

রাজশাহীতে চলছে আমানা গ্রুপ বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ। যেখানে খেলছেন জাতীয় দলের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডে থাকা ক্রিকেটারদের খেলাটা অবশ্য কিছুটা নেতিবাচক ব্যাপার। জাতীয় দলের কোনো সিরিজের ঠিক কয়েকদিন আগে এসব টুর্নামেন্টে খেলে চোটে পড়ার সম্ভাবনাও যে থাকে। তবে বিসিবি এ ক্ষেত্রে দেখিয়েছে উদাসীনতা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টেস্ট সিরিজ আগে, ফলে টেস্ট স্কোয়াডের ক্রিকেটাররাই বর্তমানে আছে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে। ১৬ জুন অ্যান্টিগায় শুরু প্রথম টেস্ট, ২৪ জুন সেন্ট লুসিয়ায় শুরু হবে দ্বিতীয় টেস্ট।
২ জুলাই প্রথম টি-টোয়েন্টি, যেখানে ৩ ম্যাচ সিরিজটি শেষ হয়ে ১০ জুলাই মাঠে গড়াবে প্রথম ওয়ানডে। ওয়ানডে সিরিজেও ম্যাচ তিনটি।
ফলে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডের ক্রিকেটাররা দেশ ছাড়বে জুনের শেষ দিকে। সম্ভাব্য সূচি ২২ জুন। তার আগে ফাঁকা সময়টায় দেশে তাদের জন্য নেই কোনো ক্যাম্প। ব্যক্তিগত উদ্যোগে মিরপুরে নিজেদের প্রস্তুত করছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুনিম শাহরিয়ার, এনামুল হক বিজয়রা।
তবে রাজশাহীর লিগে খেলার সুযোগ পেয়ে হাতছাড়া করেননি মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, আফিফ হোসেন ধ্রুব, শেখ মেহেদীরা। আপাত দৃষ্টিতে খেলার মধ্যে আছেন বলে বিষয়টিকে মনে হতে পারে ইতিবাচক। তবে একটু গভীরভাবে ভাবলে, অন্তত সামনে জাতীয় দলের সিরিজ আছে বলে এসব এড়িয়ে যাওয়াটাই শ্রেয় ছিল সাইফউদ্দিন, আফিফদের।
খুব পেশাদার কোনো লিগ নয়, যে কারণে চোট থেকে রেহাই পাওয়ার সেরা দিক নির্দেশনা পাওয়া যাবে না নিশ্চিত। রাজশাহীর আঞ্চলিক ক্রিকেট বাস্তবতায় এই টুর্নামেন্ট দারুণ প্রশংসার দাবিদার। কিন্তু দলগুলোতে ফিজিও কিংবা ট্রেনারদের মান জাতীয় পর্যায়ের নয় তা বলা বাহুল্য।
সাইফউদ্দিন, আফিফদের নিয়ে অবশ্য কোনো অভিযোগ নেই জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর।
‘ক্রিকেট৯৭’ কে তিনি বলেন,
‘দেখেন তারা খেলছে এটাতো খারাপ কিছু না। খেলার মধ্যে আছে, সে হিসেবে বরং ভালোই। আর তারাতো মেডিকেল টিমের অনুমোদন নিয়েই খেলছে। সবচেয়ে বড় কথা চোটে পড়ার ঝুঁকি তো সব জায়গাতেই থাকবে। সুতরাং স্বাভাবিক (খেলাটা)।’
প্রধান নির্বাচকের কথার সূত্র ধরেই বলা যায় ঝুঁকি সব জায়গাতেই থাকে। এমনকি অনুশীলনে গা গরমের ফুটবল ম্যাচ খেলেও চোটে পড়ার নজির আছে সাইফউদ্দিনের। যে কারণে একটা সময় অনুশীলনে ফুটবল খেলা বন্ধ করে দেওয়া হবে কীনা এ নিয়েও আলোচনা উঠেছিল।
সিরিজের আগে ক্রিকেটারদের চোট মুক্ত রাখতে বোর্ডের চেষ্টার কমতি থাকে না। তবে এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর সামনে রেখে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দলের ক্রিকেটারদের জন্য দুই একজন দেশি কোচ দ্বারা একটা ক্যাম্প পরিচালনা করা যেত অনায়েসেই।
এতে নিজেদের ম্যাচ ফিট রাখতে সাইফউদ্দিন, আফিফ, মেহেদীদের এখানে সেখানে খেলে বেড়ানোর দায় দেশের ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থাকেও যে কিছুটা হলেও নিতে হবে।
আবার ক্রিকেটারদের নিজেদেরও এসব ব্যাপারে সচেতন হওয়ার বিকল্প নেই। জাতীয় দলের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালই যেমন ম্যাচের আগেরদিন খুব একটা সিরিয়াস অনুশীলন করেন না। মূলত ম্যাচের কয়েক ঘন্টা আগে নিজেকে অহেতুক চোটে ফেলার ঝুঁকি নেন না। যা বেশ ইতিবাচক প্রক্রিয়া।
এসব ছোট তবে গুরুত্বপূর্ণ জায়গাতেই হয়তো এখনো শেখার আছে সাইফউদ্দিনদের। গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মাঝপথে চোটে পড়ার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দীর্ঘ বিরতি কাটাবেন এই অলরাউন্ডার।