

শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে হার দিয়ে চলতি বঙ্গবন্ধু ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ (ডিপিএল) ২০২১-২২ শুরু করা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব জয় পেয়েছে দ্বিতীয় ম্যাচেই। মোহামেডান স্পিনারদের সামনে নাজুক পরিস্থিতিতে পড়ে খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতি। খেলাঘরকে ১৪৮ রানে গুটিয়ে দেওয়া ম্যাচে মোহামেডান জিতেছে ৫ উইকেটে।
বল হাতে নাজমুল ইসলাম অপু, পাকিস্তানি তারকা অলরাউন্ডার মোহাম্মদ হাফিজ ও অধিনায়ক শুভাগত হোম দেখিয়েছেন ঝলক। তবে ব্যাট হাতে আরেক দফা ব্যর্থ হয়েছেন হাফিজ। যদিও সৌম্য সরকারের হার না মানা ৫৯ রানে ইনিংসে শুরুর বিপর্যয় কাটিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছাতে খুব একটা সমস্যা হয়নি মোহামেডানের।
ছোট লক্ষ্য তাড়ায় নেমেও শুরুটা খারাপ হয় মোহামেডানের। দলীয় ১৫ রানে টানা দুই বলে ওপেনার রনি তালুকদার ও ৩ নম্বরে নামা মোহাম্মদ হাফিজকে ফেরান পেসার হোসেন আলি। রনি ৪ রান করলেও আরেক দফা ব্যর্থ হওয়া হাফিজ ফিরেছেন গোল্ডেন ডাক (১ বলে ০) নিয়ে।
মাঝে আরেক ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমনও (৪০ বলে ৩৬) ক্রিজে থিতু হয়ে ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। ৪৭ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর সৌম্য সরকার ও যুব বিশ্বকাপ তারকা আরিফুল ইসলামের ৭২ রানের জুটি।
তাতেই দলের জয়ের পথটা মসৃণ হয়। তবে খেলাঘরের ভারতীয় অলরাউন্ডার অশোক মেনেরিয়ার বলে আরিফুল আউট হলে ভাঙে জুটি। ৬৯ বলে তার ব্যাটে ৩০ রান।
এরপর অধিনায়ক শুভাগত হোমকে নিয়ে প্রায় জয়ের বন্দরে পৌঁছেই গিয়েছিলেন সৌম্য সরকার। কিন্তু দলকে জয় থেকে মাত্র ৩ রান দূরে রেখে আউট হন শুভাগত (১৭ বলে ১৬)। তবে মোহামেডানের জয় নিশ্চিতে প্রভাব পড়েনি।
৫৯ বল ও ৫ উইকেট হাতে রেখে জয় পাওয়া ম্যাচে ফিফটি হাঁকিয়ে অপরাজিত ছিলেন সৌম্য সরকার। ৯২ বলে ফিফটি ছুঁয়ে শেষ পর্যন্ত নামের পাশে ২ চারে ৫৯ রান।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতির দুই ওপেনার পিনাক ঘোষ ও প্রীতম কুমার উদ্বোধনী জুটিতে ৩৬ রান যোগ করেন। তবে এরপর মোহামেডান স্পিনারদের ঘূর্ণি জালে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে খেলাঘর।
বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপু প্রীতমকে (৭) স্টাম্পড করে শুরুটা করেন। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে খেলাঘর। অপুর সাথে উইকেট শিকারে যোগ দেন হাফিজ ও শুভাগত।
স্রোতের বিপরীতে যা একটু থিতু হতে পেরেছেন নাদিফ চৌধুরী। তার ব্যাটে এসেছে সর্বোচ্চ ৩৩ রান। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৪ রান ৯ নম্বরে নামা ইফতেখার সাজ্জাদের ব্যাটে। এর বাইরে আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকানো অমিত হাসান করেছেন ২১ রান।
খেলাঘরকে ১৪৮ রানে আটকে দেওয়ার পথে অপুর শিকার ১০ ওভারে মাত্র ১৮ রান দিয়ে ৪ উইকেট। হাফিজের ২৪ রান খরচায় ৩ উইকেট, শুভাগত নেন ২৮ রানে ২ উইকেট। বাকি উইকেটটি যায় পেসার ইয়াসিন আরাফাত মিশুর পকেটে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতি ১৪৮/১০ (৪৯ ওভার), পিনাক ১৩, প্রীতম ৭, অমিত ২১, অশোক ২, সালমান ৮, নাদিফ ৩৩, ইলিয়াস ৩, মাসুম ৪, সাজ্জাদ ২৪, হোসেন ১২, রনি ৩*; হাসান ৯-০-৩২-০, ইয়াসিন ৪-০-১৮-০, শুভাগত ৯-১-২৮-২, অপু ১০-১-১৮-৪, হাফিজ ১০-১-২৪-৩, সোহরাওয়ার্দী ৭-০-২৩-০
মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ১৫০/৫ (৪০.১ ওভার), রনি ৪, ইমন ৩৬, হাফিজ ০, সৌম্য ৫৯*, আরিফুল ৩০, শুভাগত ১৬, জাহিদুজ্জামান ০*; হোসেন ২.৫-১-৮-২, সাজ্জাদ ১০-০-৪৬-০, সালমান ০.২-০-৪-০, রনি চৌধুরী ১০-১-৩১-০, মাসুম ৭-০-১৬-২, ইলিয়াস ৫.১-০-১৪-০, অশোক ৪.৫-০-৩০-১।
ফলাফলঃ মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ৫ উইকেট ও ৫৯ বল হাতে রেখে জয়ী
ম্যাচসেরাঃ নাজমুল ইসলাম অপু (মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব)।