

বাংলাদেশ ক্রিকেটের পঞ্চ পান্ডব খ্যাত ক্রিকেটারদের ছাড়াই এবারের বিপিএল মিশন শুরু করেছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। তবে তাদের ছাড়াই দেশী-বিদেশী ক্রিকেটারদের নিয়েই বাজিমাত করলো ফ্র্যাঞ্চাইজিটি, ঘরে তুলল তৃতীয় শিরোপা। এবার শিরোপা জিতে দলটির মালিক নাফিসা কামাল বলছেন অন্তত এখন পান্ডব ইস্যু থেকে বের হওয়া যায়। এমনকি তাদের ডিকশনারিতে পান্ডব বলতে কিছু নেই বলেও জানান।
ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে ১ রানের জয়ে গতকাল (১৮ ফেব্রুয়ারি) শিরোপা নিশ্চিতের পর সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন নাফিসা। সেখানেই পঞ্চ পান্ডব ছাড়া চ্যাম্পিয়ন হওয়া প্রসঙ্গ উঠে আসে। এবারের মতো ভবিষ্যতেও পান্ডববিহীন দল হবে কীনা এমন প্রশ্নও ছোঁড়া হয়।
জবাবে নাফিসা বলেন, ‘এটা তো বলা যায় না (ভবিষ্যতে পান্ডব থাকবে কীনা দলে)। পান্ডব কি? আমাদের ডিকশনারিতে পান্ডবই নাই। এখনো পান্ডব নিয়ে কথা বলেন আপনারা? আজকের পরও?’
‘নির্দেশনাটা তো আমরা আগে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল থেকে পাবো যে তারা এক বছরের জন্য করবে নাকি ৬ বছরের হবে, রিটেনশন থাকবে কীনা। এগুলো তো আমাদের উপর নির্ভর করছে না, উনাদের গাইডলাইন পেয়ে কাজ করবো।’
সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মাশরাফি বিন মর্তুজাকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের পঞ্চ পান্ডব বলে ডাকা হয়। এর আগে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে খেলেছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা ও তামিম ইকবাল। অধিনায়ক হিসেবে কুমিল্লাকে প্রথম শিরোপার স্বাদও দেন মাশরাফি। অধিনায়ক না হলেও কুমিল্লার দ্বিতীয় শিরোপা জেতা দলে ছিলেন তামিম, ফাইনালে খেলেছেন বিধ্বংসী এক ইনিংস।
তবে এবার পঞ্চ পান্ডবের কাউকেই দলে টানেনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ড্রাফট শেষে সেটির ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক নাফিসা কামাল।
তিনি জানান, ‘আমার মতে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ভবিষ্যত অনেক লম্বা সময়ের, ১০ বছর ২০ বছর কিংবা অনির্দিষ্টকাল। কিন্তু এই সবগুলো খেলোয়াড়ের একটা মেয়াদকাল আছে। আমরা মনে করছি এখন আমাদের সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলা উচিৎ।’
‘নতুনদের নিয়ে কাজ করা নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন। দলকে টেনে নিতে হবে তো, দল তো এক জায়গায় আটকে থাকবে না। আপনারা যাদের কথা বলেন তারা থাকলে তো আমরা এক জায়গাতেই আটকে থাকবো। এটা ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে সম্ভব যে সবসময় দলকে টেনে নেওয়া, জাতীয় দলে হয়তো সম্ভব না।’
কুমিল্লার হয়ে তরুণ ও সম্ভাবনায় ক্রিকেটারদেরই দেখা গিয়েছে এবার। যেখানে মাহমুদুল হাসান জয়, পারভেজ হোসেন ইমন, শহিদুল ইসলাম, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, তানভীর ইসলামরা অন্যতম। সাথে লিটন দাস, ইমরুল কায়েস, আবু হায়দার রনি মতো কার্যকরী ক্রিকেটার তো ছিলই। নেতৃত্বও দিয়েছেন আগেরবার শিরোপা জেতানো অধিনায়ক ইমরুল।
দল শিরোপা জেতার আগেতো বটেই টুর্নামেন্ট শুরুর আগে ড্রাফটের দিনই সংবাদ মাধ্যমকে নাফিসা জানান তারা দেশের ক্রিকেটের স্বার্থেই তরুণদের নিয়ে এগোতে চান, সম্ভাবনাময় ক্রিকেটারদের সুযোগ দিতে চান।
তিনি বলেন, ‘আমরা এটা শুরু করেছি কারণ আপনারাই অভিযোগ করেন বাংলাদেশ দলের পাইপলাইন নাই। সুতরাং ঘরোয়া ক্রিকেটে যদি আমরা একটা প্ল্যাটফর্ম করে দিতে না পারি তাহলে ওদের জন্য সমস্যা হয়।’
‘আমাদের মনে হয় ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক হিসেবে যতটুকু করা, নতুন মুখ নিয়ে আসা, নেতৃত্ব দেওয়ার যাতে তারা আন্তর্জাতিক সার্কিটে মানিয়ে নিতে পারে। প্লেয়ার্স ড্রাফট দেখলেই বোঝা যায় আমরা ক্রিকেটের স্বার্থে, বাংলাদেশ ক্রিকেটের স্বার্থেই কাজ করছি।’