

বল হাতে বিদেশের মাটিতে ধারাবাহিকতার অনন্য নজির গড়ছেন খালেদ আহমেদ। চলমান সেন্ট লুসিয়া টেস্টে নিলেন ৫ উইকেট, যা ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে প্রথম কোনো বাংলাদেশী পেসারের কীর্তি। তবে দলের অবস্থা ভালো নেই বলে তা ঠিকঠাক উপভোগের সুযোগই পাচ্ছেন না এই পেসার। নিজে দারুণ কিছু করেও দলে পার্থক্য গড়তে পারছেন না। এখন না হলেও ভবিষ্যত নিয়ে অবশ্য আশাবাদী খালেদ।
৫ উইকেটে ৩৪০ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ পর্যন্ত থামে ৪০৮ রানে। ৬৮ রানে শেষ ৫ উইকেট তুলে নেওয়ার পথে বড় অবদান খালেদেরই। আগেরদিনের দুই উইকেটের সাথে এ দিন নিলেন আরও ৩ উইকেট।
সব মিলিয়ে ৩১.৩ ওভারে ১০৬ রান খরচায় শিকার ৫ উইকেট। নিজের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং, প্রথম ৫ উইকেট। এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরেও দারুণ ছন্দে ছিলেন খালেদ। ডারবান টেস্টে তো ৫ উইকেট শিকারের দ্বারপ্রান্তেও ছিলেন (৯২ রানে ৪ উইকেট)। পোর্ট এলিজাবেথে নেন ১০০ রানে ৩ উইকেট।
দক্ষিণ আফ্রিকায় হয়নি, নিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজে। যেখানে কোনো বাংলাদেশী পেসার হিসেবে তিনিই প্রথম।
তৃতীয় দিন শেষে উচ্ছ্বসিত খালেদ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘অনেক ভালো লাগছে যে ৫ উইকেট পেয়েছি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। অনেক দিন ধরে চেষ্টা ছিল যে ৫ উইকেট কীভাবে নেওয়া যায়। আগেও একটা সুযোগ এসেছিল, মিস করে ফেলেছি। এটায় চেষ্টা ছিল যেন ৫ উইকেট হয়। খুব ভালো লাগছে। এটা ধরে রাখার চেষ্টা করব।’
খালেদের এমন পারফরম্যান্সের পরও দল ইনিংস হারের মুখে। ১৭৪ রানে পিছিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ১৩২ রান তুলতেই হারায় ৬ উইকেট। ইনিংস হার এড়াতে চতুর্থ দিন করতে হবে আরও ৪২ রান।
দল ভালো অবস্থানে না থাকায় খালেদের নিজের পারফরম্যান্স প্রভাব ফেলছে না। তার বিশ্বাস সামনের দিনগুলোতে আসবে পরিবর্তন। কারও চেষ্টার ত্রুটিও দেখছেন না এই ডানহাতি পেসার।
তিনি বলেন, ‘সব ক্রিকেটারের ইচ্ছা থাকে, তার মাইলফলক যেন ‘ইম্প্যাক্টফুল’ হয়, দলের লাভ হয়। টেস্ট ক্রিকেটে হয়তো আমাদের ভালো সময় যাচ্ছে না। তবে সামনে অনেক সময় আসবে, অনেক ভালোভাবে হবে। সবাই জানপ্রাণ দিয়ে চেষ্টা করছে, নিজেকে কীভাবে আরও ভালোভাবে মেলে ধরা যায়।’
তার নেওয়া ৫ উইকেটের মধ্যে আছে টপ অর্ডার ও মিডল অর্ডার ব্যাটারদের উইকেট। যেখানে ক্যারিবিয়ানদের হয়ে সর্বোচ্চ ১৪৬ রান করা কাইল মায়ের্সও তার শিকার। দলকে বিপর্যয়ের মুখ থেকে টেনে তোলা এই ব্যাটারের উইকেটকে কষ্টের ফল হিসেবে উল্লেখ করেছেন খালেদ।
তার ভাষায়, ‘প্রতিটি উইকেটই আমার জন্য ছিল স্পেশাল, প্রথমবার ৫ উইকেট পেয়েছি। বিশেষ করে মায়ের্সের উইকেট ছিল অনেক কষ্টের ফল। গতকাল থেকে ওকে আউট করার চেষ্টা করেছিলাম। আজকে ওকে স্লোয়ার বলে পরাস্ত করেছি, নিজের কাছে ভালো লেগেছে যে পরিকল্পনা করে আউট করতে পেরেছি।’