
শীতের রাতে বৃষ্টি নেমেছে মুস্তাফিজের জন্য উপহার নিয়ে। বৃষ্টি ভেজা মুহূর্ত শেষে ‘দ্য ফিজ’ দেখালেন তাঁর ম্যাজিক। মিরপুরে ফের শুরু হয় বৃষ্টি; উইকেটের বৃষ্টি! চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের ব্যাটিং লাইনকে থমকে দিয়ে একে একে মুস্তাফিজ ঝুলিতে নেন পাঁচ উইকেট। এরপর ইমরুল-লিটনের অনবদ্য পার্টনারশিপে ১৩৯ রানের টার্গেট সহজেই টপকায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। চট্টগ্রামকে গুঁড়িয়ে দিয়ে ইমরুল কায়েসের দল পেল ৯ উইকেটের জয়।
ইমরুল-লিটনের দারুণ ব্যাটিংয়ে পাত্তাই পেল না চট্টগ্রাম। ১৩৯ রানের লক্ষ্যকে ছেলেখেলা বানিয়ে চট্টগ্রামকে রীতিমত গুঁড়িয়ে দিল। বিপরীতে এবারের আসরে টানা তিন হার দেখল চট্টগ্রাম। আর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের সঙ্গে দু’বারের দেখায় সাগর পাড়ের দলটি হেরেছে দু’টিতেই।
দাপুটে বোলিং পারফর্ম্যান্সে ম্যাচ সেরার পুরষ্কার জিতলেন মুস্তাফিজুর রহমান।
মিরপুরে বিপিএলের ১৮তম ম্যাচে টস জিতে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে আগে ব্যাট করতে পাঠায় কুমিল্লার অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। অধিনায়কের সিদ্ধান্তের সঠিক ব্যবহার করলেন নাহিদুল ইসলাম। শুরুর ওভারেই চ্যাডউইক ওয়ালটনকে ফিরতে হয় শূন্য হাতে। এরপর অবশ্য চট্টগ্রাম ঘুরে দাঁড়ায় উইল জ্যাকস ও আফিফ হোসেন ধ্রুবর জুটিতে। তবে ব্যক্তিগত ২৭ রানে আফিফ বোল্ড হলে ভাঙে ৬১ রানের জুটি।
১২.৫ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে চট্টগ্রামের রান যখন ১০৭ তখনই বৃষ্টির বাগড়া মিরপুর হোম অফ ক্রিকেটে। তবে খানিক পরই থেমেছে বৃষ্টি, উভয় দলের কমেছে ২টি করে ওভার। বৃষ্টি যেমন প্রকিতিকে সতেজ করে তুলেছে, ঠিক তেমনি বৃষ্টির শীতল বাতাসে নিজেকে উড়িয়েছেন মুস্তাফিজ। ফিজ ভেলকিতে চ্যালেঞ্জার্স হয়ে যায় ধ্বংসস্তূপ; ভেজা উইকেটে একে একে শিকার করে নেন পাঁচ উইকেট।
এদিন মুস্তাফিজের গল্পের শুরুটা শামীম হোসেনকে (২৬) বিদায় করে। ১৪তম ওভারের ৩য় বলে শামীম ও শেষ বলে ফিজ সাজঘরের পথ দেখান ফিফটি হাঁকানো উইল জ্যাকসকে (৫৭)। বেনি হাওয়েলকেও দেননি বড় ইনিংস খেলতে (৩)। নিজের এবং ইনিংসের শেষ ওভারে মুস্তাফিজ আরও দুই উইকেট তুলে নিয়ে পূর্ণ করেন টি-টোয়েন্টিতে তাঁর তৃতীয় ফাইফার।
৪ ওভারে ২৭ রান খরচ মুস্তাফিজ শিকার করেন পাঁচ উইকেট। ফলে নির্ধারিত ১৮ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স সংগ্রহ করতে পারে ১৩৮ রান।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দুই ওপেনারের ব্যাটে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স পায় উড়ন্ত শুরু। লিটন দাস ও অধিনায়ক ইমরুল কায়েসের উদ্বোধনী জুটি শুরুর ছয় ওভারে স্কোরবোর্ডে জমা করে ৪৬ রান।
মেহেদী হাসান মিরাজের করা ইনিংসের ১২তম ওভারের প্রথম বলেই লং অফ দিয়ে বল গ্যালারিতে পাঠিয়ে অর্ধশত রান পূর্ণ করেন ইমরুল কায়েস। টি-টোয়েন্টিতে এটি ইমরুলের ১৩তম ফিফটি। ১৫তম ওভারের শেষ বলে নাসুমকে ছয় হাঁকিয়ে ফিফটি পূর্ণ করেন লিটন দাস।
তবে দলকে ১০ উইকেটের জয় উপহার দিতে পারেননি ইমরুল, লিটন। জয়ের দ্বারপ্রান্তে এসে মৃত্যুঞ্জয়ের শিকার হয়ে লিটন প্যাভিলিয়নে ফেরেন ব্যক্তিগত ৫৩ রানে। ৩৭ বলে তাঁর এই ইনিংস সাজানো ৪ চার ও ৩ ছয়ে। শেষপর্যন্ত ইমরুল কায়েস ৮১ রানে অপরাজিত থেকে দলের জয় নিশ্চিত করেন। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ইমরুল মারেন ৫টি ছয় ও ৬টি চার।