

বাংলাদেশ ক্রিকেটে দারুণ এক সমালোচিত নাম গামিনি ডি সিলভা। শ্রীলঙ্কান এই কিউরেটরকেই মিরপুরের উইকেটের জন্য দায়ী করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। তবে গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান মাহবুব আনাম বলছেন তিনি নিজে সবকিছুর দায় নিচ্ছেন।
টানা খেলায় ক্লান্ত মিরপুরে বল নিচু হওয়ার দোষে কলঙ্কিত। কিউরেটর হিসেবে সবার আগে এর জন্য কাঠ গড়ায় তোলা হয় গামিনিকে। গুঞ্জন আছে গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান মাহবুব আনামের বিশেষে তদবিরেই দিনের পর দিন টিকে যাচ্ছেন আম্পায়ার থেকে কিউরেটর বনে যাওয়া এই লঙ্কান।
উইকেট ইস্যুতে এবার মাহবুব আনামকে সামনে পেয়ে গামিনির দায় নিয়ে প্রশ্ন করার সুযোগ মিস করেনি সংবাদ কর্মীরা। তবে মিরপুরে আজ (৯ মে) সাংবাদিকদের তিনি সাফ জানিয়ে দিলেন দায় গামিনির একার নয়। বরং গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে নিজেই দায় কাঁধে নিলেন।
মাহবুব আনাম বলেন, ‘দায়টা আমি নেবো। বোর্ড হিসেবে আমাদেরই নেওয়া উচিত। কারণ বোর্ড যেভাবে পরিচালিত হয়েছে এই চার মাসে, যেটা আমি বললাম। আপনারা কাউকে যদি ব্যক্তিগতভাবে আক্রোশ করেন সেটা অন্যায় হবে। কারণ এই মাঠে আমাদের যে জয়গুলো আছে, সেই জয়গুলোর মালাটা তো আমরা অন্যকে পরাতে পারি। কিন্তু মালাটা কিন্তু আমরাই নেই। সো আপনারা কিন্তু আমাদের জয়গুলো দেখেন…’
‘আমরা ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার মতো পরাশক্তির বিরুদ্ধে টেস্ট জয় করেছি, আমরা নিউজিল্যান্ডকে একই মাঠে হারিয়েছি। মোটামুটি সব দলের বিপক্ষেই জিতেছি। আমাদের যে ক্রিটিসিজমগুলো হয়, আমার মতে অজ্ঞতার কারণেই হয়। আমরা যদি সায়েন্টিফিক কারণগুলো উপলব্ধি করি তাহলে অনেক কিছুই আমাদের কাছে আরও ভালো শোনাবে।’
পরিসংখ্যানই বলে মিরপুরের স্লো উইকেটের পেছনে মাত্রাতিরিক্ত খেলা হওয়াটাও বড় কারণ। সে বাস্তবতা তুলে ধরেছেন মাহবুব আনামও।
‘আমি কাউকে ইন্ডিভিজুয়ালি বলবো না। আমি যেমনটা বললাম, বছরে সবমিলিয়ে প্রায় ৩৫০০ দিন খেলা হয়। আপনারাই শুধু মেপে দেখেন, মিরপুরের মতো একটা স্টেডিয়ামে আমাদের ৬০ দিনের বেশি খেলা উচিত না। সেখানে জানুয়ারি থেকে শুরু করে টানা ১২০ দিন খেলেছি আমরা। এখানে স্বয়ং বিধাতা এসেও আমার মনে হয় না কোনো কিছু করা সম্ভব।’
এর বাইরে উইকেট তৈরির প্রয়োজনীয় উপকরণের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের আবহাওয়া উপযুক্ত নয় বলছেন বিসিবির এই পরিচালক।
এ প্রসঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘এখানে আরেকটা বিষয় হলো, আমাদের দেশে উইকেট বানাতে যে ক্লে’টা দরকার, সেই ক্লে’তে যে এডহেসিভ কন্টেন্ট থাকা দরকার সেটা সব জায়গায় পাওয়া যায় না। আপনারা যদি দেখে থাকেন মিরপুরে উইকেটটা ব্ল্যাক ক্লে দিয়ে বানানো। এই উইকেটটা আমরা পার্থের কিউরেটরকে দিয়ে বানিয়েছিলাম। যেখানে আমরা বিভিন্ন ধরনের স্পেস করা যায়। বগুড়ার উইকেটটা আরও ব্রাউন ক্লে, চট্টগ্রামেরটা আরও বেশি এঁটেল মাটি।’
‘এই জিনিসটা আছে, এগুলো কিন্তু ডিফিকাল্ট। এখানে মাটি কাটাটাও ডিফিকাল্ট। এটা আমরা বছরের মাসখানেক সময় পাই তাও নদীর নিচে। তাই এটা পাওয়াও দুস্কর অবস্থায় থাকে। এই জিনিসগুলোতে আমাদের কাজ করতে হবে। আমরা ভালো সয়েল পাওয়ার খোঁজ করছি।’