মায়ের্সের সেঞ্চুরিতে চালকের আসনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ

মায়ের্সের সেঞ্চুরিতে চালকের আসনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ
Vinkmag ad

সেন্ট লুসিয়া টেস্টের প্রথম দুইদিনকে একই বিন্দুতে এনে দাঁড় করিয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম দিন ব্যাট হাতে দারুণ শুরু পেয়েও খেই হারিয়ে পিছিয়ে যেতে হয়। দ্বিতীয় দিন আবার বল হাতে প্রথম সেশনেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৪ উইকেট শিকার। তবে পরের দুই সেশনে ছন্দ হারায় টাইগার বোলাররা। আর তাতেই সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে দলকে চালকের আসনে বসান কাইল মায়ের্স।

মায়ের্সের ১২৬ রানের অপরাজিত ইনিংসের সাথে ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটের ফিফটিতে ৫ উইকেটে ৩৪০ রান তুলে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ২৩৪ রানের জবাবে ইতোমধ্যে ১০৬ রানের লিড স্বাগতিকদের।

দিনের শেষ ভাগে মায়ের্সকে দারুণ সঙ্গ দেওয়া জশুয়া ডি সিলভা অপরাজিত আছেন ২৬ রানে। ফিফটি মিস করা ক্যাম্পবেলের ব্যাটে ৪৫ রান।

বিনা উইকেটে ৬৭ রানে দিন শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্যাম্পবেল ৩২ ও ব্র্যাথওয়েট ৩০ রানে অপরাজিত ছিলেন।

গতকাল যেখানে শেষ করেছেন আজ দুজনে শুরু করেছেন সেখান থেকেই। সাবলীল ব্যাটিংয়ের দেখা মেলে। শরিফুল ইসলামের করা দিনের ১০ম ওভারেই দলীয় রান ১০০ পূর্ণ হয়।

তবে ঐ ওভারেই শর্ট বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ক্যাম্পবেল ফিরলে ভাঙে শতরানের উদ্বোধনী জুটি। ৭৮ বলে ৬ চারে ক্যাম্পবেল সাজিয়েছেন ৪৫ রানের ইনিংসটি।

ক্যাম্পবেলের বিদায়ের পর রেইমন রেইফারকে নিয়ে ছন্দেই ছিলেন ব্র্যাথওয়েট। মেহেদী হাসান মিরাজের করা ৩৬তম ওভারে তুলে নেন ক্যারিয়ারের ২৭তম টেস্ট ফিফটি।

অনপুযুক্ত হওয়ায় ৩৭তম ওভারে পরিবর্তন করতে হয় বল। পরের ওভারের প্রথম বলেই উইকেট মিরাজের। বোল্ড করেন ক্যারিনিয়ান দলপতি ব্র্যাথওয়েটকে। ফিফটির পর ১০৭ বলে ৭ চারে ৫১ রানেই থামতে হয়।

পরের ওভারে খালেদের জোড়া শিকার। প্রথম বলে রেইফারকে (৪১ বলে ২২) ও শেষ বলে নতুন ব্যাটার এনক্রুমাহ বোনারকে (৭ বলে ০) করেন বোল্ড। আর তাতেই ১ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিনা উইকেটে ১০০ থেকে ৪ উইকেটে ১৩২ রানে পরিণত হয় স্বাগতিকরা।

৪ উইকেট তুলে নিয়ে দিনের প্রথম সেশনটা নিজেদের করে নেয় বাংলাদেশ। ১৩৭ রানে লাঞ্চে যাওয়ার সময় কাইল মায়ের্স ৪ ও জার্মেইন ব্ল্যাকউড ২ রানে অপরাজিত ছিলেন।

লাঞ্চের পর স্বাগতিকদের পথে ফেরান দুজনে। এবাদত হোসেনের করা ৪৫তম ওভারে টানা দুই চার মায়ের্সের ব্যাটে। নিয়মিত বাউন্ডারির দেখা পাওয়া মায়ের্স ৫০তম ওভারে মিরাজকে ছক্কাও মারেন।

সময়ের সাথে সাথে বাংলাদেশী বোলারদের আলগা বলকে কাজে লাগিয়ে দ্রুত গতিতে রান তোলে মায়ের্স-ব্ল্যাকউড। স্বাচ্ছন্দ্যে খেলেই ৫৪তম ওভারে জুটির ফিফটি পূর্ণ করে দুজনে। ৬০তম ওভারে দলীয় রানও পেরোয় ২০০।

