

জয়ের জন্য শেষ দিন ৯ উইকেট হাতে নিয়ে প্রয়োজন ছিলো মাত্র ১২২ রান। আগেরদিন অপরাজিত থাকা ২ ব্যাটার মোহাম্মদ মিঠুন ও সৌম্য সরকার আজ (২২ ডিসেম্বর) সকালেই তুলে নেন ফিফটি। কিন্তু ৪৩ রানের ব্যবধানে ৯ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) দ্বিতীয় রাউন্ডে এমন ম্যাচই ১০ রানে হেরে বসে ওয়ালটন সেন্ট্রাল জোন। ব্যাট হাতে দলকে পথ দেখানো ইসলামী ব্যাংক ইস্ট জোনের নাইম হাসানের স্পিন ভেল্কতিতেই কুপোকাত শুভাগত হোমের ওয়ালটন সেন্ট্রাল জোন।
ওয়ালটন সেন্ট্রাল জোনের জয়ের জন্য লক্ষ্য ছিলো ১৯৯ রান। আগেরদিন ১ উইকেট হারিয়ে ৮৭ রান তুলে ফেলে দলটি। মিঠুন ৪২ ও সৌম্য অপরাজিত ছিলেন ৩৩ রানে।
আজ দিনের শুরুতেই ফিফটির দেখা পেয়ে যান সৌম্য। সৌম্যের পর ফিফটি তুলেন মিঠুনও। দুজনে মিলে আগেরদিন অবিচ্ছেদ্য থাকা ৬২ রানের জুটিকে রূপ দেন শতরানের জুটিতে। থামেননি সেখানেও, দুজনের ব্যাটে সহজ জয়ের পথেই ছুটছিলো ওয়ালটন সেন্ট্রাল জোন।
কিন্তু সৌম্য সরকারকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে ১২০ রানের জুটি ভাঙেন নাইম হাসান। আর সেখান থেকেই তার দাপুটে বোলিং শুরু। ১৩৯ বলে ১১ চার ১ ছক্কায় ৭৩ রান সৌম্যের ব্যাটে।
সৌম্যের বিদায়ের পরেও জয়ের জন্য পথটা কঠিন ছিলো না। হাতে ৮ উইকেট নিয়ে প্রয়োজন ছিলো মাত্র ৫৪ রান। কিন্তু ১ রানের ব্যবধানে আরেক সেট ব্যাটার মিঠুন মিঠুনকেও ফেরান নাইম। ৯৮ বলে মিঠুনের ব্যাটে ৬০ রান।
নাইমের সাথে আরেক স্পিনার তানভীর ইসলাম উইকেট শিকারে যোগ দিলে অসহায় হয়ে পড়ে ওয়ালটন সেন্ট্রাল জোন। ওয়ালটনের ধ্বস থামেনি, মাঝে কেবল সালমান হোসেন ইমন (১৮) কিছুটা প্রতিরোধের চেষ্টা করেছেন।
৮ উইকেটে ১৭২ রান নিয়ে লাঞ্চে যায় ওয়ালটন সেন্ট্রাল জোন। জয়ের জন্য তখনো প্রয়োজন ছিলো ২৭ রান। ১৬ রানে অপরাজিত ছিলেন সালমান, কোনো রান না করে তার আরেক অপরাজিত সঙ্গী রবিউল হক। ততক্ষণে ৫ উইকেট নাইমের পকেটে।
লাঞ্চের পর ৪.১ ওভারের বেশি সময় লাগেনি সালমান-রবিউলকে ফেরাতে। সালমানকে ফিরিয়ে নিজের ৬ষ্ঠ উইকেট শিকার নাইমের, রবিউলকে (১৪) ফেরান তানভীর। ১০ রানে হারতে হয় ওয়ালটন সেন্ট্রাল জোনকে। ওয়ালটন সেন্ট্রাল জোনকে ১৮৮ রানে অলআউট করার পথে ২০ ওভারে ৮ মেইডেনসহ ৪৮ রান খরচায় ৬ উইকেট নাইমের।
এর আগে প্রথম ইনিংসে ইসলামী ব্যাংক ইস্ট জোন তোলে ২৪৫ রান। জবাবে ওয়ালটন সেন্ট্রাল জোন থামে ২২৭ রানে। ১৮ রানের লিড নিয়ে ইসলামী ব্যাংক ইস্ট জোন করতে পারেনি ১৮০ রানের বেশি। তাতেই ওয়ালটন সেন্ট্রাল জোনের জন্য লক্ষ্য দাঁড়িয়েছিলো ১৯৯।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
ইসলামী ব্যাংক ইস্ট জোন ১ম ইনিংসে ২৪৫/১০ (৮৩.৫), ইমরুল ৩২, আশরাফুল ০, দিপু ৭২, শুক্কুর ১৪, ধ্রুব ০, নাদিফ ২৬, প্রীতম ৩০, নাইম ৪০*, এনামুল ১, তানভীর ২০, পায়েল ০; রবিউল ১৬-৭-২৯-২, রনি ২০.৫-৫-৯৩-৫, মুরাদ ২১-৮-৪৭-৩
ওয়ালটন সেন্ট্রাল জোন ১ম ইনিংসে ২২৭/১০ (৮৯.৩), মিজানুর ২, মিঠুন ২, সৌম্য ২, ইমন ১৩, তাইবুর ৭৬, শুভাগত ৩, জাকের ৯২, রনি ০, মৃত্যুঞ্জয় ৮, রবিউল ২৬, মুরাদ ৩*; এনামুল ১৫-১-৫৩-২, পায়েল ১৬-৫-৪৯-৩, নাইম ৩১-১১-৭০-২, তানভীর ২১.৩-৪-৪২-৩
ইসলামী ব্যাংক ইস্ট জোন ২য় ইনিংসে ১৮০/১০ (৪৬.৫), ইমরুল ৫, আশরাফুল ১৬, দিপু ০, শুক্কুর ৬, ধ্রুব ৫, নাদিফ ১০, প্রীতম ৫৪, নাইম ৬৮, তানভীর ০, এনামুল ৯*, পায়েল ০; রবিউল ১২-১-৩৬-১, রনি ৮-১-২৬-২, মৃত্যুঞ্জয় ৮-১-৩৯-২, সৌম্য ৮-৩-২৫-১, মুরাদ ৬.৫-০-৩৭-৪
ওয়ালটন সেন্ট্রাল জোন ২য় ইনিংসে ১৮৮/১০ (৫৯.১), মিজানুর ১২, মিঠুন ৬০, সৌম্য ৭৩, সালমান ১৮, তাইবুর ৪, শুভাগত ৪, জাকের ১, রনি ০, মৃত্যুঞ্জয় ১, রবিউল ১৪, মুরাদ ০*; তানভীর ২৩.১-৫-৫৩-৩, এনামুল ৯-১-৫৬-১, নাইম ২০-৮-৪৮-৬
ফলাফলঃ ইসলামী ব্যাংক ইস্ট জোন ১০ রানে জয়ী
ম্যাচসেরাঃ নাইম হাসান (ইসলামী ব্যাংক ইস্ট জোন)।