

স্পিন নির্ভরতা থেকে বের হয়ে সাম্প্রতিক সময়ে টেস্ট ক্রিকেটে পেসারদের প্রাধান্য দিতে শুরু করেছে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠের স্পিন উইকেটেও পেসাররা পেয়েছে সুযোগ। খুব ভালো কোনো পারফরম্যান্স দেখা না গেলেও টানা খেলার সুফল অবশেষে পাওয়া গেলো। নিউজিল্যান্ডে ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ে পেসাররাই রেখেছেন অনন্য ভূমিকা। বিশেষ করে সমালোচিত হওয়া পেসার এবাদত হোসেনই ভড়কে দেন কিউই ব্যাটারদের। দেশের অন্যতম সফল সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা বলছেন এমন টানা সুযোগে পেসাররা হতে পারেন জয়ের বড় অস্ত্র।
কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো দায়িত্ব নেওয়ার পরই ঘরের মাঠে পেসার খেলানোর ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিয়ে আসছেন। মূলত বিদেশের মাটিতে পেসারদের প্রস্তুত করতেই টানা খেলানোর পন্থা অবলম্বন করেন এই প্রোটিয়া। সাথে পেস বোলিং কোচ ওটিস গিবসন দায়িত্ব নিয়ে পেসারদের উন্নতিতে রাখেন বেশ বড় অবদান।
২০১৯ সালে ভারতের সফরের প্রথম টেস্টে ২ পেসার, দ্বিতীয় টেস্টে ৩ পেসার খেলায় বাংলাদেশ। ২০২০ সালে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষেও খেলে ৩ পেসার। সেই যে শুরু হয়েছে, এরপর অন্তত ২ জন পেসার নিয়েই মাঠে নেমেছে টাইগাররা। ব্যর্থতার ভীড়েও পেসারদের দেওয়া হয়েছে টানা সুযোগ। আর এতেই ফল পেতে শুরু করে বাংলাদেশ।
নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ইতিহাস গড়ে জেতা টেস্টে বাংলাদেশের পেসাররা নিয়েছেন ১৩ উইকেট। যেখানে টানা সুযোগ পেয়েও ভালো কিছু করতে না পারা এবাদত দিয়েছেন নেতৃত্ব, নিয়েছেন ৭ উইকেট। বিশেষ করে দ্বিতীয় ইনিংসে তার ৬ উইকেট শিকারেই কিউইরা গুটিয়ে যায় ১৬৯ রানে। অথচ ক্যারিয়ারের প্রথম ১০ টেস্টে তার উইকেট সাকূল্যে ১০ টি, গড়ও ছিলো ভুলে যাওয়ার মতো।
পেসারদের এমন সুযোগ পাওয়া দলের জন্য কতটা উপকার হয়েছে তা জানাতে গিয়ে আজ মিরপুরে সাংবাদিকদের মাশরাফি বলেন, ‘টেস্টে একটা জায়গা ছিল যেখানে পেসাররা তেমন প্রভাব রাখতে পারেনি। টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডেতে পেসাররা কখনও এত খারাপ করেনি। টেস্টে কাজ করার সুযোগ আছে। কাজ করলে ফলাফলও আসছে। তাসকিনের দিকে তাকান, এবাদত ভালো করছে। এবাদত এমনি এমনি ভালো করেনি।’
‘ও লম্বা সময় ধরে খেলছে এবং ওকে টেস্টে বিবেচনা করা হয়েছে। তাকে নিশ্চিত করা হয়েছে তুমি খেলছ। সে জানে এটা আমার ভবিষ্যত, এখানে সেবা দিতে হবে। একটা খেলোয়াড়ের সেট হতেও সময় লাগে। রাহিও অনেক দিন ধরে সেবা দিচ্ছে। যখন জায়গাটা পায় তখন ফলাফল আসে। গত বিপিএল থেকে এবাদত দারুণ বোলিং করছে। টেস্টে হয়ত অনেক সময় উইকেট পক্ষে ছিল না।’
‘বাংলাদেশে খেলা হলে স্পিনাররাই বেশি বোলিং করে। তবে মিরপুরের উইকেটে পেসারদের ভালো করার সুযোগ থাকে। কতটুকু আস্থা আপনার আছে এটাও প্রভাব রাখে। আপনার আস্থা না থাকলে পেসারের আস্থাও কমে যায় নিজের ওপর। এই টেস্ট অনেক প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে। শুধু খেলোয়াড় না, বাইরের অনেকেও চাইলে অনেক প্রশ্নের উত্তর মেলাতে পারবে। এখানেই সব লেসন আছে।’