

প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার ৪৫৩ রানের জবাবে ব্যাট করা বাংলাদেশ যখন ফলো অনের শঙ্কায় তখন আশার আলো হয়ে ক্রিজে ছিলেন মুশফিকুর রহিম। তবে শুরু থেকেই সুইপ, রিভার্স সুইপের মতো ঝুকিপূর্ণ শট খেলা এই ব্যাটার ফিফটি হাঁকিয়ে আউট হন রিভার্স সুইপ করতে গিয়েই। অথচ তার আগ পর্যন্ত মনে হচ্ছিল সহজেই বাংলাদেশ ফলো অন এড়াতে পারে।
মুশফিকের ভুলে বাংলাদেশ খুব বেশি দূর যেতে পারেনি। ফলো অনে পড়লেও তা করায়নি দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে তাতেও খুব একটা সুবিধাজনক অবস্থায় নেই বাংলাদেশ। অপেক্ষার প্রহর গুনছে বড় হারের। অসময়ে মুশফিকের অমন শটকে অপ্রত্যাশিত বলছেন টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন।
আগেরদিন মুশফিক যখন ক্রিজে আসেন তখন বাংলাদেশের নেই ৩ উইকেট, তার ক্রিজে আসার পর ফিরে যান আরও দুই ব্যাটার। ১২২ রানে ৫ উইকেট হারানো বাংলাদেশ দিন শেষ করেছিল ৫ উইকেটে ১৩৯ রান নিয়ে। যেখানে ৩০ রানে মুশফিক ও ৮ রানে ইয়াসির আলি রাব্বি অপরাজিত ছিলেন।
আজ (১০ এপ্রিল) দুজনের ব্যাটে প্রথম সেশনটা ভালোই কাটাচ্ছিল বাংলাদেশ। তবে ৪৬ রান করে দলীয় ১৯২ রানে আউট হন ইয়াসির। যেখান থেকে দলকে টেনে নেওয়ার পুরো দায়িত্ব তখন মুশফিকের কাঁধে, অন্তত ফলো অন এড়ানোর জন্য খুব বেশি রান তখন প্রয়োজন ছিল না।
অফ স্পিনার সিমন হারমারের করা ইনিংসের ৬৯তম ওভারের প্রথম বলে আম্পায়ার্স কলে বেঁচে যান। পরের বলে চার মেরে ফিফটি ছুঁয়েছেন। ফলো অন এড়াতে দলের প্রয়োজন মাত্র ৪৩, লাঞ্চের বাকি ১ ওভার। ফিফটির পরের বলেই রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে হয়েছেন বোল্ড।
তার বিদায়ের পর ৭ উইকেটে ২১০ রান নিয়ে লাঞ্চে যায় বাংলাদেশ। লাঞ্চের পর দলীয় সংগ্রহে যোগ হয় মাত্র ৭ রান, ৪.১ ওভারেই হারাতে হয় বাকি ৩ উইকেট। পুরো ইনিংসে বেশ কয়েকবার সুইপ খেলে আগেরদিনই প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিলেন মুশফিক। সংবাদ সম্মেলনে ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্স অবশ্য মুশফিকের শক্তির জায়গা বলে সুইপ খেলতে উতসাহী করেছেন।
অতি উৎসাহে হোক আর নিজের ভিন্ন কোনো ভাবনায় হোক যেভাবে, যেসময়ে মুশফিক সুইপ খেলে আউট হয়েছেন সেটিকে অপরাধ বলা যায় অনায়েসেই। ফলো অনের লজ্জায় পড়লেও তা করায়নি প্রোটিয়ারা। কিন্তু নিজেরা সে লজ্জা অনুভব করছেন বলে জানান টিম ডিরেক্টর সুজন।
তৃতীয় দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে মুশফিকের অমন শটের ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, ‘মুশফিকের আউট অবশ্যই প্রত্যাশিত না। লাঞ্চের কয়েক মিনিট বাকি ছিল। এমন অবস্থায় এই শট আমরা চাই না, আর ৪৩ টা রান বাকি ছিল ফলোঅন এড়ানোর। যদিও ওরা আমাদের ফলোঅন করায়নি। কিন্তু মান সম্মানের তো একটা ব্যাপার।’
‘খুবই অপ্রত্যাশিত যে ওই সময় ওরকম একটা শট খেলবে কেউ। ওর মতো এত অভিজ্ঞ খেলোয়াড়, ওর কাছ থেকে তো অবশ্যই আমরা আশা করব না। ব্যাখ্যাটা কি আমি আসলে বলতে পারব না। সে ভালো জানে। সত্যি কথা বলতে দুর্ভাগ্যজনক।’
‘ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টিতে আমরা জানি রান করতে হয়। সেখানে ঠিকাছে (রিভার্স সুইপ)। টেস্টে যখন পরিস্থিতি দাবি করে টিকে থাকার সেখানে এরকম শট। উত্তরটা সেই দিতে পারবে কেন এরকম শট। তবে আমরা এটা আশা করিনি।’
উল্লেখ্য, দক্ষিণ আফ্রিকা ২৩৬ রানে এগিয়ে থেকেও ফলো অন না করিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাত করে। তাতে ইনিংশ ঘোষণার আগে যোগ করে ৬ উইকেটে ১৭৬। সব মিলিয়ে ৪১৩ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় টাইগারদের জন্য। যেখানে তৃতীয় দিন শেষ বিকেলে ৯.১ ওভার ব্যাট করেই ২৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ।