১৩৬/৩ (১৭.৩), লিটন ৫৬, মুনিম ৭, বিজয় ১৬, আফিফ ৩০*, শান্ত ১৯*; এনগারাভা ৩-০-২৩-১, উইলিয়ামস ২-০-১৩-১, রাজা ৩-০-১৮-১
ফলাফলঃ বাংলাদেশ ৭ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরাঃ মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত (বাংলাদেশ)।