খালেদের করা ৬৯তম ওভারের প্রথম বলে ডিপ ক্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে চার মেরে ৭৫ বলেই ফিফটি ছুঁয়েছেন মায়ের্স। পরের বলে সিঙ্গেল নেওয়ায় ব্ল্যাকউডের সাথে জুটিও স্পর্শ করে শতরান। একই ওভারে মায়ের্সের ব্যাটে আরও এক চার, তাতে দল পেয়ে যায় লিড।

শেষ পর্যন্ত উইকেট বিহীন দ্বিতীয় সেশন পার করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টাইগার বোলারদের হতাশা উপহার দিয়ে ৪ উইকেটে ২৪৮ রান তুলে চা বিরতিতে যায় স্বাগতিকরা। মায়ের্স ৬০ ও ব্ল্যাকউড অপরাজিত ৪০ রানে। ততক্ষণে ১৪ রানের লিড পাওয়ার পথে এই সেশনে ১১১ রান যোগ হয় স্কোরবোর্ডে।

চা বিরতির পর কোনো রান যোগ করার আগেই জুটি ভাঙেন মিরাজ। সেশনের দ্বিতীয় ওভারে মিডল স্টাম্প তাক করা লেংথ ডেলিভারিতে ক্রস খেলার চেষ্টা করেন ব্ল্যাকউড। তবে ব্যাট মিস করে এলবিডব্লিউর শিকার হন, রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি। ১১৬ রানের জুটির সমাপ্তিতে তার ব্যাটে ১২১ বলে ৪০ রান।

ব্ল্যাকউড ফিরলে জশুয়া ডি সিলভাকে নিয়ে নিজের কাজটা ঠিকই চালিয়ে গেছেন মায়ের্স। দ্বিতীয় নতুন বল নিয়েও সুবিধা করতে পারেনি টাইগার পেসাররা।

শরিফুলের করা ৯৪ ওভারেতো পরপর চার ও ছক্কা মেরে ১৫০ বলে মায়ের্স তুলে নেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় শতক। এর আগেরটিও বাংলাদেশের বিপক্ষে। ২০২১ সালে চট্টগ্রামে অভিষেক ম্যাচে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে দলকে দারুণ এক জয় এনে দেন।

আজ মায়ের্সের সেঞ্চুরির সাথে দলীয় সংগ্রহও পেরোয় ৩০০। দিনের বাকি সময় কোনো সমস্যা ছাড়াই পার করে দেন জশুয়াকে নিয়ে। সাকিবের করা ১০৫তম ওভারে লিড ছুঁয়েছে ১০০। ৫ উইকেটে ৩৪০ রানে দিন শেষ করার পথে মায়ের্স ১৮০ বলে ১৫ চার ২ ছক্কায় ১২৬ রানে ও জশুয়া ১০৬ বলে ৩ চারে ২৬ রানে অপরাজিত আছেন। দুজনে অবিচ্ছেদ্য ৯২ রানের জুটিতে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর (২য় দিন শেষে):

বাংলাদেশ ১ম ইনিংসে ২৩৪/১০ (৬৪.২), তামিম ৪৬, জয় ১০, শান্ত ২৬, বিজয় ২৩, লিটন ৫৩, সাকিব ৮, নুরুল ৭, মিরাজ ৯, এবাদত ২১*, শরিফুল ২৬, খালেদ ১; সিলস ১৪.২-৪-৫৩-৩, জোসেফ ১৫-১-৫০-৩, ফিলিপ ৯-১-৩০-২, মায়ের্স ৮-০-৩৫-২

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংসে ৩৪০/৫ (১০৬), ব্র্যাথওয়েট ৫১, ক্যাম্পবেল ৪৫, রেইফার ২২, বোনার ০, ব্ল্যাকউড ৪০, মায়ের্স ১২৬*, জশুয়া ২৬*; শরিফুল ১৭-৬-৬৭-১, খালেদ ২১-১-৭৭-২, মিরাজ ৩১-৮-৬৮-২

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১০৬ রানে এগিয়ে।

৯৭ প্রতিবেদক

Read Previous

শ্রীলঙ্কার ১৮ সদস্যের শক্তিশালী টেস্ট স্কোয়াড ঘোষণা

Read Next

ইংল্যান্ডে করোনা পজিটিভ হলেন রোহিত শর্মা

Total
2
Share