

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সময়টা খারাপ যাচ্ছিলো মুশফিকুর রহিমের। যা নিয়ে সমালোচনা কম হচ্ছিল না। এমনকি গুঞ্জন উঠেছে যেকোনো নির্দিষ্ট ফরম্যাট থেকে মিস্টার ডিপেন্ডেবল খ্যাত এই ব্যাটার নিজেকে সরিয়েও নিতে পারেন। সবকিছুর জবাব যেন মুশফিক চট্টগ্রাম টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে দিলেন। সেঞ্চুরির পর তার স্ত্রীও ইনস্টাগ্রামে দিয়েছেন অভিমানী পোস্ট। মুশফিক সেটি না দেখলেও সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন বাজে সময়ের সমালোচনা ঠিকই ছুঁয়ে যায় তাদের।
সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ওয়ানডে কিংবা টেস্ট কোনো ফরম্যাটেই ভালো করতে পারেননি মুশফিক। বরং অসময়ে প্রিয় শট রিভার্স সুইপ খেলে আউট হয়ে সমালোচনার পথটা নিজেই বিস্তৃত করেছেন।
লঙ্কানদের বিপক্ষে আজ মুশফিক তুলে নেন ক্যারিয়ারের ৮ম সেঞ্চুরি। অবশ্য ২৮২ বলে ১০৫ রান করেই থামতে হয় তাকে। তার সেঞ্চুরির পরই স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস মন্ডি ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট দেন।
ছবির ক্যাপশনে লিখেন, ‘আমরা হাসি মুখেই বিদায় নিবো ইনশাআল্লাহ ! ✌️????
তবে আপনাদের রিপ্লেসমেন্ট আছে তো ??? সেদিকেও একটু নজর দিলে বাংলাদেশ ক্রিকেটের উন্নয়ন হতো!’
View this post on Instagram
ক্রিকেটারদের খারাপ সময়ে সমালোচনার জবাব দিয়ে এই প্রথম কোনো ক্রিকেটারের স্ত্রী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখে তা নয়। এর আগে সাকিব আল হাসান, লিটন দাস, সাবেক অধিনায়ক আকরাম খানের স্ত্রীও কী-বোর্ডে হাত দেন।
এসবের মানে কি তবে ক্রিকেটারদের নিয়ে হওয়া সমালোচনা পরিবারকেও গভীরভাবে স্পর্শ করে? আজ সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্ন করা হয়। জবাবে মুশফিক বলেন তিনি এখনো জানেন না তার স্ত্রী কি লিখেছেন। তবে সর্বোপরি সমালোচনার ধরণ নিয়ে কথা বলেছেন। তার মতে আরও গঠনমূলক উপায়ে সমালোচনা হলে, খারাপ সময়ে সমর্থন দিলে জুনিয়র ক্রিকেটাররা অনুপ্রাণিত হবেন।
মুশফিক বলেন, ‘প্রথমত আমিতো দেখিনি কি লিখেছে, এখন দেখলে বোঝা যাবে কি বলা যাবে বা কি লিখেছে কেন লিখেছে। আর দ্বিতীয়ত যেটা বললেন স্বাভাবিকভাবেই কোনো খেলোয়াড়ের জন্য কাম্য না। কারণ বাংলাদেশেই আমি দেখেছি একটা দিন যদি কেউ সেঞ্চুরি করে সে ব্র্যাডম্যানের চেয়েও বড় খেলোয়াড় হয়ে যায়। আবার ২-৩ টা ম্যাচে রান না করলে গর্ত করে গর্তের মধ্যে ঢুকে যেতে হয়। আমার মনে হয় এটা শুধু একমাত্র বাংলাদেশেই এটা হয়। জানি না এটা কাদের সমস্যা, কারা এটা বলে থাকে।’
‘তারা যদি বাংলাদেশ ক্রিকেটকে সাপোর্ট করে থাকেন, তারা যদি আরও পরিণত হতে পারেন তাহলে ক্রিকেটারদের জন্য অনেক ভালো। আমরাতো সিনিয়র হতে পারি আমরাতো আর, খুব বেশি দিন খেলবোও না। এটা একটা কালচারের ভেতর দিয়ে যায়। এটা একটা আমি মনে করি জুনিয়র যারা আছে আমরা যদি তাদের সাপোর্ট করি, তারা এখান থেকে আরও একটি মোটিভেটেড হতে পারবে। কারন অন দ্য ফিল্ড আমাদের এতোকিছু করতে হয়। এখন অব দ্য ফিল্ড নিয়ে যদি ভাবতে হয়। তাহলে কঠিন হয়ে যাবে অন দ্য ফিল্ডের কাজ করা।’
দিন কয়েক আগে গুঞ্জন ছিল টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট থেকে নিকট ভবিষ্যতে অবসরে যাচ্ছেন মুশফিক। তবে আজ সংবাদ সম্মেলনে জানালেন এমন কোনো ভাবনাই তার নেই।
মুশফিক যোগ করেন, ‘না, আমার এমন কোনো ভাবনা নেই, আমার ইচ্ছে বাংলাদেশে হয়ে যতটুকু ম্যাচ খেলার আমার কাছে সুযোগ আসবে, এবং আমাকে তারা যেভাবে চাইবে, আমি চেষ্টা করে যাব আমার ফিটনেস আর পারফরম্যান্স দিয়ে সেই সুযোগ ধরে রাখার।’
‘চাওয়া-পাওয়ার তো তেমন কিছু নেই সত্যি বলতে। আমার মনে হয় বাংলাদেশে অভিজ্ঞতার কোনো দাম নেই। সেখানে আমি মনে করি ১৭ বছর, আলহামদুলিল্লাহ। এতটুকু যে আসতে পেরেছি, এটা আমার কাছে অনেক বড় ব্যাপার। সামনে আল্লাহ যতটুকু রেখেছেন, উনি লিখেই রেখেছেন। ইন শা আল্লাহ অতটুকু যেন ভালো মতো খেলতে পারি।’