

মাঠের ক্রিকেটের চাইতে মাঠের বাইরের বিষয় নিয়েই গত দুইদিন আলোচনায় ছিলো চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। অধিনায়কত্ব পরিবর্তন ইস্যুতে মেহেদী হাসান মিরাজ ও টিম ম্যানেজমেন্টের অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগই হয়েছে খবরের শিরোনাম। যদিও দল ছেড়ে যেতে চাওয়া মিরাজকে পরে বুঝিয়ে শুনিয়ে দলের সাথে রাখতে সক্ষম ম্যানেজমেন্ট। তবে দলের অভ্যন্তরে বয়ে যাওয়া এই ঝড়ের প্রভাব পড়েছে মাঠের ক্রিকেটেও। আজ (৩১ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে হারতে হয়েছে ৫২ রানের বিশাল ব্যবধানে।
ফাফ ডু প্লেসিসের অপরাজিত ৮৩, ক্যামেরুন ডেলপোর্টের অপরাজিত ঝড়ো ফিফটি (৫১*) ও মাঠে নেমেই লিটন দাসের দারুণ এক ইনিংসে ৩ উইকেটে ১৮৩ রানের পুঁজি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের। জবাবে উইল জ্যাকসের ৬৯ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংসের পরও ১৩১ রানে অলআউট চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।
এই জয়ে টানা ৩ ম্যাচেই জয় পেলো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, আছে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে। অন্যদিকে ৬ ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের এটি তৃতীয় হার।
লক্ষ্য তাড়ায় নামা চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স শুরু থেকেই উইকেট হারাতে থাকে নিয়মিত বিরতিতে। টানা ৬ ম্যাচে সুযোগ পেয়ে ওপেনার কেনার লুইস (৪) এই নিয়ে পাঁচবারই ফিরেছেন দুই অঙ্ক ছোঁয়ার আগে। লুইসের পর আফিফ হোসেনও (৪) শিকার মুস্তাফিজুর রহমানের।
সাব্বির রহমান (৫), মেহেদী হাসান মিরাজ (১০), নাইম ইসলামদের (৮) হারিয়ে ৭২ রানেই নেই চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের ৬ উইকেট। স্রোতের বিপরীতে কেবল ওপেনার উইল জ্যাকসই রানের দেখা পান।
এক পাশ আগলে রাখা এই ইংলিশ ১৫তম ওভারে শহিদুল ইসলামকে হাঁকান টানা ৩ চার, আর তাতে ৩৭ বলেই তুলে নেন টানা দ্বিতীয় ফিফটি। তবে পরের ওভারেই ফিরেছেন তানভীর ইসলামের বলে বোল্ড হয়ে। সবমিলিয়ে নামের পাশে ৪২ বলে ৭ চার ৩ ছক্কায় ৬৯ রান।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৩ রান মৃতুঞ্জয় চৌধুরীর ব্যাটে। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স গুটিয়ে যায় ১৩১ রানে। বল হাতে আরও একবার দুর্দান্ত অফ স্পিনার নাহিদুল ইসলাম। ৪ ওভারে ১৭ রান খরচায় নেন ৩ উইকেট। ২ টি করে উইকেট নেন মুস্তাফিজুর রহমান। শহিদুল ইসলাম ও তানভীর ইসলাম।
এর আগে কুমিল্লা ভিক্তোরিয়ান্স ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়কে (১) ফেরান নাসুম আহমেদ। এরপরই শুরু লিটন দাসের নানন্দিন ব্যাটিং। নিউজিল্যান্ড সফরের ধকল কাটাতে প্রথম দুই ম্যাচে বিশ্রামে ছিলেন। আজ (৩১ জানুয়ারি) প্রথম খেলতে নেমেই দেখালেন ঝলক, হাতে থাকা প্রায় সব শটই খেলেছেন।
প্রথম ৩ ওভারে মাত্র ১৫ রান আসার পরেও লিটন দাস ও ফাফ ডু প্লেসিসের ব্যাটে পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ৫২ রান। চতুর্থ ওভারে লিটনের ব্যাটে একটি করে চার, ছক্কা।
আগের ম্যাচের হ্যাটট্রিক ম্যান মৃত্যুঞ্জয়কে পরের ওভারেই হাঁকান তিন চার, ছিলো নান্দনিক কাভার ড্রাইভ, অন ড্রাইভ ও পুল শট। লিটনের সাথে বাউন্ডারি হাঁকানোতে যোগ দেন ডু প্লেসিসও।
দুজনে মিলে জুটিতে যোগ করেন ৮০ রান। নাসুমের করা ১১তম ওভারে ইনসাইড আউট শট খেলতে গিয়ে লং অফে ক্যাচ দেন লিটন। ৩৪ বলে ৫ চার ১ ছক্কায় ৪৭ রানের ইনিংস সাজান। একই ওভারে ফিরতে পারতেন ডু প্লেসিসও, তবে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান এলবিডব্লিউর হাত থেকে।
তবে অধিনায়ক ইমরুল কায়েস ফেরেন দ্রুতই (১)। যদিও ৪০ বলে ফিফটি তুলে ঝড়ের শুরু ডু প্লেসিসের, সঙ্গী হিসেবে পান আরও আক্রমণাত্মক ক্যামেরুন ডেলপোর্টকে। শেষ ৫ ওভারে দুজনে মিলে যোগ করেন ৭৬ রান।
যেখানে শরিফুল ইসলামের করা ১৮ ও ২০তম ওভারেই আসে যথাক্রমে ১৫ ও ২৩ রান। মাঝে মৃত্যুঞ্জয়ের করা ১৯তম ওভারে ১৪, বেনি হাওয়েলের করা ১৭তম ওভারেও আসে ১৪ রান।
২২ বলে ফিফটি তুলে ২৩ বলে ৪ চার ৩ ছক্কায় ৫১ রানে অপরাজিত ছিলেন ডেলপোর্ট। ৫৫ বলে ৮ চার ৩ ছক্কায় ৮৩ রানে অপরাজিত ডু প্লেসিস।