হেরাথের বিপক্ষে চ্যালেঞ্জ জিতে আনন্দে মাতলেন এবাদত

হেরাথের বিপক্ষে চ্যালেঞ্জ জিতে আনন্দে মাতলেন এবাদত
Vinkmag ad

অনুশীলনে ক্রিকেটারদের চ্যালেঞ্জ দেওয়া নেওয়া নতুন কিছু নয়। বাংলাদেশের অনুশীলনেও ইদানিং এটি নিয়মিত ঘটনা। মূলত ম্যাচে নির্দিষ্ট পরিস্তিতিতে সফল হতেই এমন কিছু। আজ (২৭ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথের সাথে এমন এক চ্যালেঞ্জ জিতেছেন পেসার এবাদত হোসেন।

নাহ, বোলিং দিয়ে নয় ব্যাটসম্যান হিসেবেই শ্রীলঙ্কান কিংবদন্তীর সাথে জিতেছেন। এতে এবাদত তো বটেই শিষ্যের বিজয়ে উচ্ছ্বসিত হেরাথও।

বাংলাদেশের টেল এন্ডাররা দলের প্রয়োজনে সেট ব্যাটারকে সহায়তা করতে পারেন খুব কমই। তাদের মাঝে এবাদত যেন আরও নিরীহ, তবে নিজের এই প্রতিবন্ধকতা কাটাতে তার আগ্রহ নজর কাড়ার মতো।

এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশের জার্সিতে ১২ টেস্ট খেলা এবাদতের ব্যাটিং পরিসংখ্যান দেখলে তার নাজুকতা আরও স্পষ্ট হবে। ১৮ ইনিংসে ব্যাট করে আউট হয়েছেন ৯ বার যেখানে ৫ বারই ফিরেছেন খালি হাতে। বাকি ৪ ইনিংসে সর্বোচ্চ রান ৪। নট আউট থাকা ৯ ইনিংসেও খুলতে পারেননি রানের খাতা। ক্যারিয়ারে মাত্র একবারই (১৩ বল) দুই অংকের বল খেলেছেন।

টাইগারদের সাবেক ব্যাটিং কোচ নেইল ম্যাকেঞ্জির সাথেও এ নিয়ে প্রায় কাজ করতেন। এবার নতুন ব্যাটিং কোচ সিডন্সকে পেয়ে যেনো তার আবদার বেড়ে গেলো আরও। সিডন্সের কাছ থেকে প্রতি অনুশীলনে অন্তত ১০ মিনিট সময় বাজেটেও পেয়েছেন। সিডন্সও কথা রাখছেন, প্রতিদিনই এবাদতকে দিচ্ছেন বাড়তি সময়।

গতকাল (২৬ ফেব্রুয়ারি) এবাদতকে নিয়ে অনুশীলনের সময় তার উন্নতিতে বেশ প্রশংসাও করেছেন সিডন্স। শিষ্যকে অনুপ্রাণিত করতে একটি শটে তো বলেই দিলেন শটটা লিটন দাসের শটের মতো হয়েছে।

আজ (২৭ ফেব্রুয়ারি) আফগানিস্তানের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডের অনুশীলনেও ব্যাটসম্যানদের পর সুযোগ আসে এবাদতের। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের দক্ষিণ পশ্চিম পাশের নেটে তাকে বল করছিলেন হেরাথ।

এবাদতের ব্যাটিং ঠিকঠাক হচ্ছে বলে কাছে এসে ইতিবাচক কথা বার্তা বললেন। এরপরই বললেন, ‘চল আমরা একটা চ্যালেঞ্জ খেলি।’ সাথে সাথেই রাজি হয়ে এবাদতও বললেন ‘হয়ে যাক’।

চ্যালেঞ্জ ঠিক হল ১২ বলে ১০ রানে, হেরাথ ফিল্ডার কোথায় কোথায় থাকবে সেটিও দেখিয়ে দিলেন। হেরাথের সাথে বল ছুঁড়েছেন একজন নেট বোলারও। প্রথম ২ বলে সিঙ্গেল, পরের বলে লফটেড শটে উড়িয়ে নিলেন অনেক দূর। যেটাকে ছক্কা হয়েছে বলে তার দাবি, মেনে নিলেন হেরাথও।

ফলে শেষ ৯ বলে সমীকরণ মাত্র ২। পরের ৩ বলে রান আসবে এমন ফাঁকা জায়াগায় বল নিতে পারেননি এবাদত। ৮ম বলে লং অনের দিকে ঠেলে দিয়ে ইশারা করলেন ১ রানের। এ নিয়ে হেরাথের সাথে খানিক তর্ক, পরে অবশ্য হেরাথ মেনে নিলেন ১ রান হয়েছে।

চ্যালেঞ্জ জিততে এবাদতের প্রয়োজন ৪ বলে ১ রান। ৯ম বলে ক্রিজের অফ সাইড ফেলেই প্রান্ত বদল করে খুশিতে লাফান এবাদত। কিন্তু হেরাথ জানান কোনভাবেই এটা রান হয়না, ফিরে যাও ব্যাট কর। এবাদতের ভাষায়, ‘কাম অন ম্যান, ইজি রান।’

শুরুতে মানতে না চাইলেও শেষ পর্যন্ত বাধ্য ছেলের মতো ব্যাট করতে যান এবাদত। নেট বোলারের করা পরের বলে পরাস্ত হন এবাদত। তার আগে জেনে নেন ফিল্ডার কোথায় কোথায় আছে, অফ পরিপূর্ণ সাথে ছিল মিড উইকেটে।

হেরাথের করা ১১ নম্বর বলটা অফেই খেললেন এবাদত, আগেই বলে দেওয়া এসব জায়গায় ফিল্ডার আছে তাই হলো না কোনো রান। সমীকরণ ১ বলে ১ রান।

শেষ বলে তাকে পরাস্ত করতে হেরাথ কিছুক্ষণ সময় নিয়ে টিপস দেন নেট বোলারকে। এবাদতের ভাষায়, ‘কত পরিকল্পনা করতেছে!’ তবে অনেক পরিকল্পনার বলটি কাট করে চ্যালেঞ্জ জয়ের আনন্দে মাতেন এবাদত। মুখে বার কয়েকে উচ্চারণ করেন, ইয়েস ইয়েস।’

চট্টগ্রাম থেকে, ক্রিকেট৯৭ প্রতিবেদক

Read Previous

কুঁচকির চোটে অস্ট্রেলিয়া সিরিজ শেষ ফাহিম আশরাফের

Read Next

মিরাজের কণ্ঠে লিটনের সুর

Total
0
Share