

করোনা শঙ্কা ছাড়াও নানা বিতর্ককে সঙ্গী করে আজ (২১ জানুয়ারি) পর্দা উঠেছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ৮ম আসরের। যথারীতি মিরপুরের রহস্যময় উইকেটে প্রথম ম্যাচ, হয়েছেও অনুমেয় লো-স্কোরিং ম্যাচ। টি-টোয়েন্টি বিরুদ্ধ নিরুত্তাপ ম্যাচে জয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করলো ফরচুন বরিশাল।
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ৪ উইকেটে হারালো সাকিব আল হাসানের ফরচুন বরিশাল। আগে ব্যাট করে চট্টগ্রাম করতে পেরেছে ৮ উইকেটে ১২৫ রান, যেখানে বেনি হাওয়েলের ২০ বলে ৪১ রানের ঝড়ো ইনিংসই যে একটু বিনোদন দিয়েছে দর্শকদের।
ছোট লক্ষ্যে ব্যাট করে ফরচুন বরিশালকেও ভুগতে হয়েছে, খেলা গড়িয়েছে ১৯তম ওভার পর্যন্ত, হারাতে হয় ৬ উইকেট। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৯ সৈকত আলির ব্যাটে, জিয়াউর রহমান ১২ বলে অপরাজিত ১৯ রানে জয়ের পথ করেছেন সহজ।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে শুরুতেই ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্তকে (১) হারায় ফরচুন বরিশাল। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজের বলে হয়েছেন বোল্ড। সৈকত আলির সাথে ৩ নম্বরে নামা সাকিব আল হাসানের জুটিও ২৫ রানের বেশি যায়নি। এ দফায়ও সাকিবকে বোল্ড করে জুটি ভাঙেন মিরাজ। ২৮ রানে ২ উইকেট হারায় ফরচুন বরিশাল।
সেখান থেকে সৈকত আলি ও তৌহিদ হৃদয়ের ৩৪ রানের জুটি। মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে তৌহিদও (১৭ বলে ১৬) ফিরে যান। তবে এক পাশ আগলে রাখা সৈকত আলি নতুন ব্যাটার ইরফান শুক্কুরকে নিয়ে জয়ের পথ মসৃণ করেন। শরিফুল ইসলামের করা ১৪ তম ওভারে শুক্কুরের ব্যাট থেকে আসে দারুণ এক ছক্কা।
তবে মিরাজের করা পরের ওভারেই ম্যাচের মোড় নিজেদের দিকে নেয় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। যেখানে ফরচুন বরিশাল হারায় ৩ উইকেট।
View this post on Instagram
ওভারের প্রথম বলে ছক্কা হাঁকান সৈকত আলি। দ্বিতীয় বলেই হয়েছেন আউট, ৩৫ বলে তার ব্যাটে ১ চার ২ ছক্কায় ৩৯ রান। পরের বলে শুক্কুরকেও (১৩ বলে ১৬) এলবডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন মিরাজ। যদিও তার উইকেট নিয়ে আছে বিতর্ক, খালি চোখে দেখে মনে হচ্ছিলো মিস করবে লেগ স্টাম্প।
ডিআরএস না থাকায় রভিউ নেওয়ার সুযোগও ছিলো না শুক্কুরের। ওভারের শেষ বলে রান আউটে কাঁটা পড়েন সালমান হোসেন (০)। ৯২ রানে ৬ উইকেট হারায় বরিশাল। বেনি হাওয়েলের করা ১৬তম ওভারে আসে মাত্র ৪ রান, শেষ ২৪ বলে বরিশালের প্রয়োজন পড়ে ৩০।
মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধের করা ১৭তম ওভারে জিয়াউর রহমান ২চার, ১ ছক্কা হাঁকালে আসে ১৮ রান। আর তাতেই কার্যত বরিশালের অনিশ্চয়তা কেটে যায়। শেষ পর্যন্ত ৮ বল হাতে রেখে আসে জয়, জিয়া ১২ বলে ১৯ ও ডোয়াইন ব্রাভো ১০ বলে ১২ রানে অপরাজিত ছিলেন। চট্টগ্রাম দলপতি মিরাজ ৪ ওভারে ১৬ রান খরচায় নেন সর্বোচ্চ ৪ উইকেট।
এর আগে নাইম হাসানের বিপক্ষে ছক্কা হাঁকিয়ে ইনিংসের শুরু করেছিলেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ওপেনার কেনার লুইস। তবে ১ বল বাদেই তাকে সাজঘরের পথ দেখান নাইম। তিনে নামা আফিফ হোসেন ধ্রুব করতে পারেননি ৬ রানের বেশি। আলঝারি জোসেফ তার নিজের করা ১ম বলেই ফেরান আফিফকে।
দুই বাউন্ডারিতে ভালো কিছুর আভাস দিচ্ছিলেন সাব্বির রহমান। তবে সাকিব আল হাসানের বলে লাইন মিস করে এলবিডব্লিউ হন তিনি, রান ঐ ৮ ই। ইংলিশ ওপেনার উইল জ্যাকস ১৬ রান করতে খেলে ফেলেন ২০ বল।
মেহেদী হাসান মিরাজ (৯), শামীম হোসেন (১৪) রা দলের রান বাড়াতে ভূমিকা রাখতে পারেননি। তবে আটে নেমে ম্যাচের গতিপথ পালটে দেন বেনি হাওয়েল। ২০ বলে ৩ টি করে চার ও ছক্কায় ৪১ রান করে থামেন হাওয়েল।
মূলত হাওয়েলের এই ঝড়েই ১২০ এর গন্ডি পার করতে পারে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। ৮ উইকেটে ১২৫ রানে আটকে যায় তাদের ইনিংস।
৩২ রান খরচে ৩ উইকেট নেন আলঝারি জোসেফ, ২৫ রান খরচে ১ উইকেট নেন নাইম হাসান। ১ টি করে উইকেট নেন সাকিব আল হাসান, জেক লিনটট ও ডোয়াইন ব্রাভো।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ১২৫/৮ (২০), লুইস ৬, জ্যাকস ১৬, আফিফ ৬, সাব্বির ৮, মিরাজ ৯, শামীম ১৪, নাইম ১৫, হাওয়েল ৪১, মুগ্ধ ৪*, শরিফুল ০*; নাইম ৪-০-২৫-২, সাকিব ৪-০-৯-১, জোসেফ ৪-০-৩২-৩, লিনটট ৪-০-১৮-১, ব্রাভো ৪-০-৩৯-১
ফরচুন বরিশাল ১২৬/৬ (১৮.৪), শান্ত ১, সৈকত ৩৯, সাকিব ১৩, হৃদয় ১৬, শুক্কুর ১৬, ব্রাভো ১২*, সালমান ০, জিয়াউর ১৯*; মিরাজ ৪-০-১৬-৪, মুগ্ধ ৩-০-২৫-১
ফলাফলঃ ফরচুন বরিশাল ৪ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরাঃ মেহেদী হাসান মিরাজ (চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স)।