

নতুন বলে অফ স্পিনে দলকে শুরুতেই ব্রেক থ্রু এনে দেওয়ার কাজটা নাহিদুল ইসলাম করছেন নিয়মিতই। তবে আজ (২৫ জানুয়ারি) ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে তো গড়লেন বিপিএল ইতিহাসে এক ইনিংসে যৌথভাবে তৃতীয় সর্বনিম্ন খরুচে বোলিং ফিগারের রেকর্ড। ৪ ওভারে ৫ রান খরচায় তার ৩ উইকেট শিকারের দিনে ফরচুন বরিশালকে ৬৩ রানের বড় ব্যবধানে হারালো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
টুর্নামেন্টে এটি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের টানা দ্বিতীয় জয়, যেখানে ফরচুন বরিশাল ৩ ম্যাচে এই নিয়ে হারলো ২ ম্যাচে। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ফাফ ডু প্লেসিসের আরেক দফা ব্যর্থ হওয়ার দিনে ব্যর্থ ফরচুন বরিশালের ক্রিস গেইলও।
টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে বড় সংগ্রহের আভাস দিয়েও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স থামে ৭ উইকেটে ১৫৮ রানে। টুর্নামেন্টে প্রথম খেলতে নেমেই সর্বোচ্চ ৩৫ বলে ৪৮ রান মাহমুদুল হাসান জয়ের ব্যাটে।
জবাবে নাহিদুলের সাথে তানভীর ইসলামে স্পিন ঘূর্ণি ও শহিদুল ইসলাম, করিম জানাতের পেস বোলিং তোপে ৯৫ রানেই অলআউট ফরচুন বরিশাল।
লক্ষ্য তাড়ায় নামা ফরচুন বরিশালকে শুরুতেই কুপোকাত নাহিদুলের। ইনিংসের প্রথম ওভারে মেইডেনসহ নেন সৈকত আলির (০) উইকেট। ইনিংসে তৃতীয় ওভারে ফেরান ফরচুন বরিশাল দলপতি সাকিব আল হাসানকে (১)।
২ ওভারের প্রথম স্পেলে ১ রান খরচায় নাহিদুলের শিকার ২ উইকেট। পরে ৮ম ওভারে আক্রমণে এসে দেন ১ রান। ১০ম ওভারে ৩ রান খরচায় শিকার মহাগুরুত্বপূর্ণ ক্রিস গেইলের (৮ বলে ৭ রান) উইকেট। ততক্ষণে ৪৫ রানে ৪ উইকেট নেই ফরচুন বরিশালের।
সেখান থেকে আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি সাকিবরা। স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে হারের ব্যবধান কমানোর চেষ্টা নাজমুল হোসেন শান্তর। শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হয়েছেন ৪৭ বলে ৩৬ রান করে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৯ রান এসেছে তৌহিদ হৃদয়ের ব্যাটে, ১৭ রান করেন উইকেট রক্ষক ব্যাটার নুরুল হাসান সোহান। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে নাহিদুলের ৩ উইকেট ছাড়াও ২ টি করে নেন শহিদুল, তানভীর ও করিম।
লিটন দাস এখনো দলের সাথে যোগ না দেওয়াতে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ওপেনিং জুটিতে আসে অদল বদল। ক্যামেরুন ডেলপোর্টের সাথে নামেন মাহমুদুল হাসান জয়। দুজনে মিলে ৩.২ ওভার স্থায়ী জুটিতে তোলেন ৩৩ রান।
নাইম হাসানের করা চতুর্থ ওভারও চার মেরে শুরু করেন ডেলপোর্ট। তবে পরের বলেই হন স্টাম্পড (১৩ বলে ১৯)। ওই ওভারেই চার মেরে রানের খাতা খোলেন ডু প্লেসিস। সাকিবের করা পাওয়ার প্লের শেষ ওভারেই অবশ্য ধরতে হয় সাঝঘরের পথ, থেমেছেন ১১ বলে ৪ রানে।
অধিনায়ক ইমরুল কায়েস ব্যক্তিগত ৯ রানে জীবন পেয়েও অবশ্য ইনিংস বড় করতে পারেননি, ফিরেছেন ১১ বলে ১৫ রান করে। মুমিনুল হককে নিয়ে পঞ্চম উইকেট জুটিতে জয় যোগ করেন ৪৪ রান।
জুটি ভাঙে ৩৫ বলে ৬ চার ১ ছক্কায় জয় ৪৮ রান করে ফিরলে। জ্যাক লিনটটের বলে শর্ট থার্ডম্যানে ক্যাচে পরিণত হওয়ার আগে ছিলেন বেশ সাবলীল।
মাঝে মুমিনুল ২৩ বলে ১৭ রানের ইনিংস খেলে রানকে কিছুটা গতিহীন করেন। ১৮তম ওভারে পরপর দুই বলে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন (৮) ও নাহিদুল ইসলামকে (০) ফিরিয়ে হ্যাটট্রিক সম্ভাবনা জাগান ডোয়াইন ব্রাভো।
তবে শেষদিকে করিম জানাতের ব্যাটে ১৫০ পার করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এই আফগান খেলেন ১৬ বলে ১ চার ৩ ছক্কায় অপরাজিত ২৯ রানের ক্যামিও।
৩০ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ব্রাভোই ফরচুন বরিশালের সেরা বোলার। ২৫ রান খরচায় সাকিবের শিকার ২ উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ১৫৮/৭ (২০), ডেলপোর্ট ১৯, জয় ৪৮, ফাফ ৬, কায়েস ১৫, মুমিনুল ১৭, করিম ২৯*, অঙ্কন ৮, নাহিদুল ০, শহিদুল ৫*; সাকিব ৪-০-২৫-২, নাইম ৩-০-৩১-১, লিনটট ৪-০-১৮-১, ব্রাভো ৪-০-৩০-৩
ফরচুন বরিশাল ৯৫/১০ (১৭.৩), সৈকত ০, শান্ত ৩৬, সাকিব ১, হৃদয় ১৯, গেইল ৭, নুরুল ১৭, ব্রাভো ০, জিয়া ০, লিনটট ৮, নাইম ০, তাইজুল ২*; নাহিদুল ৪-১-৫-৩, মুস্তাফিজ ২.৩-০-২২-১, শহিদুল ৩-০-২২-২, তানভীর ৪-০-১৯-২, করিম ৪-০-২৬-২
ফলাফলঃ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ৬৩ রানে জয়ী
ম্যাচসেরাঃ নাহিদুল ইসলাম (কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স)।