

সেন্ট লুসিয়া টেস্টের প্রথম দিন পিছিয়ে বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করে দারুণ ব্যাটিং বান্ধব উইকেটে করতে পেরেছে ২৩৪ রান। জবাবে বিনা উইকেটে ৬৭ রান তুলে দিন শেষ করলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শুরুটা ভালো হলেও ব্যাটাররা যেভাবে শেষ করেছে তাতে খুশি নন বাংলাদেশ ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্স। যদিও বাজে আম্পায়ারিংকেও কিছুটা দায় দিলেন এই অস্ট্রেলিয়ান।
তামিম ইকবাল ও মাহমুদুল হাসান জয়ের উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৪১। দুজনে আউট হলেও ২ উইকেটে স্কোরবোর্ডে ১০৩! সেখান থেকে পরপর দুই ওভারে আম্পায়ার্স কলের রেষানলে পড়ে ৪ উইকেটে ১০৩ রানে পরিণত হয় বাংলাদেশ।
এক পাশ আগলে রাখা নাজমুল হোসেন শান্ত (২৬) ও ৮ বছর টেস্ট খেলতে নামা এনামুল হক বিজয় (২৩) শিকার হন আম্পায়ার্স কলের। দুজন যেভাবে এগোচ্ছেন তাতে ওভাবে আউট না হলে চিত্রটা ভিন্ন হতে পারতো। এমনকি ১০ রান করার পথে ওপেনার জয় দুইবার জীবন পান রিভিউ নিয়ে। তার বিপক্ষে দুইবারই এলবিডব্লিউর আবেদনে সাড়া দেয় আম্পায়ার, দুইবারই ছিল উইকেট মিসিং।
ছন্দ হারানো বাংলাদেশ আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। ৪৬ রান করে তামিম ফিফটি মিস করলেও ক্যারিয়ারের ১৪তম টেস্ট ফিফটি হাঁকান লিটন (৫৩)। কিন্তু বেশি দূর টেনে নিতে পারেননি। ১৯১ রানে ৮ উইকেট হারানোর পর শরিফুল (১৭ বলে ২৬) ও এবাদতের (৩৫ বলে ২১) অতি গুরুত্বপূর্ণ দুই ইনিংসে ২৩৪ পর্যন্ত যেতে পারে বাংলাদেশ।
দিন শেষে ব্রডকাস্টারে আলাপে জেমি সিডন্স বলেন, ‘আমি মনে করি আজকে তামিম, লিটনকে খুব স্বাচ্ছন্দ্যে দেখা গেছে কিন্তু ৪০, ৫০ এ আটকে যাওয়া দলকে বড় সংগ্রহ এনে দিতে পারে না। এসব ব্যাটারদের এমন শুরু পেয়ে সামনে টেনে নিতে হবে। তরুণ ছেলেরাও মুগ্ধ করছিল, তবে আম্পায়ারের কিছু সিদ্ধান্ত ক্লোজ ছিল যা আমাদের পক্ষে যায়নি। এই মুহূর্তে ২৩০ খুব ভালো কিছু না।’
‘আজকে ছেলেদের ভালো ধৈর্য্য দেখা গেছে। তারা বল ছেড়েছে বেশ ভালোভাবে। গত এক সপ্তাহ ধরে আমরা এটা নিয়েই কাজ করছিলাম। প্রথম টেস্ট থেকে অনেক বেশি বল খেলেছি আর তারাও (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) বেশ ভালো বল করেছে আজ। আমরা যতক্ষণ ব্যাট করতে চেয়েছি ততক্ষণ পারিনি, ২৩০ এমন উইকেটে ভালো স্কোর না। আমি মনে করি না।’
আম্পায়ার্স কলের বাইরেও টাইগার ব্যাটাররা আলগা শট খেলে আউট হয়েছেন বেশ কয়েকটি। দারুণ শুরু পেয়ে অমন শটে ইনিংসের ইতি টানেন তামিম, লিটন, সাকিব, মিরাজরা। অথচ আজ উইকেট থেকে খুব বেশি সুইং পাচ্ছিল না প্রতিপক্ষ পেসার কেমার রোচ, আলঝারি জোসেফরা। বাংলাদেশ ব্যাটিং কোচের মতে ৪০০ এর উইকেটে ২৩৪ রানে অলআউট হয়েছে তার শিষ্যরা।
খানিক হতাশ সিডন্স এ প্রসঙ্গে যোগ করেন, ‘নাহ আজ কোনো সুইং দেখা যায়নি সেভাবে যা ব্যাটারদের অস্বস্তিতে ফেলবে। কোনো সুইং ছিল না। উইকেট কতটা ভালো ছিল শরিফুলের তেড়েফুড়ে ব্যাটিং করা দেখলে বুঝা যায়।’
‘এটা ২৩০ এর পিচ নয় কিন্তু আপনি জানেন আগে ব্যাট করলে কিছুটা চাপ থাকেই। সে চাপ সামলে ওপেনাররা ভালো শুরু এনে দেয়। ২ উইকেটে ১০০ রান উঠে যায় স্কোরবোর্ডে, মনে হচ্ছিল ৪০০ এর দিকে এগোচ্ছি। কিন্তু ২৩০ এ আটকে গেছি আমরা।’
‘আমাদের আরও বেশি সময় ব্যাটিং করা প্রয়োজন। টেস্ট ক্রিকেটে আপনাকে লম্বা সময় ধরে ব্যাট করতে হবে। আমরা আজকে সেভাবে শুরু করেছিলাম এবং আগামীকালও ব্যাটিং করার কথা ভাবছিলাম। সে ক্ষেত্রে এই মুহূর্তে আমরা এমন কিছু করতে ব্যর্থ হয়েছি।’