

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে বাড়ছে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) দলগুলোর ব্যস্ততা। আজ (৭ মার্চ) সকালে এক প্রান্তে অনুশীলন করছিল প্রথম বিভাগ থেকে প্রিমিয়ার লিগে উন্নতি হওয়া সিটি ক্লাব অন্য প্রান্তে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স। মাঠের মাঝে একাই বোলিং অনুশীলন করতে দেখা যায় জাতীয় দলের অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে।
গত বছর অক্টোবরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মাঝপথে চোটের কারণে ছিটকে যান এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার। এরপর চোট পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় কেটে গেছে ৫ মাসের বেশি সময়। বিপিএলের আগে শুধু ব্যাটিং করার মতো অবস্থায় ছিলেন, তবে নির্বাচকরা ঝুঁকি না নিয়ে ড্রাফট তালিকায় তাকে রাখেননি।
এ নিয়ে কিছুটা হতাশায় ভোগা সাইফউদ্দিন সম্প্রতি চোট পুনর্বাসনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে ইংল্যান্ড থেকেও ঘুরে আসেন। এখন ব্যাটে-বলে সমানভাবে অনুশীলন করার মতো অবস্থায় আছেন। নিজ শহর ফেনীতে নেটে ঘাম ঝরিয়ে সাইফউদ্দিন ফিরেছেন ঢাকায়।
মূলত জাতীয় দলের বাইরে বলে নেট বোলার, ট্রেনার সহ ঢাকাতে বিভিন্ন সুবিধা পাচ্ছেন না এই অলরাউন্ডার। তাই ফেনীতেই কাজ করাকে শ্রেয় মনে করেছিলেন। সামনে ডিপিএল, সাথে জাতীয় দলের খেলাও নেই তাই ঢাকায় ফিরেছেন, যেন মাঠের সুবিধা নিয়ে অনুশীলন করতে পারেন।
তবে আবাহনীর এই ক্রিকেটার একাই একাডেমি মাঠে কাজ করছেন। একজন সহযোগী নিয়ে কিছু সময় বল করে গেছেন, ফিটনেস নিয়ে কাজ করছেন। বোলারের অভাবে করতে পারেননি ব্যাটিং অনুশীলন। যদিও দুই-একদিনের মাঝে আবাহনী দলগত অনুশীলনে নামলে এই সমস্যা দূর হবে সাইফউদ্দিনের।
গত ৫ মাসে কোনো ধরণের ক্রিকেটেই ম্যাচ খেলেননি। তাই জাতীয় দলে ফেরার পথটা কিছুটা কঠিনই। এদিকে জাতীয় দলের পেস বোলিং কোচ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকান কিংবদন্তি পেসার অ্যালান ডোনাল্ড।
সাইফউদ্দিন নিজে তার সাথে কাজ করতে কতটা মুখিয়ে আছেন? এমন প্রশ্ন করা হয় আজ অনুশীলন শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলে।
কিছুটা অভিমানের সুরেই এই অলরাউন্ডার জানালেন যেহেতু বর্তমানে জাতীয় দলের কেউ নন সেহেতু এসব নিয়ে ভাবছেন না। এমনকি কথার ছলে জানিয়ে দিলে পুনর্বাসনের পুরো সময়টা তার সাথে কোচিং স্টাফদের কেউ যোগাযোগ করেনি।
সাইফউদ্দিন বলেন, ‘আমি এখন জাতীয় দলে নেই, তাই জাতীয় দল নিয়ে ভাবনাও নেই। যখন ঢুকব তখন হয়ত চিন্তাভাবনা করব। গত সাড়ে ৫ মাস মাঠের বাইরে ছিলাম। জাতীয় দলের কোচিং ম্যানেজমেন্ট কেউই আমার সাথে যোগাযোগ করেনি।’
‘তো আমি নিজ থেকে আসলে কী বলব? যদি দল মনে করে আমার প্রয়োজন, তখন আমি জাতীয় দল নিয়ে কথা বলব। এখন আবাহনীতে আছি, মনোযোগ এখানেই।’
তবে ব্যস্ততার বাস্তবতাও তুলে ধরেন এই অলরাউন্ডার, ‘সত্যি বলতে সবাই-ই তো ব্যস্ত। কেউ বাংলাদেশ টাইগার্স, কেউ জাতীয় দলে, কেউ অনূর্ধ্ব-১৯ দলে। ফেনীতে থাকার কারণ হচ্ছে ওখানে আমি সবসময় নেট বোলার পাচ্ছি, যেখানে যাচ্ছি সবকিছু আগে থেকে প্রস্তুত। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল সাপোর্ট স্টাফ।’
‘সেটা এখানে না থাকলে আমি একা একা কী প্র্যাকটিস করব? বোলিং না হয় একা একা করতে পারব, ব্যাটিং তো করতে পারব না। ফিটনেসের ক্ষেত্রে একা দৌড়াতে পারব, অন্য কিছু তো করতে পারব না। সব কিছু এরকমই। জাতীয় দলে খেলা ছিল, বায়োবাবলের একটা বিষয় ছিল।’
‘হয়ত এই জায়গা ব্যবহার করতে পারতাম না। আসলে একদম ভোরে আসতে হত। সব কিছু চিন্তা করে আসলে করা হয়নি। এখন যেহেতু আফগানিস্তান সিরিজ শেষ, মাঠ খোলা।’
১৫ মার্চ থেকে শুরু হতে যাওয়া ডিপিএলের এবারের আসরের শুরু থেকেই খেলতে পারবেন সাইফউদ্দিন। এই টুর্নামেন্ট খেলেই জাতীয় দলে ফিরবেন এমন লক্ষ্য স্থির না করলেও এগোতে চান ম্যাচ ধরে ধরে।
এ নিয়ে তার ভাষ্য, ‘আপাতত লক্ষ্য প্রিমিয়ার লিগে ভালো খেলা। এখানে খেলে জাতীয় দলে যেতে হবে এমন কিছু ভাবিনি। যা হওয়ার হবে। ম্যাচ বাই ম্যাচ চিন্তা করতে চাই। ডিপিএলের পরপর আয়ারল্যান্ড সফর ছিল, ওটা এখন স্থগিত হয়ে গেছে।’