

২৪ জুন থেকে সেন্ট লুসিয়ার গ্রস আইলেটে ড্যারেন স্যামি ন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার ২য় ও শেষ টেস্ট। এই টেস্টের ৩য় দিনের খুটিনাটি আপডেট এই লাইভ রিপোর্টে।
ইনিংস পরাজয়ের শঙ্কাঃ
ইনিংস পরাজয়ের শঙ্কা নিয়ে ৩য় দিনের খেলা শেষ করেছে বাংলাদেশ। ৬ উইকেটে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১৩২। ইনিংস ব্যবধানে হার এড়াতে এখনও দরকার ৪২ রান।
১৬ রান নিয়ে নুরুল হাসান সোহান ও কোন রান না করে মেহেদী হাসান মিরাজ ৪র্থ দিন খেলতে নামবেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (৩য় দিন শেষে):
বাংলাদেশ ১ম ইনিংসে ২৩৪/১০ (৬৪.২), তামিম ৪৬, জয় ১০, শান্ত ২৬, বিজয় ২৩, লিটন ৫৩, সাকিব ৮, নুরুল ৭, মিরাজ ৯, এবাদত ২১*, শরিফুল ২৬, খালেদ ১; সিলস ১৪.২-৪-৫৩-৩, জোসেফ ১৫-১-৫০-৩, ফিলিপ ৯-১-৩০-২, মায়ের্স ৮-০-৩৫-২
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংসে ৪০৮/১০ (১২৬.৩), ব্র্যাথওয়েট ৫১, ক্যাম্পবেল ৪৫, রেইফার ২২, বোনার ০, ব্ল্যাকউড ৪০, মায়ের্স ১৪৬, জশুয়া ২৯, জোসেফ ৬, রোচ ১৮*, ফিলিপ ৯, সিলস ৫; শরিফুল ১৯-৬-৭৬-২, খালেদ ৩১.৩-৩-১০৬-৫, মিরাজ ৩৯-৮-৯১-৩
বাংলাদেশ ২য় ইনিংসে ১৩২/৬ (৩৬), তামিম ৪, জয় ১৩, শান্ত ৪২, বিজয় ৪, লিটন ১৯, সাকিব ১৬, নুরুল ১৬*, মিরাজ ০*; রোচ ১০-১-৩২-৩, জোসেফ ১০-২-৩১-২, সিলস ৬-২-১৫-১
বাংলাদেশ ৪২ রানে পিছিয়ে।
সাকিবের বিদায়ঃ
অ্যান্টিগা টেস্টের ২য় ইনিংসে দারুণ এক জুটি গড়ে দলকে লিড পাইয়ে দিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান ও নুরুল হাসান সোহান। তবে সেন্ট লুসিয়ায় ২য় ইনিংসে এই জুটি টিকল কেবল ২০ বল, যেখানে রান আসে কেবল ১৪।
৩২ বলে ১ চারে ১৬ রান করে আলঝারি জোসেফের ২য় শিকারে পরিণত হন তিনি। ১১৮ রানে নেই ৬ উইকেট।
ভাঙল সাকিব-শান্ত জুটিঃ
লিটন দাসের বিদায়ের পর অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে সঙ্গে নিয়ে দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ফিফটির খুব কাছে যেয়ে ভেঙেছে জুটি। ৬১ বলে এই জুটিতে আসে ৪৭ রান।
৯১ বলে ৮ চারে ৪২ রান করে আলঝারি জোসেফের প্রথম শিকারে পরিণত হন শান্ত, উইকেটের পেছনে ক্যাচ ধরেন জশুয়া ডা সিলভা। ১০৪ রান রানের মাথায় বাংলাদেশ হারায় ৫ম উইকেট।
ফিরলেন লিটন দাসওঃ
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রান এসেছিল লিটন দাসের ব্যাটে। দ্বিতীয় ইনিংসেও শুরুটা ভালোই করেছিলেন লিটন। তবে জেইডেন সিলসের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে লিটনকে সাজঘরে ফিরতে হয় ব্যক্তিগত ১৯ রানে। অনফিল্ড আম্পায়ার আউট না দিলে রিভিউ নিয়ে সফল হয় উইন্ডিজ। ৫৭ রানের মাথায় ৪র্থ উইকেট হারায় সফরকারীরা।
