
সর্বশেষ তিন মৌসুমে শিরোপা জেতা আবাহনী লিমিটেড এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে (ডিপিএল) ঠিক নিজেদের মতো শুরু করতে পারেনি। প্রথম তিন ম্যাচের দুইটিতে হেরে কিছুটা ব্যাকফুটেই ছিল, তবে টানা দুই জয়ে আবারও ছন্দ খুঁজে পেয়েছে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের দল। শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবকে আজ (৩০ মার্চ) হারিয়েছে ৩৪ রানে। বৃথা গেলো সিকান্দার রাজার দারুণ এক সেঞ্চুরি।
বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ইউল্যাব মাঠে আগে ব্যাট করা আবাহনী পেয়েছে ৫ উইকেটে ৩৩৩ রানের পুঁজি। যেখানে ৮৮ রানের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ঝড়ো ইনিংস অধিনায়ক মোসাদ্দেকের ব্যাটে। নাইম শেখের ৬০ রানের সাথে তৌহিদ হৃদয়ের ৪৫, শেষদিকে আফিফের ৩৫ রানের ক্যামিও।
জবাবে সিকান্দার রাজার ১০৭ রানের ইনিংসের সাথে অভিষেক মিত্রর ৮২ রানেও লক্ষ্য পৌঁছাতে পারেনি শাইনপুকুর। থেমেছে ৯ উইকেটে ২৯৯ রানে।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ভালো শুরুই পেয়েছে শাইনপুকুর, ৯ ওভার স্থায়ী উদ্বোধনী জুটিতে এসেছে ৫২ রান। রাকিন আহমেদ ২০ রান করে তানভীর ইসলামের বলে এলবিডব্লিউ হলেও আরেক ওপেনার অভিষেক মিত্র ছিলেন ছন্দে। মাঝে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনও (৪) ফেরেন তানভীরের শিকার হয়ে।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে সিকান্দার রাজাকে নিয়ে অভিষেকের ১৪৭ রানের জুটি। যে জুটিতে বড় লক্ষ্য তাড়ায় পথেই ছিল শাইনপুকুর। ১০২ বলে ১১ চারে ৮২ রান করে অভিষেককে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন আফিফ।
অভিষেক সেঞ্চুরি তুলে নিতে ব্যর্থ হলেও টুর্নামেন্টে দারুণ ধারাবাহিক সিকান্দার রাজা ঠিকই ছুঁয়েছেন তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং উপহার দিয়ে ৩৬ বলেই হাঁকান ফিফটি, পরের ফিফটিতে অবশ্য হয়েছেন মন্থর, লেগেছে ৫১ বল।
আরাফাত সানির করা ৩৮তম ওভারে সিঙ্গেল নিয়ে ৮৭ বলে ছুঁয়েছেন সেঞ্চুরি। সেঞ্চুরির পর অবশ্য বেশিক্ষণ টিকেননি, আফিফের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ৯৩ বলে ৮ চার ৭ ছক্কায় ১০৭ রানে সাঝঘরের পথ ধরেন।
তার বিদায়ের পর অবশ্য জয়ের জন্য যথেষ্ট লড়াই করতে পারেনি শাইনপুকুর। রান আউটে কাটা পড়েন সাজ্জাদুল হক রিপন (১৯)। শেষদিকে আলিস আল ইসলাম (২৪) ও তাহজিবুল ইসলাম (২৩*) কেবল হারের ব্যবধানই কমাতে পেরেছেন। আবাহনীর হয়ে সর্বোচ্চ দুইটি করে উইকেট আফিফ ও তানভীরের।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে আবাহনীর দুই ওপেনার নাইম শেখ ও জাকের আলি অনিক উদ্বোধনী জুটিতে যোগ করে ৭৩ রান। ৩৫ রান করে জাকের আউট হলে ভাঙে জুটি। সেখান থেকে ভারতীয় হনুমা বিহারীকে নিয়ে ৭২ রানের জুটি নাইমের।
নাইমের বিদায়ে ভাঙে এই জুটি, ততক্ষণে এই বাঁহাতি পেয়ে যান ফিফটির দেখা। মোহর শেখের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ৮১ বলে ৫ চার ১ ছক্কায় ৬০ রান করে। এরপর বেশিক্ষণ টিকেননি ৬২ বলে ৪৫ রান করা হনুমাও।
চতুর্থ উইকেট জুটিতে অধিনায়ক মোসাদ্দেক ও তৌহিদ হৃদয়ের ব্যাটে ১০১ রানের জুটি। দুজনেই রান তুলেছেন দ্রুত গতিতে। ৩২ বলে ৪৫ রান করে তৌহিদ রান আউটে ফিরলেও মোসাদ্দেক তুলে নেন ফিফটি। অবশ্য সেঞ্চুরির পথে হেঁটেও হয়েছেন ব্যর্থ, ৬৫ বলে ৮চার ৫ ছক্কায় আবাহনী অধিনায়ক খেলেন ৮৮ রানের ইনিংস।
শেষদিকে আফিফ হোসেনের ১১ বলে ৫ চার ২ ছক্কায় অপরাজিত ৩৫ রানে আবাহনী পায় ৫ উইকেটে ৩৩৩ রানের বড় সংগ্রহ। শাইনপুকুরের হয়ে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নাইমুর রহমান নয়নের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আবাহনী লিমিটেড ৩৩৩/৫ (৫০ ওভার) নাইম ৬০, জাকের ৩৫, হনুমা ৪৫, মোসাদ্দেক ৮৮, তৌহিদ ৪৫, আফিফ ৩৫*, শামীম ৭*; রিপন ৯-০-৪০-০, মোহর ১০-০-৭৭-১, সিকান্দার ১০-০-৬৮-০, মুরাদ ৭-০-৩৫-১, নয়ন ৮-০-৬১-২, আলিস ৬-০-৫০-০।
শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব: ২৯৯/৭ (৫০ ওভার) অভিষেক ৮২, রাকিন ২০, অঙ্কন ৪, সিকান্দার ১০৭, সাজ্জাদুল ১৯, তাহজিবুল ২৩*, আলিস ২৪, মোহর ৬, রিপন ৩*; সাকিব ৮-০-৫৮-১, আরাফাত ১০-০-৪৯-০, তানভীর ১০-০-৫০-২, স্বাধীন ৯-০-৬১-০, আফিফ ৯-০-৬১-২, মোসাদ্দেক ৪-০-১৮-১।
ফলাফল: আবাহনী ৩৪ রানে জয়ী
ম্যাচ সেরা: মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত (আবাহনী)।