ডারবানের পর পোর্ট এলিজাবেথেও বাংলাদেশকে লজ্জায় ডোবালেন মহারাজ

ডারবানের পর পোর্ট এলিজাবেথেও বাংলাদেশকে লজ্জায় ডোবালেন মহারাজ
Vinkmag ad

হারের মঞ্চটা প্রস্তুত ছিল আগেরদিনই, তবে হাতে দুইদিন সময় থাকায় বাংলাদেশের ব্যাটাররা কতক্ষণ টিকতে পারেন সেটাই ছিল দেখার। ডারবান ও পোর্ট এলিজাবেথ টেস্টকে এক বিন্দুতে এনে চতুর্থ দিন লাঞ্চের আগেই ৩৩২ রানের বড় পরাজয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। যা পোর্ট এলিজাবেথে রানের হিসেবে সবচেয়ে বড় পরাজয়।

ম্যাচ হারছেন জেনে টাইগার ব্যাটাররা এ দিন প্রতিযোগিতায় নামেন কার চেয়ে কে বাজে শট খেলে আউট হতে পারেন। ডারবান টেস্টে পঞ্চম দিন ৪২ রানে ৭ উইকেট হারিয়েছিল বাংলাদেশ, আজ ৭ উইকেট গেছে ৫৩ রানে। তবে দুই ম্যাচেই হাতে ৭ উইকেট নিয়ে দিন শুরু করে অলআউট হতে হয়েছে প্রথম ঘন্টায়।

ডারবানের মতো পোর্ট এলিজাবেথেও দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশকে গুটিয়ে দেয় দুই স্পিনার। মহারাজ এবারও নেন ৭ উইকেট, সিমন হারমারের শিকার ৩ উইকেট। ৪১৩ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নেমে অলআউট হতে হয়েছে ৮০ রানে।

৩ উইকেটে ২৭ রান নিয়ে দিন শুরু করেছিল বাংলাদেশ। ৫ রানে অপরাজিত ছিলেন অধিনায়ক মুমিনুল।

আজ চতুর্থ দিন মুমিনুলের সাথে ক্রিজে আসেন মুশফিকুর রহিম। সিমন হারমারের করা প্রথম বলেই লেগ বাইতে আসে চার। তবে এরপর মুশফিক ছিলেন না স্বস্তিতে, পুরো ওভারেই বিপর্যস্ত হয়েছেন। যার ইতি ঘটে কেশব মহারাজের করা পরের ওভারেই, অফ স্টাম্পের বাইরের বলকে ইনসাইড আউট শট খেলার চেষ্টা, ফলাফল সংযোগে গড়মিল, স্লিপে ক্যাচ (৮ বলে ১ রান)।

মহারাজের পরের ওভারে ফিরেছেন মুমিনুলও (২৫ বলে ৫)। পুরো সিরিজে ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ এই বাঁহাতি, মুশফিকের চেয়েও যেন জঘন্যভাবে আউট হলেন সুইপ করতে গিয়ে।

৩৮ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর ক্রিজে এসে ইয়াসির আলি রাব্বি  দেখালেন বাজে শটের চূড়ান্ত নজির। সিমন হারমারকে স্লগ সুইপ খেলতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দেন কোনো রান না করেই।

এক পাশ আগলে রেখে লিটন দাস কেবল কিছু দৃষ্টিনন্দন শটই উপহার দিতে পেরেছেন। তিনিও বেশি দূর যেতে পারেননি। মহারাজকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে হয়েছেন স্টাম্পড (৩৩ বলে ২৭)। আর তাতে মহারাজের নামের পাশে সিরিজে দ্বিতীয়বারের মতো ইনিংসে পাঁচ উইকেট।

পরে নেন আরও দুই উইকেট, শেষ ব্যাটার তাইজুলকে ফিরিয়ে কফিনে শেষ পেরেক ঠুকেন হারমার। ৮০ রানে গুটিয়ে গেলো মুমিনুল হকের দল। ১২ ওভারে ৪০ রান খরচায় ৭ উইকেট মহারাজের, ১১.৩ ওভারে ৩৪ রান খরচায় ৩ উইকেট হারমারের।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করা দক্ষিণ আফ্রিকা পায় ৪৫৩ রানের সংগ্রহ। জবাবে বাংলাদেশ গুটিয়ে গেছে মাত্র ২১৭ রানে। ফলো অনে পড়লেও তা করায়নি প্রোটিয়ারা, দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেটে ১৭৬ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে। ফলে ৪১৩ রানের লক্ষ্য ঠিক হয়েছিল বাংলাদেশের জন্য।

তা তাড়া করতে নেমেই তৃতীয় দিন মাত্র ৯.১ ওভার ব্যাট করে ২৭ রান তুলতে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে সফরকারীরা।

২-০ ব্যবধানে সিরিজ নিজেদের করে বাংলাদেশকে ধবল ধোলাইয়ে লজ্জা দিল দক্ষিণ আফ্রিকা। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে এই নিয়ে ৮ টেস্ট খেলে কপালে জোটেনি অন্তত ড্রও।

সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ

দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংসে ৪৫৩/১০ (১৩৬.২), এলগার ৭০, এরউই ২৪, পিটারসেন ৬৪, বাভুমা ৬৭, রিকেলটন ৪২, ভেরেনে ২২, মুলডার ৩৩, মহারাজ ৮৪, হারমার ২৯, উইলিয়ামস ১৩, অলিভিয়ার ০*; খালেদ ২৯-৬-১০০-৩, মিরাজ ২৬.২-৪-৮৫-১, তাইজুল ৫০-১০-১৩৫-৬

বাংলাদেশ ১ম ইনিংসে ২১৭/১০ (৭৪.২), তামিম ৪৭, জয় ০, শান্ত ৩৩, মুমিনুল ৬, মুশফিক ৫১, লিটন ১১, ইয়াসির ৪৬, মিরাজ ১১, তাইজুল ৫, খালেদ ০*, এবাদত ০; অলিভিয়ার ১৫-৪-৩৯-২, হারমার ১০.২-১-৩৯-৩, মহারাজ ২৪-৬-৫৭-২, মুলডার ১৩-৭-২৫-৩

দক্ষিণ আফ্রিকা ২য় ইনিংসে ১৭৬/৬ (৩.৯.৫ ওভারে ইনিংস ঘোষণা), এরউই ৪১, এলগার ২৬, পিটারসেন ১৪, বাভুমা ৩০, রিকেলটন ১২, ভেরেনে ৩৯*, মুলডার ৬; খালেদ ১০-০-৩৮-১, তাইজুল ১৫-২-৬৭-৩, মিরাজ ৯.৫-৩-৩৪-২

বাংলাদেশ ২য় ইনিংসে ৮০/১০ (২৩.৩), তামিম ১৩, জয় ০, শান্ত ৭, মুমিনুল ৫, মুশফিক ১, লিটন ২৭, রাব্বি ০, মিরাজ ২০, তাইজুল ০, খালেদ ০, এবাদত ০*; মহারাজ ১২-৩-৪০-৭, হারমার ১১.৩-১-৩৪-৩

ফলাফলঃ দক্ষিণ আফ্রিকা ৩৩২ রানে ম্যাচে জয়ী, ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জয়ী

ম্যাচ ও সিরিজ সেরাঃ কেশব মহারাজ (দক্ষিণ আফ্রিকা)।

৯৭ প্রতিবেদক

Read Previous

৮০ তেই অলআউট বাংলাদেশ

Read Next

মার্চের ‘প্লেয়ার অব দ্য মান্থ’ হলেন বাবর আজম ও রেচেল হেইন্স

Total
0
Share