

মাউন্ট মঙ্গানুইতে দুপুর গড়ালেও বাংলাদেশে তখনো কাক ডাকা ভোর। যে সময় বাংলাদেশ পেলো টেস্ট ক্রিকেটে এখনো পর্যন্ত সেরা জয়টি। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ইতিহাস গড়া জয়টি এসেছে দেশের ক্রিকেট যখন বাজে সময় পার করছে ঠিক তখনই। অধিনায়ক মুমিনুল হক বলছেন এই জয় টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের উন্নতির লক্ষ্মণ।
২০১৯ সালে সাকিব আল হাসানের নিষেধাজ্ঞার কারণে হুট করে টেস্ট অধিনায়ক বনে যান মুমিনুল হক। টেস্ট ক্রিকেটে পারফরম্যান্স বদলের আশার বাণী শোনালেও গত ২ বছরে সেটা মাঠের ক্রিকেটে দেখাতে পারেননি মুমিনুল।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক এই জয়ে আগে ১১ ম্যাচে মাত্র ২ জয়, দুইটিই আবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। সাফল্য বলতে শ্রীলঙ্কা সফরে একটি টেস্ট ড্র। ঘরের মাঠে পাকিস্তান সিরিজে হোয়াইট ওয়াশড হয়ে মুমিনুল স্বীকার কর নিয়েছেন যা চেয়েছেন তা করতে পারেননি।
তবে প্রক্রিয়ায় যে উন্নতি হয়েছে সেটিও উল্লেখ করেন। মুমিনুল অবশ্য মেনে নিয়েছেন যেহেতু ফলাফল শূন্য সেহেতু প্রক্রিয়ার উন্নতিকে তিনি সামনে আনতে চান না। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৮ উইকেটে জয়ের পর মুমিনুল হয়তো সেই প্রক্রিয়ায় উন্নতিকেই সামনে আনতে চাইলেন।
নিউজিল্যান্ডের মাটিতে নিউজিল্যান্ডকে হারানো দেশের টেস্ট ক্রিকেট উন্নতির লক্ষ্মণ বলছেন টাইগার দলপতি।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের টেস্ট ক্রিকেট উন্নতির একটা লক্ষ্মণ হতে পারে, আমার কাছে মনে হয়। পাকিস্তান সিরিজ হারের পর দলের প্রতিটি খেলোয়াড়ের মাঝেই দেখেছি টেস্ট ক্রিকেটে উন্নতির তাড়না। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং তিন বিভাগেই, বিশেষ করে ফিল্ডিংয়ে সবাই কিন্তু একজন আরেকজনকে সমর্থন করেছে।’
‘যখন কেউ খারাপ করছে তখনো সমর্থন করছে, কেউ ক্যাচ মিস করলেও সমর্থন করেছে। সেই সাথে আমাদের কোচিং স্টাফ, সুজন ভাই (টিম ডিরেক্টর) সবাই অনেক সমর্থন দিয়েছে। আমাদের অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করেছে।’
দলে একমাত্র অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ছিলেন মুশফিকুর রহিম। ব্যাট হাতে খুব একটা প্রভাব রাখতে না পারলেও সাবেক অধিনায়ক হিসেবে নিজের অভিজ্ঞতার ভান্ডার খুলে দিয়েছেন। মুমিনুলকে মাঠে সাহায্য করেছেন দারুণভাবে।
মাঠে মুশফিকের সরব উপস্থিতির কথা তুলে ধরে মুমিনুল যোগ করেন, ‘আর মুশফিক ভাই ছিলো সবচেয়ে অভিজ্ঞ, উনি অনেক বেশি জড়িয়ে ছিলো। ব্যক্তিগতভাবে উনি আমার সাথে অনেক কথা বলেছেন। উনি অনেক বেশি আবেগপ্রবণ। একজন তরুণ অধিনায়ক হিসেবে উনি অনেক বেশি সাহায্য করেছে। আমরা সবাই যখন ভালো খেলি তখন ফল আমাদের পক্ষে আসে। এটাই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’
জয়ের পর নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে মুমিনুল বলেন, ‘আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না কি অনুভব করছি। এটা এক কথায় অবিশ্বাস্য। সত্যি কথা বলতে, আমি গতকাল রাতে ঘুমোতে পারিনি আজ কি হবে সেটা ভেবে। এই টেস্টটা জেতা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমাদের ঐতিহ্যের জন্য এই টেস্টটা জেতা দরকার ছিল।’
‘গত দুই বছর আমরা ভালো টেস্ট ক্রিকেট খেলিনি। দলের সবাই টেস্ট খেলায় উন্নতি করতে চাচ্ছিল। এটা দলীয় পারফরম্যান্সের ফলাফল। আমরা তিন বিভাগেই এ খুবই ভালো করেছি। বিশেষ করে বোলাররা, প্রথম ইনিংসে ওরা উইকেটের আদ্রতা কাজে লাগিয়েছে। দ্বিতীয় ইনিংসেও ভালো করেছে। ব্যাটসম্যানরাও খুবই ভালো খেলেছে।’