বৃষ্টি আর মেঘলা আবহাওয়া মিলে মিশে ঢাকা টেস্টে যতটুকু খেলা গড়িয়েছে পেসারদের জন্য ভালো সুবিধাই তৈরি হয়েছিলো। কিন্তু সেটা কাজে লাগাতে ব্যর্থ বাংলাদেশ পেসাররা। চতুর্থ দিন শেষে বাঁহাতি ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্তও দায়টা কিছুটা হলেও পেসারদের ঘাড়ে দিলেন।
ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি, বৃষ্টি থামলেও দেখা মেলেনা রোদের। এমন পরিস্থিতিতেই ঢাকা টেস্টে টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান। ভাবা হচ্ছিলো অন্তত দিনের প্রথম ঘন্টায় ভালো সুবিধা পাবে টাইগার পেসাররা।
কিন্তু প্রথম ঘন্টাতো বটেই সুবিধা করতে পারেনি পুরো দিনেই। প্রথম দিন পাকিস্তানের হারানো ২ উইকেটই স্পিনার তাইজুল ইসলামের। দ্বিতীয় দিন মাত্র ৬.২ ওভার খেলা মাঠে গড়ায়, যথারীতি ব্যর্থ এবাদত হোসেন ও খালেদ আহমেদ। তৃতীয় দিন কোনো বলই গড়ায়নি।
আজ চতুর্থ দিনে এসে খেলা গড়াতেই অবশ্য পাকিস্তান আরও ২ উইকেট হারায়। যার একটি এবাদতের আরেকটি খালেদের। কিন্তু বাদ বাকি সময় আবার নির্বিষ এবাদত-খালেদ। এমনকি ৩ স্পিনার তাইজুল, মেহেদী হাসান মিরাজ ও সাকিব আল হাসান নিতে পারেননি তেমন কোনো পরীক্ষা।
মোহাম্মদ রিজওয়ান ও ফাওয়াদ আলমের অপরাজিত ফিফটিতে পাকিস্তানের স্কোরবোর্ডে ৪ উইকেট ৩০০ (ইনিংস ঘোষণা)। জবাবে ২৬ ওভার ব্যাট করে ৭৬ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে দিন শেষ করে বাংলাদেশ।
পেসার শাহীন শাহ আফ্রিদি, হাসান আলি, ফাহিম আশরাফকে এদিন আক্রমণেই আনেননি পাকিস্তান দলপতি। ২৬ ওভারের ২৫ টি করেন সাজিদ খান ও নুমান আলি, একটি বাবর আজমের।
এলোমেলো শট, তাড়াহুড়ো ও আগ্রাসী ব্যাটিং করতে গিয়ে উইকেট সাজিদ খানকে ৬ উইকেট দেয় টাইগারা। একটি হয়েছে রান আউট। উইকেট না পেলেও বেশ ভুগিয়েছেন আরেক স্পিনার নুমান আলি।
বাংলাদেশের বোলিং ইনিংসে পিচ ব্যাটিং বান্ধব এবং ব্যাটিং ইনিংসে স্পিন বান্ধব হয়ে যাওয়া এক প্রকার রহস্যই। মূলত টাইগার ব্যাটারদের ব্যর্থতাতেই এমন কিছু হয়েছে।
নাজমুল হোসেন শান্ত বলছেন উইকেট ব্যাট করার জন্য কঠিনই ছিলো। তবে বাংলাদেশের বোলাররা, বিশেষ করে কন্ডিশনের ফায়দা পেয়েও পেসাররা ব্যর্থ হওয়াকে কাঠ গড়ায় দাঁড় করান শান্ত।
এই বাঁহাতি বলেন, ‘আমার মনে হয় না এটা ৩০০ রান করার মত উইকেট। আরও কম রান হলে ভালো হত। স্পিনার ও পেসাররা যদি রান আরও কম দিত তাহলে ভালো হত। পেসারদের যথেষ্ট সহায়তা ছিল। এগুলো নিয়ে চিন্তা করে আসলে লাভ নেই। পরের ইনিংসে যেন ভুলগুলো না হয় সেই পরিকল্পনা করতে হবে।’
বাংলাদেশের ব্যাটাররা ডিফেন্সের চেয়ে এদিন আক্রমণাত্মক শটই বেশি খেলেছেন। এমনকি সুইপ শট খেলাতে রীতিমতো পাল্লা দিয়েছেন। সুইপ করতে গিয়ে আউটও হন মুশফিকুর রহিম, মেহেদী হাসান মিরাজ।
শান্ত বলছেন প্রতিপক্ষকে নড়বড়ে করতেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের পরিকল্পনা করে বাংলাদেশ, ‘উইকেট আসলেই এত সহজ ছিল না। ডিফেন্সের ওপর আস্থা সবারই আছে। শুধু ডিফেন্স করে করে সারাদিন পার করা কঠিন। সাথে শট খেললে ওদের অ্যাটাকিং ফিল সেটআপ ছড়িয়ে যেত। আমার মনে হয় না কেউ অতিরিক্ত আগ্রাসী ছিল।’
‘টার্নিং উইকেটে এলবিডব্লিউ হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। এমন উইকেটে সবাই সুইপের ওপরেই বেশি আস্থা রাখে। এজন্যই সবাই সুইপ খেলার পরিকল্পনা করেছে।’