উইকেট বৃষ্টিঃ
৮ বছর পর টেস্ট ক্রিকেটে ফেরাটা সুখকর হলনা এনামুল হক বিজয়ের। প্রথম ইনিংসে ২৩ রান করে আউট হওয়া বিজয় দ্বিতীয় ইনিংসে আউট হলেন ৪ রান করে। বিজয় অবশ্য নিজেকে দুর্ভাগা ভাবতেই পারেন, দুদফাতেই আম্পায়ার্স কলের শিকার হতে হয়েছে তাকে।
৩২ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসেছে বাংলাদেশ, ৩ উইকেটই কেমার রোচের। বিজয় আউট হবার সাথে সাথেই আরেক দফা বৃষ্টি বাগড়ায় বন্ধ হয় খেলা।
জয়ের দুর্দশা চলছেইঃ
৮ টেস্টের ১৪ ইনিংসে ব্যাট করা মাহমুদুল হাসান জয় কখনো কখনো আলো ছড়ালেও অন্ধকার দেখিয়েছেন বারবার। পাকিস্তানের বিপক্ষে ডাকের স্বাদ পেয়ে ক্যারিয়ার শুরু করা জয় ৩য় ইনিংসে খেলেন ৭৮ রানের ইনিংস। মাউন্ট মাউঙ্গানুইয়ে ঐ ইনিংসের পরেই ডারবানে ৩২৬ বল খেলে ১৩৭ রানের ইনিংস।
জয় যখন প্রশংসার সাগরে ভাসছেন তার পরেই তার ব্যাটে রানের ভাটা। এরপরের ১০ ইনিংসে তার রান- ৪, ০, ০, ৫৮, ০, ১৫, ০, ৪২, ১০, ১৩।
আজ ২১ বলে ৩ চারে ১৩ রান করে আউট হন কেমার রোচের বলে।
তামিমকে ফিরিয়ে রোচের ২৫০ঃ
২০০৯ সালে কিংস্টনে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল কেমার রোচের। সাকিব আল হাসানকে সাজঘরে ফিরিয়ে শুরু, ৩৩ বছর বয়সী রোচ সাদা পোশাকে উইন্ডিজদের ভরসার নাম হয়ে উঠেছেন ১৩ বছরের ক্যারিয়ারে। আজ তামিম ইকবালকে সাজঘরে ফিরিয়ে পূর্ণ করলেন নিজের ২৫০ উইকেট।
উইন্ডিজদের হয়ে সর্বাধিক উইকেট সংগ্রহকারীদের তালিকায় ৬ নম্বরে এখন তার নাম, পেছনে ফেলেছেন মাইকেল হোল্ডিংকে।
৮ বলে ৪ রান করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তামিম।
খালেদের প্রথম পাচঃ
এর আগে কোন বাংলাদেশি পেসার ওয়েস্ট ইন্ডিজে এসে ইনিংসে ৫ বা তার বেশি উইকেট পাননি। সেই আক্ষেপ আজ ঘোচান খালেদ আহমেদ। ৬ষ্ঠ বাংলাদেশি পেসার হিসাবে টেস্টের এক ইনিংসে নিলেন ৫ উইকেট। টেস্ট ক্রিকেটে এটি তার প্রথম।
টেস্টে বাংলাদেশি পেসারের ৫ বা তার বেশি উইকেট (ইনিংসে)-
৪ বার- শাহাদাত হোসেন
২ বার- রবিউল ইসলাম
১ বার- মঞ্জুরুল ইসলাম, রুবেল হোসেন, এবাদত হোসেন, খালেদ আহমেদ।
অ্যাওয়ে টেস্টে-
২ বার- রবিউল ইসলাম
১ বার- মঞ্জুরুল ইসলাম, শাহাদাত হোসেন, রুবেল হোসেন, এবাদত হোসেন, খালেদ আহমেদ
ওয়েস্ট ইন্ডিজে-
খালেদ আহমেদ।
খালেদের ৫ উইকেট নেবার দিনে ৪০৮ রানে অলআউট হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১ম ইনিংসে স্বাগতিকরা নিশ্চিত করেছে ১৭৪ রানের বড় লিড।
অবশেষে ফিরলেন মায়ের্সঃ
অষ্টম ব্যাটার হিসাবে কাইল মায়ের্স যখন আউট হলেন ১ম ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের লিড তখন ১৫০। বলা চলে এই লিডের প্রায় পুরোটাই কাইল মায়ের্সের অবদান। ২০৮ বল খেলে ১৮ চার ও ২ ছয়ে মায়ের্সের রানই যে ১৪৬!
