

দেশের ক্রিকেটে আঞ্চলিক কাঠামো বেশ পুরোনো দাবি। দীর্ঘদিনের অপেক্ষা শেষে আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে ক্রিকেট বিকেন্দ্রীকরণের এই প্রকল্প। আজ (১৯ জুলাই) বিসিবির (বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড) এজিএমে (বার্ষিক সাধারণ সভা) পাশ হয়েছে আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থার বিষয়টি। বিসিবির আগামী বোর্ড সভার আগেই শুরু হতে পারে কার্যক্রম।
এতে করে বিভাগীয় ক্রিকেট সংস্থাই এখন নিজ নিজ অঞ্চলে ক্রিকেটীয় বিষয়গুলো সরাসরি দেখভাল করবে। তবে শুরুর সময়টায় বিসিবির কাছে বেশ ভালো নিয়ন্ত্রণ থাকছে। মূলত আলাদা আলদা বিভাগের আলাদা আলাদা নিয়মের জটিলতা এড়ানোর জন্যই মূল বিষয়গুলো সব বিভাগে এক রাখার ভাবনা দেশের ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থার।
আঞ্চলিক ক্রিকেট কাঠামো বাস্তবায়নের মাধ্যমে ঢাকায় বিসিবি কার্যালয় থেকে পুরো দেশের ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম পরিচালনা জটিলতার অবসান ঘটবে। এর ইতিবাচক প্রভাবের ব্যাপারে দারুণ আশাবাদী বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।
রাজধানীর পাঁচ তারকা হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে এজিএম শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘এটার প্রভাব আসলে অনেক অনেক ভালো হওয়ার কথা। উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি এখন আমরা ঢাকা থেকে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছি। ঢাকা থেকে আমরা বড়জোর বিভাগীয় পর্যায়ে যেতে পারছি। বিশেষ করে যে সমস্ত জায়গা থেকে আমাদের পরিচালক আসছে সে সব জায়গা ছাড়া অন্য জায়গায়া আমাদের যোগাযোগ কম। জেলা পর্যায়ে তো আরও কম, সব জেলায় তো প্রশ্নই উঠে না।’
‘যে কারণে নিয়ন্ত্রণ টা যেভাবে করা উচিৎ ছিল সেভাবে আমরা করতে পারিনি এবং করা সম্ভবও না শুধু ঢাকায় বসে বসে। আমার মনে হয় আঞ্চলিক ক্রিকেট কাঠামো যদি সব জায়গায় হয়ে যায়, তাহলে ৭ টা হলে ৭ টা আরও ভাগ হয়ে গেল। ওদের ওখান থেকে সুপারভিশনটা অবশ্যই আরও ভালো হবে এতোদিন ধরে আমরা যা করে আসছি।’
এদিকে প্রাথমিকভাবে নিয়ন্ত্রণ নিজেদের কাছে রাখা প্রসঙ্গে পাপন যোগ করেন, ‘বলে দিলাম বিভাগগুলোতে হবে। এখন বিভাগগুলোর জন্য গাইডলাইন্স তৈরি করবে কে? একেকটা বিভাগ একেকভাবে গাইডলাইন্স তৈরি করে তাহলে তো আরেক সমস্যা। তাহলে গাইডলাইনটা তৈরি করবে কে বলেন? এখনতো কোনো আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা নাই। তো আপাতত…আপনাদেরকে ধাপে ধাপে চিন্তা করতে হবে।’
‘এখন বিসিবিকে দায়িত্ব দেওয়া হল অন্তত গাইডলাইনটা…এই যে কতজন সদস্য থাকবে বা অন্যান্য যেসব বিষয় সেসব নির্ধারণে বিসিবিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিসিবি প্রাথমিকভাবে গাইডলাইনটা তৈরি করে দিবে। সে অনুযায়ী আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা গঠন হবে। যখন এই গাইডলাইন সম্পন্ন হবে এবং একবার আঞ্চলিক ক্রিকেট কাঠামো গঠন হবে তখন সমস্ত প্রশ্নের উত্তর আপনারা পেয়ে যাবেন।’
আপাতত মোট ৭ টি আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা কার্যক্রম পরিচালনা করতে যাচ্ছে। কিন্তু ময়মনসিংহ বিভাগ ঢাকা বিভাগের অধীনেই থাকছে। যদিও বিসিবি সভাপতি নিশ্চিত করেছেন অন্যান্য বিভাগে বিসিবির যে সকল সুযোগ সুবিধা থাকবে এবং খেলাধুলা আয়োজন হবে তার সবই পাবে ময়মনসিংহ।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা ঢাকার অধীনেই আছে। এ বিষয়ে আজ কথা হয়েছে…যেহেতু ঢাকার সাথে আছে এ জন্য ৭ টা বলা হয়েছে। এটা পরিবর্তন নিয়ে এখানে কোনো আলোচনা হয় নাই। তবে একটা জিনিস আজকে এখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে যে ধরণে খেলাধুলা বা সুযোগ সুবিধা একটা বিভাগ পায় অবশ্যই সে খেলাধুলার ব্যবস্থা আমরা করে দিব ক্রিকেট বোর্ড থেকে ময়মনসিংহ থেকে।’
আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থার কার্যক্রম পরিচালনায় নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সাথে বিসিবি মনোনীত সদস্যরাও থাকবেন। বড় বিভাগের জন্য এই সদস্য সংখ্যা ১৭ ও ছোট বিভাগের জন্য ১১।