

ডারবান টেস্টের চতুর্থ দিন শেষে বাংলাদেশ যে জায়গায় দাঁড়িয়ে সেখান থেকে হারই সম্ভাব্য ফল। তবে ক্রিকেট গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা, অন্তত ক্রিকেটার, টিম ম্যানেজমেন্ট হারার আগে হেরে যেতে চায় না। টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন বাস্তবতা জেনেই জয়ের সুযোগ দেখেন। আর সে ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণা প্রথম ইনিংসে মাহমুদুল হাসান জয়ের দুর্দান্ত সেই ইনিংস।
প্রথম ইনিংসে ৬৯ রানে পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশ। আজ চতুর্থ দিন প্রথম সেশনে প্রোটিয়াদের ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিল বাংলাদেশ বোধহয় আর ম্যাচে ফিরতে পারবে না। যেখানে দৃষ্টিকটু আম্পায়ারিং আরও বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু টাইগার বোলাররা লাঞ্চের পর দুর্দান্ত কামব্যাক করেন। আর তাতেই ১ উইকেটে ১১৬ রান থেকে ২০৪ রানে গুটিয়ে যায় স্বাগতিকরা।
ফলে বাংলাদেশের জন্য জয়ের লক্ষ্য ঠিক হয় ২৭৪। যা টেস্টের চতুর্থ ইনিংস বিবেচনায় খুব সহজ নয়। তবুও হাতে প্রায় ৪ সেশন থাকায় আশাবাদী হওয়াই যায়। কিন্তু চতুর্থ দিন শেষ বিকেলে মাত্র ৬ ওভার ব্যাটিং করতেই ১১ রান তুলতে ৩ উইকেট হারিয়ে বসে টাইগাররা। কেশব মহারাজ, সিমন হারমারের স্পিন ঘূর্ণিতে প্রথম ইনিংসের নায়ক জয় সহ ফিরে গেছেন অধিনায়ক মুমিনুল হক ও সাদমান ইসলাম।
শেষদিনে জিততে হলে করতে হবে আরও ২৬৩ রান, হাতে উইকেট ৭ টি। উইকেটে যেভাবে স্পিন ধরছে তাতে আশাবাদী হওয়া যায় খুব কমই। কিন্তু টিম ডিরেক্টর সুজনের দৃঢ় বিশ্বাস অপরাজিত দুই ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম সহ বেঞ্চে থাকা লিটন দাস, ইয়াসির আলি রাব্বি, মেহেদী হাসান মিরাজরা করতে পারেন অসাধ্য সাধন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘জানি কঠিন। কাল জিততে হলে ২৬৩ রান করতে হবে। কিন্তু ড্র করতে হলে পুরো ৯০ ওভার ব্যাট করতে হবে। আমি মনে করি সারাদিন যদি আমরা ব্যাট করে অবশ্যই ম্যাচ জেতার চান্স থাকবে। প্রথম কথা হচ্ছে কাল সকালে কেমনভাবে শুরু করি। এখনো বেঞ্চে ভালো দুজন খেলোয়াড় আছে।’
‘মুশফিক-শান্ত উইকেটে। এরপরে লিটন ও ইয়াসির আছে। এখনো আমাদের চান্স আছে। আমি জানি কন্ডিশন কঠিন, বল টার্ন করছে, নিচু হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করব। এখনো আমরা জেতার আশা ছাড়ছি না।’
ইতিহাস গড়ে প্রোটিয়া বধের পথে সুজন অনুপ্রেরণা খুঁজে পান প্রথম ইনিংসে জয়ের খেলা ১৩৭ রানের ইনিংস থেকে। ক্যারিয়ারের মাত্র তৃতীয় টেস্ট খেলতে নেমে তরুণ এই ব্যাটার যেভাবে ইনিংসটা সাজিয়েছেন তা বাকিদের জন্য হতে পারে আত্মবিশ্বাসের টোটকা।
‘আমার মনে হয় জয়ের প্রথম ইনিংসের ব্যাটিং পুরো দলের জন্যই অনুপ্রেরণার ব্যাপার। একটা ছেলে নতুন এসে এরকম ব্যাট করেছে। মুশফিক আমাদের সবচেয়ে সিনিয়র, সবচেয়ে অভিজ্ঞ তার থেকে আমাদের প্রত্যাশা অবশ্যই বেশি থাকবে। শান্ত আছে উইকেটে। যেটা বলছিলাম লিটন দাস, রাব্বি আছে।’
‘মিরাজেরও একশো আছে, টেস্ট ম্যাচে একশো আছে। সুতরাং আমরা আশাবাদী এখনো যদি ধৈর্য্য নিয়ে ব্যাট করতে পারি, সময় নিয়ে ব্যাট করি তাহলে এই ম্যাচে আমাদের জেতাও সম্ভব। এখান থেকে ড্র করার চান্সটা কম। হয় আমরা জিতব না হয় হারব।’