

ডারবান টেস্টে ২২০ রানের ব্যবধানে হার, দ্বিতীয় ইনিংসে ৫৩ রানে অলআউট। সবকিছু পেছনে ফেলে বাংলাদেশ দল বর্তমানে আছে পোর্ট এলিজাবেথে, অপেক্ষা ৮ এপ্রিল থেকে শুরু হতে যাওয়া দ্বিতীয় টেস্টের। কিন্তু ডারবান টেস্ট ঘিরে তৈরি হওয়া বিতর্ক অদৃশ্য ছায়া হয়ে ঘুরছে বাংলাদেশ শিবিরে। কোচদের পরামর্শ না মেনে টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়া ইস্যুতে বেশ জল ঘোলা হচ্ছে। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলছেন দলে কোচের কথা না শোনা কয়েকজন ক্রিকেটার আছে।
ডারবানের কিংসমিডের উইকেট সব সময় অধিনায়কদের স্বাগত জানিয়ে আসছে টস জিতে ব্যাটিং করতে। কারণ দক্ষিণ আফ্রিকান প্রচলিত পেস বান্ধব উইকেট থেকে কিছুটা আলাদা এখানকার উইকেট। তৃতীয় ও চতুর্থ দিনে উপমহাদেশের কন্ডিশনের মতোই টার্ন পেতে শুরু করে স্পিনাররা।
এসব জেনেই বাংলাদেশের দক্ষিণ আফ্রিকা প্রধান কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো ও নবনিযুক্ত পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ড টিম মিটিংয়ে পরামর্শ দেন টস জিতে আগে ব্যাট করতে। কিন্তু টস জিতেও মুমিনুল হক নিলেন ফিল্ডিং যা অবাক করেছে সবাইকে, যার ফল হিসেবে শেষ দুই দিনে মাত্র ১৯ ওভার স্পিন খেলেই অলআউট হতে হয়েছে দ্বিতীয় ইনিংসে।
গুঞ্জন আছে টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়ার সিদ্ধান্ত মুমিনুলের একার ছিল না। দলে থাকা সিনিয়র ক্রিকেটাররাই কোচদের যদিও সংবাদ সম্মেলন ও ম্যাচ শেষে দক্ষিণ আফ্রিকায় উপস্থিত সাংবাদিকদের মুমিনুল জানিয়েছেন সব সিদ্ধান্তের দায় ভার তিনি একাই নিচ্ছেন।
ক্রিকেট ওয়েবসাইট ক্রিকবাজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিইসবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘তাদের সাথে সামনাসামনি না বসে আসলে বলা কঠিন। আমি জানি দুই কোচই (ডমিঙ্গো ও ডোনাল্ড) উইকেট সম্পর্কে ধারণা দিয়ে আগে ব্যাট করার পরামর্শ দিয়েছেন কারণ শেষদিকে ব্যাট করা কঠিন, স্পিন ধরার সম্ভাবনা থাকে।’
‘ওখানে খালেদ মাহমুদ সুজন (টিম ডিরেক্টর) ও জালাল (জালাল ইউনুস, ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান) ভাই ছিল, তো আমি আর কি বলতে পারি? নিশ্চিতভাবে তারা তাদের নিজেদের কন্ডিশন অন্য অনেকের চাইতে ভালো জানার কথা। যদি আমরা এই সমস্যা (কোচদের কথায় গুরুত্ব না দেওয়া) থেকে বের হতে না পারি তবে ভবিষ্যতে আরও সমস্যায় পড়বো।’
‘যখনই আমি কোচদের সাথে কথা বলি তখন খেলোয়াড়দের বলা কথার সাথে একটা বড় পার্থক্য খুঁজে পাই। আমি মনে করি আমাদের সবারই বসা উচিৎ কিন্তু আমি যেটা জানলাম ড্রেসিং রুমে পরিবেশ আগের চেয়ে উন্নতি হচ্ছে, তবে এ ক্ষেত্রে (ডারবান টেস্টে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত) কি হচ্ছে তা আমি ঠিক বলতে পারছিনা।’
এদিকে দলের ব্যর্থতায় কোচ ডমিঙ্গোকে যেভাবে দায় চাপানো হয় তা মোটেই পছন্দ না বিসিবি বসের। তার মতে দলের বেশিরিভাগ ক্রিকেটারই ডোমিঙ্গোকে পছন্দ করে কিন্তু কথা শুনতে চায় না এমন কয়েকজনই তার বিপক্ষে যায়।
পাপন বলেন ‘আমার মনে হয় যেকোনো খারাপ পারফরম্যান্সের পর আমরা শুধু শুধু ডোমিঙ্গোকে বলির পাঠা বানানোর চেষ্টা করি। সব ক্রিকেটাররা কি তার কথা শোনে? আমি জানতে চাই, ক্রিকেটাররা কি সত্যিই শোনে তারা (কোচরা) কী বলতে চায়?’
‘যেসব ক্রিকেটাররা ডোমিঙ্গোর কথা শোনে তারা ঠিকই উন্নতি করছে। আমি লিখে দিতে পারি, যদি ১৫ জন ক্রিকেটারকে ডাকি, অন্তত ১১ জন বলবে ডোমিঙ্গো দুর্দান্ত কোচ। দুই-তিনজন হয়তো আছে, যারা ভিন্ন কথা বলবে এবং তারাই কোচের কথা শোনে না।’
‘যারা কোচের কথা শোনে না, তাদেরকে জিজ্ঞেস করে লাভ কী? আমাকে তাদের কথা শুনতে হবে যারা কোচের সঙ্গে কাজ করছে। যখন তারা ফিরবে তখন কোচের সামনে সবার সঙ্গে বসে সবকিছু সমাধান করব।’