

বয়স মাত্র ২১, দুই বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়েছেন অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে বিশ্বকাপ খেলতে। সেবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেমিফাইনালে শতক হাঁকিয়ে দলকে তোলেন ফাইনালে, পরের গল্পটা সবার জানা, শিরোপা জিতে ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশ। এবার জাতীয় দলের জার্সিতে দক্ষিণ আফ্রিকা জয় করলেন মাহমুদুল হাসান জয়। ডারবান টেস্টে রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরিতে দলে স্বস্তি ফেরালেন।
ম্যাচ শেষে যা উৎসর্গ করলেন পুরো দলকে, বাদ যায়নি সাপোর্ট স্টাফের দুই গুরুত্বপূর্ণ সদস্য থ্রোয়ার রমজান ও বুলবুল আহমেদ। সফল হতে ম্যাজিক নয় কাজে দিয়েছে নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে জানা, এমনটাই বলছেন জয়।
ডারবান টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংসে ৩৬৭ রানের জবাবে বাংলাদেশ থামে ২৯৮ রানে। ৯৪ রানে ৪ উইকেট হারানো বাংলাদেশকে এতো দূর নিয়ে যান মাত্র তৃতীয় টেস্ট খেলতে নামা জয়।
ওপেনিংয়ে নেমে ৭ ঘন্টার বেশি সময় ক্রিজে ছিলেন, ৩২৬ বল মোকাবেলা করেছেন, আউট হয়েছেন শেষ ব্যাটার হিসেবে। ততক্ষণে নামের পাশে ১৩৭ রান, হয়ে গেছে রেকর্ডও। তার ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিটি যে রূপ নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কোনো বাংলাদেশী ব্যাটারের প্রথম শতক।
তৃতীয় দিন খেলা শেষে উপস্থিত বাংলাদেশী সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন জয়। দক্ষিণ আফ্রিকার মতো বিরুদ্ধ কন্ডিশনে যুব দলের পর জাতীয় দলের হয়েও সফল হওয়ার পেছনে ম্যাজিকটা কি? এমন প্রশ্নে তার সোজা সাপ্টা উত্তর কোনো ম্যাজিক নয় বরং জাতীয় দলে নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে অবগত বলেই চিন্তা করেছেন তা পালনের।
জয় বলেন, ‘আসলে এটা ম্যাজিকের কিছু না, এটা আমার দায়িত্ব। যেহেতু জাতীয় দলে খেলছি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সবারই একটা দায়িত্ব থাকে। তো আমারও দায়িত্ব দল যেটা আমার কাছ থেকে আশা করে, লম্বা সময় ব্যাট করবো সেটা করার চেষ্টা করেছি।’
‘আমার পরিলল্পনাই ছিল আমি লম্বা সময় উইকেটে থাকবো। এটা আমার দায়িত্ব,আমার দল চায় যে আমি যেন ভালো কিছু করি। সেঞ্চুরি করা, বড় রান করা এটা আমার দায়িত্ব। ইন শা আল্লাহ এটা আমি টেনে নিয়ে যেতে চেষ্টা করবো।’
এমন দারুণ কীর্তি জয় কাকে উৎসর্গ করতে চান জানতে চাইলে জয় বলেন বিশেষ কেউ নন বরং গোটা টিমকেই দিলেন কৃতিত্ব, করলেন উৎসর্গ।
‘আমার দলের সবাই আমাকে অনেক সমর্থন দিয়েছে। দুইজন সাপোর্টিং স্টাফ আছে রমজান ভাই বুলবুল ভাই, উনারা দুইজন খুব ভালো থ্রো করে। তারপর আমাদের ম্যানেজার, কোচ সবাই সমর্থন করেছে।’
উল্লেখ্য, রমজান ও বুলবুল বেশ লম্বা সময় ধরেই জাতীয় দলের থ্রোয়ার হিসেবে কাজ করছেন। যাদের থ্রো করা বলের গতি দেখে রীতিমত অবাক হতে হয়। রমজানতো ঘন্টায় প্রায় ১৫০ কিলোমিটার বেগেও বল ছুঁড়তে পারেন।
রমজানকে দলের ক্রিকেটাররা ইংলিশ পেসার জফরা আর্চার বলেও ডাকেন। এইতো দিন কয়েক আগেও নেটে বল ছোঁড়ার সময় ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্স ভিডিও করে তাদের সামনে আনেন। নিজেও বেশ প্রশংসা করেছেন রমজান-বুলবুলের।
সিডন্স পোস্ট করা সেই ভিডিওতে বলেন, ‘মুশফিককে দারুণ থ্রো (বুলবুলের), খুবই ভালো বাউন্স। ভালো সামলেছে মুশফিকও। আরেকজনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিই, ও রমজান। সম্ভবত সবচেয়ে দ্রুতগতির বল থ্রোয়ার। যে অনায়াসে ১৫০ কিলোমিটার গতিতে বল ছুড়তে পারে।’