ফিরে দেখা ২০২১ঃ তারকাদের অবসরের বছর

2018 05 23 18 18 29
Vinkmag ad

২০২১ সাল যেন তারকাদের অবসরের বছর হিসেবে ক্রিকেটের ইতিহাসে লেখা থাকবে। ১ম ২ মাসে ৮ জন ক্রিকেটার অবসর নিয়েছেন। সময়ের পরিক্রমায় পরবর্তীতে ডেল স্টেইন ও এবি ডি ভিলিয়ার্সের মত মহা তারকারাও ক্রিকেটকে বিদায় বলেছেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যর্থ হওয়ার পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন ডোয়াইন ব্রাভো। এবার সংক্ষিপ্ত পরিসরে জেনে নেই এ বছর কারা কারা ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন।

এবি ডি ভিলিয়ার্সঃ খুব সম্ভবত এ বছরের সবচেয়ে বড় অবসরের ঘটনা। কখনোই গড়পড়তা পারফরম্যান্স করেননি ডি ভিলিয়ার্স। একজন প্রতিভাধর খেলোয়াড় ছিলেন তিনি। দুর্দান্ত হকি খেলোয়াড়ও ছিলেন তিনি। দর্শকরা ‘এবি, এবি’ বলে পুরো মাঠ জুড়ে তার নাম উচ্চারণ করতো। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে ২০১৭ সালে অবসর নিলেও পেশাদার ক্রিকেট থেকে এ বছরের নভেম্বরে বিদায় নিলেন ৩৭ বছর বয়সী দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক অধিনায়ক।

ডোয়াইন ব্রাভোঃ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দুইবারের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার ছিলেন ডোয়াইন ব্রাভো। চমৎকার স্লোয়ারের দুর্দান্ত ইয়র্কার দেওয়ার মুন্সিয়ানা ছিল তার মাঝে। একইসাথে দারুণ ব্যাটিং ও ফিল্ডিং করতেন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ছাড়াও ফ্র‍্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের পরিচিত মুখ তিনি। জাতীয় দলের হয়ে ৯১টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি, ৭৮ উইকেটের সাথে রান করেছেন ১২৫৫। ২০০৬ সালে অকল্যান্ডে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক হয়েছিল ৩৮ বছর বয়সী এ ক্রিকেটারের।

ডেল স্টেইনঃ দুরন্ত গতির সাথে দুর্দান্ত সুইংয়ে ব্যাটসম্যানদের রাতের ঘুম হারাম করে দেওয়ায় সিদ্ধহস্ত ছিলেন স্টেইন। মাঠে অসাধারণ একজন ব্যক্তিত্ব ছিলেন তিনি। ইংল্যান্ডের জেমস অ্যান্ডারসনের সাথে তার প্রতিযোগিতা সর্বজন বিদিত। ২০১৯ সালে শেষবার টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে। এরপর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলার অপেক্ষায় ছিলেন। তবে সুযোগ না পাওয়ায় এ বছরের ৩১ আগস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানান তিনি। ৯৩ টেস্ট ম্যাচে ৪৩৯ উইকেট নিয়েছেন তিনি, ২২.৯৫ তার গড়। টেস্টে সবচেয়ে বেশি উইকেট পাওয়া বোলারের ক্ষেত্রে তিনি ৮ম। এছাড়া ১২৫ ওয়ানডেতে ২৫.৯৫ গড়ে ১৯৬ উইকেট ও ৪৭টি টি-টোয়েন্টিতে ১৮.৩৫ গড়ে ৬৪ উইকেট নেন তিনি।

রায়ান টেন ডেসকাটঃ নেদারল্যান্ডের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার ডেসকাট। ২০১১ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। ফ্র‍্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে কোলকাতা নাইট রাইডার্সের জনপ্রিয় মুখ ছিলেন তিনি। ৪১ বছর বয়সী এ ক্রিকেটার আন্তর্জাতিকে ৩৩টি ওয়ানডে ম্যাচে ১৫৪১ রানের পাশাপাশি ২৪টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৫৩৩ রান করেছেন। ২০০৬ সালে তার ডেব্যু হয়েছিল।