মায়ের্সকে ফিরিয়ে নিজের ৪র্থ উইকেটের দেখা পান খালেদ আহমেদ। মিড অনে ক্যাচ ধরেন শরিফুল ইসলাম।
সেন্ট লুসিয়ায় বৃষ্টিঃ
৩য় দিনের খেলা শুরু হবার আগে সেন্ট লুসিয়ায় বৃষ্টি হলেও খেলা শুরু হয়েছিল নির্ধারিত সময়েই। তবে খেলা শুরুর ৪৪ মিনিট বাদে আবার বৃষ্টি শুরু হলে খেলা বন্ধ করতে বাধ্য হন দুই অনফিল্ড আম্পায়ার। ১১৬ ওভারে উইন্ডিজদের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ৩৭৬ রান।
জোসেফকে ফেরালেন খালেদঃ
আগের দিন একই ওভারে দুই উইকেট নিয়ে ম্যাচ ক্ষণিকের জন্য জমিয়ে দিয়েছিলেন খালেদ আহমেদ। আজ ৩য় দিনে এসে নিজের করা ৩য় ওভারের ৫ম বলেই খালেদ ফেরান আরও এক উইন্ডিজ ব্যাটারকে। ৯ বলে ১ চারে ৬ রান করা আলঝারি জোসেফকে লিটন দাসের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান খালেদ। ৩৬৩ রানের মাথায় ৭ম উইকেট হারায় স্বাগতিকরা।
দিনের শুরুতেই মিরাজের উইকেটঃ
২য় দিনের শেষ ভাগে কাইল মায়ের্স ও জশুয়া ডা সিলভার জুটি ভুগিয়েছিল বাংলাদেশকে। দুজনে ৯২ রান যোগ করে অপরাজিত থেকে মাঠ ছেড়েছিলেন।
৩য় দিনে এসে অবশ্য ৪ রানের বেশি যোগ করতে পারেনি এই জুটি। মেহেদী হাসান মিরাজের বলে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়েন জশুয়া ডা সিলভা। ১১৫ বল খেলে ৩ চারে ২৯ রান করেন জশুয়া। ৩৪৪ রানের মাথায় ৬ষ্ঠ উইকেটের পতন ঘটে উইন্ডিজদের ইনিংসে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (২য় দিন শেষে):
বাংলাদেশ ১ম ইনিংসে ২৩৪/১০ (৬৪.২), তামিম ৪৬, জয় ১০, শান্ত ২৬, বিজয় ২৩, লিটন ৫৩, সাকিব ৮, নুরুল ৭, মিরাজ ৯, এবাদত ২১*, শরিফুল ২৬, খালেদ ১; সিলস ১৪.২-৪-৫৩-৩, জোসেফ ১৫-১-৫০-৩, ফিলিপ ৯-১-৩০-২, মায়ের্স ৮-০-৩৫-২
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংসে ৩৪০/৫ (১০৬), ব্র্যাথওয়েট ৫১, ক্যাম্পবেল ৪৫, রেইফার ২২, বোনার ০, ব্ল্যাকউড ৪০, মায়ের্স ১২৬*, জশুয়া ২৬*; শরিফুল ১৭-৬-৬৭-১, খালেদ ২১-১-৭৭-২, মিরাজ ৩১-৮-৬৮-২
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১০৬ রানে এগিয়ে।