

সৌম্য সরকার, নিজের নামের মতোই সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাট হাতে সৌম্য, শান্ত হয়ে আছেন। পারফরম্যান্সের গ্রাফ এতোটাই নিচে নেমেছে যে জাতীয় দলের পর বাদ পড়লেন ঘরোয়া ক্রিকেটের দল থেকেও। তবে নিজেকে গুটিয়ে না নিয়ে নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করেছেন। ফেরার মিশনে সঙ্গী হিসাবে পাচ্ছেন দেশের স্বনামধন্য কোচ, ক্রিকেট ব্যক্তিত্ব নাজমুল আবেদিন ফাহিমকে।
ফাহিম বলছেন সৌম্য নিজের সমস্যা বুঝতে পেরেছে। আর সে অনুসারে নিজেকে ভেঙে গড়ার লক্ষ্যেই নতুন মিশন হাতে নিয়েছেন। সাকিব, তামিম কিংবা মুশফিকরা যখন খারাপ সময়ে যেমন ফিরে যান শৈশব কোচ ফাহিমের কাছে সৌম্যও বেছে নিয়েছেন সে পথ।
সৌম্য ক্যারিয়ারের সবচেয়ে খারাপ সময়টাই বোধহয় পার করছেন। সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হারিয়েছে শেষ সুযোগ। ব্যাট হাতে ৪ ম্যাচে করতে পেরেছেন মাত্র ২৭ রান। এরপর ঘরোয়া ক্রিকেটেও নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন, বিপিএলটা যায়নি ঠিক সৌম্যময়। চলতি ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে (ডিপিএলে) তো আরও মলিন।
সুযোগ পাওয়া ৭ ম্যাচে রান সাকূল্যে ৯০, যেখানে প্রথম ম্যাচেই খেলেছেন ৫৯ রানের অপরাজিত ইনিংস। অর্থাৎ পরের ৫ ম্যাচে রান মাত্র ৩১! মোহামেডানের এই বাঁহাতি ব্যাটারকে শেষদিকে হারাতে হয়েছে জায়গাও। এমনকি আগামীকাল (১৫ এপ্রিল) লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে ম্যাচেও তার একাদশে থাকা অনিশ্চিত।
যদিও সেসব এক পাশে রেখে নিজের ভুল ত্রুটি শুধরে নিতে কাজ করছেন। নাজমুল আবেদিন ফাহিম নিজ তাড়না থেকেই সৌম্যকে দেখভাল করছেন। একটা সময় জাতীয় দলের অপরিহার্য ব্যাটারের দুঃসময়ে পাশে থাকা দায়িত্ব বলে মনে করেছেন।
মিরপুরে আজ (১৪ এপ্রিল) সংবাদ মাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘ও যে ভালো খেলতে পারছে না, রান করতে পারছে না এটা আমরা সবাই দেখছি। সৌম্য আমাদের জাতীয় দলের একজন অপরিহার্য খেলোয়াড় ছিল। ওর দিকে আমাদের চোখ থাকবেই সবসময়। ও ভালো খেললেও থাকবে, ভালো না খেললেও থাকবে। ওর যে অভিজ্ঞতা আছে জাতীয় দলে খেলার, বিশেষ করে বিদেশের মাটিতে ওর যে পারফরম্যান্স তাতে ওর যে মেধা, খেলার ক্ষমতা আছে সেটা নিয়ে সন্দেহ থাকে না।’
‘তো একজন খেলোয়াড় যখন সেখান থেকে নামতে নামতে এতোটা নিচে নেমে আসে তখন বুঝতে হবে কোথাও না কোথাও কিছু সমস্যা থাকতে পারে। এটা খুব অবাক করার মতো ব্যাপার যে ওর মতো একজন ক্রিকেটার জাতীয় দলের সাথে এত দ্রুত ক্লাব ক্রিকেটেও নিজের জায়গাটা নিশ্চিত করতে পারছে না। আমি অনুভব করেছি ওকে একটু সাহায্য করা দরকার, ওকে একটু দেখা দরকার, কোনোভাবে সাহায্য করা যায় কীনা। সেটাকে মাথায় রেখেই…এর আগেও দুই-তিনটা সেশন করেছি। এরপরেও ওকে নিয়ে কাজ করবো, একসাথে আমরা কাজ করবো।’
নিজেকে গড়ার মিশনে সৌম্য ত্যাগ স্বীকার করছেন বলেও যোগ করেন ফাহিম, ‘ওর ইচ্ছে আছে ভালো খেলার, ভালো জায়গায় খেলার, ভালো কিছু করার। সে জন্য বিভিন্নভাবেই সে চেষ্টা করছে, ত্যাগ স্বীকার করছে, ফিটনেস নিয়ে অনেক কাজ করছে, মেন্টাল ব্যাপারগুলো নিয়েও কাজ করছে।’
‘আশা করছি সে যে খারাপ সময়টায় আছে সেটা পার করে দিতে পারবে। যদি পার করে দিতে পারে তবে আমরা হয়তো আরেকজন ব্যাটারকে পাবো যে উপরের দিকে ব্যাট করতে পারে এবং জাতীয় দলের সিলেকশন প্যানেলের জন্য অ্যাভেইলএবল থাকবে। এ সংখ্যাটা যত বাড়বে তত আমাদের জন্য ভালো হবে।’
‘বিশেষ করে লিগের খেলায় জায়গা না পাওয়া, চ্যালেঞ্জের সম্মুখীণ হওয়াটা খুব কঠিন একটা ব্যাপার হওয়ার কথা এই মানের একজন খেলোয়াড়ের। তবে সে এটাকে মানিয়ে নিয়েছে এবং ওর দায় আছে সেখানে। সেটা বুঝতে পেরেছে যে ওকে ফিরে আসতে হবে ভালো খেলেই, সেটা জাতীয় দল হোক ক্লাব হোক ভালো খেলেই প্রমান করতে হবে। সেটা বুঝেই কাজটা করে যাচ্ছে।’