আসগর আফগানঃ আফগানিস্তানের সাবেক অধিনায়ক আসগর আফগান এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নামিবিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানান। সে ম্যাচে দলের জয়ের পাশাপাশি ২৩ বলে ৩১ রান করেছিলেন তিনি। ৬ টেস্টে ৪৪০ রান, ১১৪ ওয়ানডেতে ২৪২৪ এবং ৭৫ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ১৩৮২ রানের মালিক তিনি।

উপুল থারাঙ্গাঃ শ্রীলঙ্কার প্রতিভাধর এ ওপেনার সম্প্রতি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন। বিভিন্ন সময়ে তার ক্রিকেট ক্যারিয়ারে বাধার সম্মুখীন হলেও ওপেনিংয়ে লঙ্কানদের আস্থার প্রতীক ছিলেন তিনি। ৩১ টেস্টে ১৭৫৪, ২৩৫ ওয়ানডেতে ৬৯৫১ এবং ২৬ টি-টোয়েন্টিতে ৪০৭ রান করেছেন তিনি।

ধাম্মিকা প্রসাদঃ ২০০৮ সালে অভিষেকের পর শ্রীলঙ্কার কার্যকরী বোলার ছিলেন প্রসাদ। ধারাবাহিক পারফরমার ছিলেন। যদিও কাঁধের ইনজুরি পুরো ক্যারিয়ারে ভুগিয়েছে তাকে। ২৫ টেস্টে ৭৫ উইকেট ও ২৪ ওয়ানডেতে ৩২ উইকেট নিয়েছেন তিনি।

উন্মুক্ত চাঁদঃ যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে ক্রিকেটে থিতু হতে ভারতের পেশাদার ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন উন্মুক্ত চাঁদ। ২০১২ সালের যুব বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন ভারতের অধিনায়ক ছিলেন, ফাইনালে সেঞ্চুরিও হাকিয়েছিলেন। ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটে জনপ্রিয় মুখ ছিলেন তিনি।

অশোক দিন্দাঃ নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে অংশ নেওয়ার জন্য এ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেন দিন্দা। ২০০৯ সালে আন্তর্জাতিকে ভারতের হয়ে অভিষেক হলেও স্থায়ী হতে পারেননি দলে। ২০১০ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে ৯টি ওয়ানডে ও ১৩টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে খেলেছিলেন। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ৪০০টির বেশি উইকেট রয়েছে তার।

নামান ওঝাঃ একসময় ভারতীয় দলে মাহেন্দ্র সিং ধোনির প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করা হতো নামান ওঝাকে। যদিও আন্তর্জাতিকে খুব একটা সুযোগ পাননি তিনি। ২০১০ সালে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হয়েছিল তার। একমাত্র টেস্ট খেলেছিলেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০১৫ সালে। ১৪৬টি প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট ম্যাচে ৪১.৬৭ গড় ও ২২টি শতকের সহায়তায় ৯৭৫৩ রান করেছেন দুই দশকের ক্যারিয়ারে।

ইউসুফ পাঠানঃ ভারতের প্রথম দিককার টি-টোয়েন্টি স্পেশালিস্ট হিসেবে পরিচিত ছিলেন ইউসুফ পাঠান। ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য ছিলেন তিনি। ২০০৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে ৫৭টি ওয়ানডে ও ২২টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি। আইপিএলে রাজস্থান রয়্যালস ও কোলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে শিরোপা জিতেছিলেন। ১৭৪টি ম্যাচ খেলেছিলেন আইপিএলে। ২০১০ আইপিএলে মুম্বাইয়ের বিপক্ষে ৩৭ বলে ১০০ রান করেছিলেন, যা এখনও ২য় দ্রুততম ও ভারতীয়দের মধ্যে দ্রুততম।

রঙ্গনাথ বিনয় কুমারঃ আন্তর্জাতিকে খুবই সংক্ষিপ্ত পরিসরে খেলেছেন ভারতের বোলার রঙ্গনাথ বিনয় কুমার। ১টি টেস্ট, ৩১ ওয়ানডে ও ৯টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে দীর্ঘ ২৫ বছর কর্নাটক ক্রিকেটকে সার্ভিস দিয়েছেন তিনি।

৯৭ ডেস্ক

Read Previous

লাহোর কালান্দার্সের অধিনায়ক হলেন শাহীন শাহ আফ্রিদি

Read Next

অস্ট্রেলিয়ার অ্যাশেজ স্কোয়াডে স্কট বোলান্ড

Total
0
Share