

এক ম্যাচ হাতে রেখেই প্রথমবারের মতো ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের (ডিপিএল) শিরোপা ঘরে তুললো শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। নুরুল হাসান সোহানের আরও এক দুর্দান্ত ইনিংসে ভর করে আজ (২৬ এপ্রিল) সুপার লিগের চতুর্থ রাউন্ডের ম্যাচে আবাহনীকে ৪ উইকেটে হারায় ইমরুল কায়েসের দল।
টুর্নামেন্টটির শুরু থেকেই বেশ দাপটের সাথেই খেলছিল শেখ জামাল । সেই দাপট ধরে রাখল দলটি টুর্নামেন্টের শেষ পর্যন্ত। তৃতীয় রাউন্ডে জয়ের দেখা পেলেই শিরোপা নিশ্চিত হতো তাদের। কিন্তু অপেক্ষার পালা বাড়িয়ে দিয়েছিল প্রাইম ব্যাংক।
তবে অপেক্ষার অবসান হল গত তিন আসরের টানা চ্যাম্পিয়ন আবাহনীকে হারিয়ে। আজকের জয়ে ১৪ ম্যাচে শেখ জামালের পয়েন্ট ২৪, যেখানে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জের সমান ম্যাচে ২০ পয়েন্ট। ফলে শেষ ম্যাচে শেখ জামাল হারলে, লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জ জিতলেও তাদের পয়েন্ট হবে ২২!
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে জিতে আগে ব্যাট করা আবাহনী ৬ উইকেটে ২২৯ রানেই থামে। তৌহিদ হৃদয়ের ব্যাটে সর্বোচ্চ ৫৩ রান। শেষদিকে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন (৪৪*) ও জাকের আলি অনিকের (৪৭*) দলকে মাঝারি মানের পুঁজি এনে দেয়।
জবাবে ৭৮ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর সোহানের ৮১ রানের হার না মানা ইনিংসের বীরত্ব। আর তাতেই ডিপিএল ইতিহাসে প্রথমবার শিরোপার স্বাদ পেলো শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ধীরে লয়ে শুরু করেও ইনিংস বড় করতে পারেনি শেখ জামালের ব্যাটাররা। সৈকত আলি (২৫ বলে ১৭), সাইফ হাসান (২১ বলে ১৫), ইমরুল কায়েস (৪১ বলে ১৫), মুশফিকুর রহিম (৩৫ বলে ১৬) হয়েছেন ব্যর্থ। ১৫ বলে ৩ রান করে রবিউল ইসলাম রবি আউট হলে ৫ উইকেটে ৭৮ রানে পরিণত হয় শেখ জামাল।
সেখান থেকে পারভেজ রাসুলকে নিয়ে ৬ষ্ঠ উইকেট জুটিতে সোহান যোগ করেন ৭২ রান। ৪০ বলে ৩ চারে ৩৩ রান করে রাসুল আউট হন শান্তর বলে। তাতে আবারও হারের শঙ্কায় পড়ে দল। কিন্তু জিয়াউর রহমানকে নিয়ে ৮০ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটিতে দারুণ এক জয় এনে দেন সোহান।
দলকে ৪ উইকেট ও ১৮ বল হাতে রেখে জয় এনে দেওয়ার পথে ৮১ বলে ৮ চার ২ ছক্কায় ৮১ রানে অপরাজিত ছিলেন সোহান। ২৬ বলে ৪ চার ২ ছক্কায় জিয়া অপরাজিত ৩৯ রানে।
এর আগে ব্যাট করতে নামা আবাহনী ৩৫ রানেই হারায় ৩ উইকেট। মোহাম্মদ নাইম শেখ (১৬), লিটন দাস (৪) ও নাজমুল হোসেন শান্ত (৮) হয়েছেন ব্যর্থ। এরপর প্রতিরোধ গড়েন তৌহিদ হৃদয়-আফিফ হোসেন ধ্রুব।
দুজনে অর্ধশতাধিক রানের জুটি গড়ে দলকে বড় সংগ্রহের পথ দেখাচ্ছিলেন। ঠিক তখনই সাইফ হাসানের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন আফিফ। ৪৪ বলে ২৯ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
মোসাদ্দেক হোসেন থিতু হয়েও ফেরেন ১৫ রান করে। হৃদয় তুলে নেন ফিফটি। ৬৯ বলে ৪টি চারে ফিফটি করেন এই ডানহাতি। এরপর মাত্র ৩ রান যোগ করে ফেরেন হৃদয়।
১৫৪ রানে ৬ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর আবাহনীকে রক্ষা করেন সাইফউদ্দিন-জাকের আলী অনিক। দুজনে ৭৫ রানের জুটি গড়ে মাঠ ছাড়েন অপরাজিত থেকে। জাকের ধরে খেললেও সাইফ খেলেছেন হাত খুলে। ৭০ বলে ৪৭ রান আসে অনিকের ব্যাট থেকে। আর ৫টি ছয়ে ৩৩ বলে ৪৪ রান করেন সাইফ।
শেখ জামালের হয়ে সর্বোচ্চ ২টি উইকেট নেন জিয়া। এ ছাড়া একটি করে উইকেট নেন রসুল, সাইফ হাসান, সুমন খান ও সানজামুল ইসলাম।