

৪৫ ইনিংস পর টি-টোয়েন্টিতে ফিফটির দেখা পেলেন সাকিব আল হাসান। অধিনায়কোচিত ব্যাটিংয়ে সাকিব এগিয়ে নিয়ে যান ফরচুন বরিশালকে। তবে সাকিব প্যাভিলিয়নে ফিরতেই যেন থমকে যায় তাঁর দল। শেষ ১৭ রান সংগ্রহ করতে হারায় পাঁচ উইকেট। ১৪৯ রান পুঁজি নিয়েও বরিশাল ১৪ রানে জিতেছে সাকিব, মুজিবের বোলিং নৈপুণ্যে। ব্যাটে-বলে অনবদ্য সাকিব হয়েছেন ম্যাচ সেরা।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে বিপিএলের ১৬তম ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তবে শুরুর এভারেই শরিফুল ইসলামের শিকার হন ওপেনার মুনিম শাহরিয়ার (১)। এরপর ক্রিস গেইলের সঙ্গে ৪২ রানের জুটি গড়েন নাজমুল হোসেন শান্ত।
ভয়ংকর হয়ে ওঠা গেইলকে ফিরিয়ে চ্যালেঞ্জার্স শিবিরে স্বস্তি এনে দেন উইল জ্যাকস। ফেরার আগে ৩ ছয় ও ১ চারে ১৯ বলে ২৫ রান করেন গেইল। ধীরগতির ইনিংসটাও শান্ত বেশি দূর টানতে পারেননি। আফিফের বলে ক্যাচ তুলে বিদায় নেওয়ার আগে ২৯ বলে করেন ২৮ রান।
ঘরের দল চট্টগ্রামের ওপর ব্যাট হাতে চড়াও হয়ে ওঠেন সাকিব আল হাসান। তৌহিদ হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে দারুন সব স্ট্রোক খেলেন সাকিব। নাসুমের বলে টানা তিন ছয় হাঁকিয়ে ইনিংস নিয়ে যান ফিফটির পথে। ৩ ছয় ও ৩ চারের সাহায্যে ৩০ বলে ফিফটি হাঁকান সাকিব। মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর ওভারের তৃতীয় বলে উড়িয়ে মারতে যেয়ে আফিফের হাতে ক্যাচে পরিণত হন সাকিব।
১৬.৩তম ওভারে সাকিব যখন আউট হয়ে ফিরছিলেন তখন স্কোরবোর্ডে ৫ উইকেট হারিয়ে বরিশালের সংগ্রহ ১৩২। এখান থেকে বরিশাল অলআউট হয় ১৪৯ রানে। শেষ ১৭ রান তুলতে তাঁরা হারায় পাঁচ ব্যাটসম্যানকে। শরিফুলের দ্বিতীয় শিকার হন ৪ রান করা ডোয়াইন ব্রাভো।
মৃত্যুঞ্জয় যেন রীতিমতো ধ্বংসস্তূপ বানিয়ে দিল বরিশালের ব্যাটিং লাইনকে। ১৯তম ওভারে একে একে দখলে নেন তিন উইকেট। ইরফান শুক্কুর ও মুজিব উর রহমান ১টি করে রান করতে পারলেও নুরুল হাসান সোহান ফেরেন শূন্য হাতে। শেষপর্যন্ত ১৪৯ রানে থামে ফরচুন বরিশালের ইনিংস।
মাত্র ২ ওভার বল করে ১২ রান খরচায় মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর ঝুলিতে জমা পড়ে ৪ উইকেট। শরিফুল ইসলামের শিকার ২টি উইকেট। এছাড়া উইল জ্যাকস, বেনি হাওয়েল ও আফিফ হোসেন পেয়েছেন ১টি করে উইকেট।
১৫০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে চরম বিপাকে পড়ে যায় চট্টগ্রাম। ইনিংসের প্রথম ওভারেই মুজিব উর রহমান মেডেনসহ নিয়ে নেন উইল জ্যাকসের উইকেট। এরপর শুরু হয় আফিফ-শামীম জুটির প্রতিরোধ। ৬৯ রান আসে এই জুটিতে। ব্যক্তিগত ৩৯ রানে আফিফ সাকিবের বলে বোল্ড হলে ভাঙ্গে জুটি। পরের ওভারে নেই শামীম হোসেনও (২৯)।
নিজের দ্বিতীয় ওভারে ফের সাকিবের ভেলকি। কোন রান করার সুযোগই পাননি চ্যালেঞ্জার্সের অধিনায়ক নাইম হাসান; পড়লেন লেগ বিফোরের ফাঁদে। নিজের শেষ ওভারে এসে মুজিব পরপর দুই বলে নিলেন দুই উইকেট। বোল্ড করেন বেনি হাওয়েল ও আকবর আলিকে। দলীয় ৮১ রানে চট্টগ্রাম হারায় ৬ উইকেট।
এরপর চ্যাডউইক ওয়ালটকে বোল্ড করে সাকিব ঝুলিতে নেন নিজের তৃতীয় উইকেট। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ২৬ রান করা মেহেদী হাসান মিরাজকে বোল্ড করলেন ডোয়াইন ব্রাভো। মিরাজের এই ইনিংস সাজানো কেবল ১৩ বলে, ৩ চার ও ১ ছক্কায়।
বল হাতে সাকিব আল হাসান ও মুজিব উর রহমান যথাক্রমে ৩টি করে উইকেট পেয়েছেন। ৪ ওভারে ১ মেডেনসহ মাত্র ৯ রান খরচায় মুজিব দখলে নেন তিন উইকেট। আর সাকিব ৩ উইকেট ঝুলিতে নেন ২৩ রান খরচায়।