

দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ইতিহাস গড়া সেঞ্চুরি মাহমুদুল হাসান জয়ের ব্যাটে। ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্স বলছেন বাংলাদেশে এসেই যে কজন ক্রিকেটারকে আলাদা মনে ধরেছে জয় তাদেরই একজন।
গত ফেব্রুয়ারিতে দুই বছরের চুক্তিতে বাংলাদেশের ব্যাটিং কোচ হিসেবে যোগ দেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধান কোচ জেমি সিডন্স। এই অস্ট্রেলিয়ান বলছেন জয়ে তিনি মুগ্ধ, জয় সম্পর্কে আভাস পেয়েছেন বাংলাদেশে এসে কাজ শুরু করেই।
গত বছর ডিসেম্বরে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে অভিষেক। অভিষেকে ঠিক নিজের চেনা রূপে ধরা দিতে পারেননি। দুই ইনিংসে আটকে ছিলেন ০ ও ৬ রানে। তবে চলতি বছর জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ড সফরে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে দেখান ঝলক।
বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয়ের ম্যাচে চোটে পড়ার আগে এক ইনিংসে ব্যাট করে খেলেন ৭৮ রানের ইনিংস। আর আজ তো দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেঞ্চুরিই। ম্যাচের পরিস্থিতি বিবেচনায় যাকে দুর্দান্ত তকমা দিতেই হবে।
নিজের প্রথম সেঞ্চুরিতে গড়েছেন ইতিহাসও। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এটাই যে কোনো বাংলাদেশীর প্রথম সেঞ্চুরি। শেষ ব্যাটার হিসেবে যখন আউট হন তখন নামের পাশে ৩২৬ বলে ১৩৭ রান। ততক্ষণে দলও খাদের কিনারা থেকে উঠে স্বস্তির সংগ্রহ পায়।
প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার ৩৬৭ রানের জবাবে বাংলাদেশ থামে ২৯৮ রানে। ৬৭ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে বিনা উইকেটে ৬ রান তুলে তৃতীয় দিন শেষ করে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৭৫ রানে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ।
দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে জয়ের ইনিংস নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ব্যাটিং কোচ সিডন্স জানান, ‘আমি এখানে মাত্র দুই মাস হলো এসেছি আর সে (জয়) ট্যালেন্ট, কাজের নৈতিকতা ও ধৈর্য বিবেচনায় যেসব ছেলে আমার নজরে এসেছে তাদের একজন। খেলায় তার নিবেদন স্পষ্ট। আমার মনে হয় সে কেবল তার দ্বিতীয় টেস্ট খেলছে, লোকে তার সম্পর্কে খুব একটা জানে না। যদি না আপনি বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেট অনুসরণ করেন।’
‘খুব ধৈর্যশীল ছিল। ম্যাচের পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলেছে। খুব বেশি কিছু চেষ্টা করেনি। আমরা সবাই তাঁর পারফরম্যান্সে গর্বিত। তাঁর পুরো ইনিংসটিই ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য বিশেষ কিছু। আমার মনে হয় না এরচেয়ে ভালো টেস্ট ইনিংস খুব বেশি আছে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের আছে।’
‘ম্যাচের পরিস্থিতি হয়তো তাঁর পক্ষে ছিল। বিশেষ করে ইনিংসের শুরুতে। স্পিনাররা ইনিংসের শুরুতে অনেক বেশি বল করেছে যখন আলো কম ছিল। তবে তাঁর ধৈর্যটা আমার চোখে পড়েছে। আমাদের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে এই ধৈর্যটা তেমন দেখা যায় না। সবসময়ই আলগা ব্যাটিং দেখা যায়। এই টেস্টে অবশ্য কেউই বাজে শট খেলে আউট হয়নি।’